সন্তান হারানোর হাহাকার। ছবি: সংগৃহীত।
এই দেশের শিশুদের কাছে স্বাধীনতার ৭০ বছরের অর্থ এটাই? গোরক্ষপুরের এক সরকারি হাসপাতালে ৩০ জনের বেশি শিশু মৃত্যুর পর এই অনিবার্য প্রশ্নটা তুলেছেন কৈলাশ সত্যার্থী। থেমে থাকেননি এখানেই। তাঁর মতে, গোরক্ষপুরে যা হয়েছে, তা গণহত্যা ছাড়া কিছু নয়।
বস্তুত, গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে গোরক্ষপুর হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর ঘটনা। স্বাধীনতার পর এতগুলো বছর, এতগুলো জমানা, এতগুলো প্রকল্প পেরিয়ে এই দৃশ্য দেখতে হবে এখনও? সরকারি হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হবে একের পর এক শিশুর এবং স্বজন হারানোর হাহাকার ছড়িয়ে পড়বে দেশের প্রতিটি প্রান্তে? এবং অভিযোগ শুনতে হবে, বেশির ভাগ মৃত্যুর কারণ আসলে অক্সিজেনের অভাব? বিনা অক্সিজেনে মৃত্যু হয়ে গেল এত শিশুর? এবং আমরা বলব, আমাদের যাত্রা অচ্ছে দিনের পথে?
যেমনটা হয়ে এসেছে এতগুলো বছর ধরে, তাই হচ্ছে আরও এক বার। মুখ্যমন্ত্রী তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছেন, কড়া ব্যবস্থার আশ্বাস পাওয়া যাচ্ছে, মন্ত্রী-সান্ত্রীরা ছুটে আসছেন, ছুটে আসছেন বিরোধী নেতারাও, মিডিয়া জুড়ে গোরক্ষপুর এখন। এর পরেও সেটাই হবে, যেটা হয়ে এসেছে এতগুলো বছর ধরে। মিডিয়ার দৃষ্টি সরে যাবে, মন্ত্রী-নেতারা সরে যাবেন, তদন্ত কমিটি তারিখের পর তারিখ পাবে, আবার অক্সিজেন কেলেঙ্কারি বা অন্য হাজারও দুর্নীতি শিকড়বাকড় ছড়াবে হাসপাতাল জুড়ে।
বদলাবে না শুধু নিকষ কালো অন্ধকারের রং, যে রংটা চেপে বসে থাকবে গোরক্ষপুর অথবা এই ভারতের অন্য আর এক দুর্ভাগা এলাকার দাওয়ায় বসে থাকা কোনও এক মায়ের মনে। যে মা তাঁর কোলের শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ঈশ্বরের কাছে শুধু প্রার্থনা করেন, করে এসেছেন এতগুলো বছর ধরে, দেখো ঈশ্বর, এ যেন ফিরে আসে ঘরে, আগেরটার মতো না হয়।
সে-ও হবে হয়ত কোনও এক স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে। সংসদ ভবনকে মুড়ে ফেলা হবে আলোয়। আর দেশব্যাপী অচ্ছে দিনের স্বপ্ন বিলি হবে অকাতরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy