অর্থনীতির মানুষটির প্রিয় দর্শন ও সাহিত্য
পরনে কালো টি শার্ট আর কালো শর্টস। দক্ষিণ দিল্লির এক বইয়ের দোকানে তিনি সস্ত্রীক বই খুঁজছেন। বইপোকা তিনি, কিন্তু মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হওয়ার পর থেকে এই অর্থনীতিবিদের অন্য স্বাদের বই পড়ার সময় হচ্ছিল না। এখন বাজেটের পর এবং উত্তরপ্রদেশের ভোটে নোট বদলের আপাত নেতি প্রভাব দেখতে না পাওয়ায় নিশ্চিন্ত হয়ে কিনেই ফেললেন য়ুভাল নোয়া হারারি-র ‘স্যাপিয়েন্স: আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব হিউম্যানকাইন্ড’। অনেক দিন থেকেই অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যের এই বইটি পড়ার ইচ্ছে। অতএব কিনেই ফেললেন। আরও একটি বই পড়ার ইচ্ছে, কারণ অনুবাদক-লেখক তাঁর বন্ধু। এলেনা ফেরান্তে ফ্রান্তুমাগলিয়া-র ‘আ রাইটার্স জার্নি’। অর্থনীতির মানুষ হলেও তিনি পড়তে বেশি ভালবাসেন সাহিত্য আর দর্শন। আর তাই প্রতি রবিবার মোতিবাগের বাংলো থেকে নিয়মিত আসেন গ্রেটার কৈলাসের এই বইয়ের দোকানটিতে।
জামাই রাজা
এস এম কৃষ্ণ বিজেপিতে যোগ দিলেও ইয়েদুরাপ্পা-ই হবেন রাজ্য বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী, তা হলে কৃষ্ণ কেন বিজেপিতে এলেন? দিল্লির উড়ো খবর, এটা তাঁকে করতে হল জামাই রাজার জন্য। তাঁর জামাই দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা একটি ক্যাফে চেন-এর সর্বভারতীয় এজেন্ট। ইউপিএ জমানা থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে চলছে নানা মামলা। অনন্ত কুমার কৃষ্ণকে প্রস্তাব দেন, বিজেপিতে চলে এলে জামাইয়ের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। কৃষ্ণ-র স্ত্রী তখন চাপ দিতে শুরু করেন। প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজি হন কৃষ্ণ।
গোয়েল আর ‘বাপজি’
সব মন্ত্রীর ঘরেই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি পাশাপাশি। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী বিজয় গোয়েলের ঘরে শুধু সামান্য ব্যতিক্রম। প্রণববাবুর ছবিটি দূরে রাখা। মোদীর পাশে রয়েছেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় গোয়েল ছিলেন বাজপেয়ীর কন্যা নমিতার সহপাঠী। গোয়েল তখন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বাজপেয়ী গোয়েলকে তাঁর সরকারে শ্রম, সংসদীয় বিষয়ক, পরিসংখ্যান ও যুব-ক্রীড়া মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করেন। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে গোয়েল এখনও বাজপেয়ীকে প্রকাশ্যে ‘বাপজি’ বলে সম্বোধন করেন। বাজপেয়ীর জন্মদিনে ভজন-সন্ধ্যারও আয়োজন করেন। বাজপেয়ী সরকারের অনেক মন্ত্রী মোদী জমানায় পিছনের সারিতে চলে গেলেও, গোয়েল কিন্তু ফের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রকে ফিরে এসেছেন।
অম্বেডকরের নীল স্যুট
সাউথ অ্যাভিনিউতে ১৮৪ নম্বর ফ্ল্যাটে মুকুল রায়ের ঘরে নতুন অতিথি— বাবাসাহেব ভীমরাও অম্বেডকর। দলিত রাজনীতির হোতা মায়াবতী উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে অম্বেডকরের মূর্তি তৈরি করিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদীও ডিজিটাল লেনদেনের সরকারি অ্যাপ-এর নাম রেখেছেন ‘ভীম’। জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার আকাঙ্খার সঙ্গে অম্বেডকরের নীল স্যুট পরা ছবির কোনও সম্পর্ক আছে কি না, দলের অন্দরমহলে তা নিয়ে এখন জোর চর্চা।
হেমা মালিনীর স্বস্তি
মথুরা থেকে শ্রীকান্ত শর্মা বিধানসভায় জিতে আসায় নিষ্কণ্টক হলেন হেমা মালিনী। ২০১৪ সালের লোকসভায় মথুরা আসন থেকে লড়ার কথা ছিল শ্রীকান্তের। কিন্তু অমিত শাহের ইচ্ছেয় ওই আসনটিতে লড়েন হেমা। জিতেও যান। মাঝে তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ উঠলেও, যে ভাবে শ্রীকান্ত জিতে এসেছেন তাতে এলাকায় দলের জনভিত্তি যে অটুট আছে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন হেমা। তা ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রীকান্ত চলে গিয়েছে বিধানসভায়। সব মিলিয়ে হেমা এখন টেনশন ফ্রি।
মায়ার পরীক্ষা
আগামী বছর এপ্রিলে রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর। হাতে এক বছর সময় থাকলেও গভীর চিন্তায় দলিত নেত্রী। ৪০৩ সদস্যের উত্তরপ্রদেশে এক জন প্রার্থীকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হতে গেলে প্রয়োজন ৩৮টি ভোট। অথচ, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে দল পেয়েছে মাত্র ১৯টি আসন। ফলে কংগ্রেসের ৭ বিধায়ক ও সপা’র ১২ বিধায়কের সমর্থন ছাড়া রাজ্যসভায় আসা মুশকিল মায়াবতীর। লোকসভা ও রাজ্যসভায় কার্যত প্রতিনিধিত্ব থাকবে না দলের। পরিস্থিতি দেখে এখন থেকেই গুটি সাজানো শুরু করেছেন মায়াবতী। দেখে অনেকেই বলছেন, ২০১৯ সালে বিজেপি-বিরোধী শক্তির একত্রিত জোটের প্রথম পরীক্ষা হতে চলেছে এটাই।
জয়ন্ত ঘোষাল, অগ্নি রায়, অনমিত্র সেনগুপ্ত, দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাংশু চৌধুরী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy