Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দিল্লি ডায়েরি

কেজরীবাল রাজ্যসভায় দুই ব্যবসায়ী গুপ্তাজিকে সদস্য করেছেন। অরুণ জেটলি এঁদের নাম দিয়েছেন ‘টু-জি’।

ক্ষমাপ্রার্থী: অরবিন্দ কেজরীবাল

ক্ষমাপ্রার্থী: অরবিন্দ কেজরীবাল

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০৬:০০
Share: Save:

ক্ষমা চাওয়ার মধ্যে কি লুকনো রাজনীতি

অরবিন্দ কেজরীবাল ক্ষমা চেয়েছেন কপিল সিব্বলের কাছে। এ বার তিনি ক্ষমা চাইছেন অরুণ জেটলির কাছে। কেজরীবাল শিবির বলছে, ক্ষমা চেয়ে ফালতু মামলা-মোকদ্দমাগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া ভাল, তার পর না-হয় আবার রাজনৈতিক যুদ্ধ শুরু হবে নতুন করে। কেজরীবাল রাজ্যসভায় দুই ব্যবসায়ী গুপ্তাজিকে সদস্য করেছেন। অরুণ জেটলি এঁদের নাম দিয়েছেন ‘টু-জি’। এঁদের এক জন আবার অরুণের ঘনিষ্ঠ আইনজীবীও বটে। তিনি প্রকাশ্যে বলছেন যে তিনি ঝগড়া মেটাতে চান। অরুণও নরম হয়েছেন। কিন্তু বিজয় গোয়েল-এর মতো দিল্লির বিজেপি নেতারা অরুণের উদারতা দেখে ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, কেজরীবালের ফাঁদে বিজেপি পা দিচ্ছে। পরে এই কেজরীবালই যে আবার আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবেন না তা কে জানে! তখন বিজেপি কী বলবে?

আস্থা-দিদি

এ বার সংসদের অধিবেশনে কলকাতার দুই বিতর্কিত রাজ্যসভা সদস্যকে তৃণমূল শিবিরে বেশ সক্রিয় দেখা গেল। এক জন সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্য জন কুণাল ঘোষ। এর মধ্যে আবার তৃণমূল সাংসদরা অনেকেই নানা উপলক্ষে নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। কখনও দোলা সেনের পার্টি, কখনও সুখেন্দুশেখর রায়ের রাজনৈতিক জীবনের পঞ্চাশ বছর পূর্তি। সর্বত্রই হাজির ঋতব্রত। কুণালও ছিলেন। জল্পনা ও কল্পনা তুঙ্গে— দু’জনেরই কি এ বার দিদির প্রতি আস্থাপর্ব শুরু?

বইমেলা

দিল্লির বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন প্রতি বছর প্রাচীন কালীবাড়িতে বইমেলার আয়োজন করে। বাংলা বই নিয়ে কলকাতার সমস্ত প্রকাশকরা আসেন। হাত ধরাধরি করে চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। সংগঠনের সভাপতি তপন সেনগুপ্ত বইমেলার পাশাপাশি দিল্লির বাঙালিদের নিয়ে বাংলা অ্যাকাডেমি করতেও মেতে উঠেছেন। এই আয়োজনে এ বার শামিল হলেন বাংলাদেশের ভারতীয় হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাইপো বইমেলায় এসে শুধু বইই কিনলেন না, জানালেন তাঁর ‘চাচা’র নানা ‘কাহিনি’ও।

জোর কদমে

২০১৯-এর ১৫ অগস্ট লাল কেল্লায় কে তিরঙ্গা ঝান্ডা ওড়াবেন, তা নিয়ে রাজনীতির লড়াই ক্রমশ তুঙ্গে উঠছে। কেল্লার পাঁচিলের ভিতরে তখন অন্য লড়াই। শাহজাহানের দিওয়ান-ই-খাস-এর হাল শোধরানো চলছে। আগরা থেকে রাজধানী দিল্লিতে সরিয়ে আনার পর সাদা মার্বেলের তৈরি এই দিওয়ান-ই-খাস-এই মুঘল সম্রাট সভাসদদের সঙ্গে মন্ত্রণায় বসতেন। সেই সাদা মার্বেল সাফ করতে লেগেছে মুলতানি মাটির প্রলেপ। ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ার রাস্তা বন্ধ হচ্ছে। খাস মহল, নহবতখানা, মুমতাজ মহল, আসাদ বুর্জ, মার্বেলের তৈরি দুই চাঁদোয়া শাওন ও ভাদোঁ, আওরঙ্গজেবের তৈরি মোতি মসজিদও সারিয়ে তোলার কাজ চলছে জোর কদমে। ব্রিটিশ জমানায় কেল্লার ভিতরে সেনা ব্যারাক তৈরি হয়। ২০০৩ পর্যন্ত তা ভারতীয় সেনার দখলে ছিল। মেরামতির পরে এ বার তা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

ভ-এ ভীত

অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটি প্রথমে ছিল জগন্মোহন রেড্ডিকে দিয়ে বিজেপিরই সার্কাস। পরে কিন্তু সেই বিজেপিই এত সংখ্যা থাকা সত্ত্বেও ভিতু-ভিতু ভাব দেখাচ্ছে। কারণটা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। তবে কি ভেতরে ভেতরে বিক্ষুব্ধদের নিয়ে ভয়! অমিত শাহের দল ইতিমধ্যেই কমপক্ষে ৪০ জন সাংসদকে বলে দিয়েছে, এ বার তাঁদের টিকিট দেওয়া হবে না। এই ‘হ্যাভ নট’রা যদি বিরুদ্ধে ভোট দেন! বিজেপি আস্থা প্রস্তাব জিতলেও, দশটা ভোটও যদি বিরুদ্ধে পড়ে তা হলেও কেলেঙ্কারি। আহমেদ পটেল নাকি বিক্ষুব্ধ বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে কথা বলছেন বেশি। তবে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও শেষ হাসি যে মোদীর দলই হাসবে, তা নিয়ে কংগ্রেসেও দ্বিমত নেই।

স্বমহিমায়

দায়িত্বে: সীমাঞ্চল দাস

দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দের গুঞ্জনই সত্যি হল। অরুণ জেটলির দীর্ঘ দিনের আস্থাভাজন, রাজস্ব ক্যাডারের আধিকারিক সীমাঞ্চল দাসকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হল। তাঁর জন্য নতুন পদ তৈরি হয়েছে, প্রিন্সিপাল স্পেশ্যাল ডিরেক্টর। সিবিআই আর ইডি-কে বিরোধীদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে প্রায়ই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। অর্থাৎ যে পদে দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি, সেটি রীতিমত সমস্যাপ্রবণ। বাজপেয়ী জমানায় জেটলি যখন মন্ত্রী হন, তখন থেকেই তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সীমাঞ্চল। রাজ্যসভায় বিরোধী দলের নেতা, পরে অর্থমন্ত্রী জেটলির ব্যক্তিগত সচিব হিসাবেও কাজ করেছেন। গত বছর বদলি-বিতর্কে নাম জড়ানোর পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশে তাঁকে আয়কর দফতরে পাঠানো হয়। কিন্তু পুরনো সম্পর্ক ছিলই। গুঞ্জন, জেটলির জোরেই স্বমহিমায় ফিরলেন সীমাঞ্চল।

জয়ন্ত ঘোষাল, প্রেমাংশু চৌধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Diaries
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE