Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

আসলে আইএস একটি ইসলামি খিলাফতের স্বপ্ন রচনা করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান খলিফার পরাজয়ের পর থেকে মুসলিম বিশ্বে ইসলামের হারানো সুদিন ফিরে পাওয়ার যে আকুতি ফল্গুধারার মতো অন্তঃসলিলা ছিল, তাকে উসকে দিয়েছে।

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

সংঘাত মিটবে না

আসলে আইএস একটি ইসলামি খিলাফতের স্বপ্ন রচনা করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান খলিফার পরাজয়ের পর থেকে মুসলিম বিশ্বে ইসলামের হারানো সুদিন ফিরে পাওয়ার যে আকুতি ফল্গুধারার মতো অন্তঃসলিলা ছিল, তাকে উসকে দিয়েছে। দেশে-দেশে মুসলিম যুবক-যুবতীরা যে ভাবে সেই স্বপ্নের টানে ঘর-সংসার ফেলে ইরাক ও সিরিয়ায় পাড়ি দিয়েছে, যে ভাবে ইন্দোনেশিয়া এমনকী অস্ট্রেলিয়ার মতো সুদূর প্রান্ত থেকে তারা শহিদ হতে ঝাঁকে ঝাঁকে জেহাদে অংশ নিতে দৌড়চ্ছে, তা সেই স্বপ্নের অমোঘ আকর্ষণকেই প্রতিপন্ন করে, যা দশম-একাদশ শতাব্দীর ধর্মযুদ্ধে ইসলামকে প্রাণিত, তাড়িত করেছিল (‘কলকাতা থেকে কেন ওঁরা যান...’, ১৬-৪)। অতিরিক্ত তাড়না হিসেবে সক্রিয় থেকেছে বিভিন্ন দেশে ইসলাম-আতঙ্ক, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত, দারিদ্রপীড়িত, ধর্মীয় বৈষম্য জর্জরিত, সেকুলার রাষ্ট্রনীতিতে বিদ্ধ, আত্মপরিচয় উন্মুখ এক জনগোষ্ঠীর মরিয়া প্রতিকারকামিতা।

কেন রাষ্ট্রীয় সমানাধিকারের গাল ভরা ঢক্কানিনাদ এবং সাম্য-স্বাধীনতা-সৌভ্রাত্রের গণতান্ত্রিক আদর্শের চেয়ে ইসলামের সাম্যাদর্শ এই তরুণ-তরুণীদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় মনে হল, সেই আত্মসমীক্ষা অবিলম্বে শুরু হওয়া দরকার। আইএসের বিরুদ্ধে যে সম্মিলিত যুদ্ধ আমেরিকা-ইউরোপ শুরু করেছে, তাতে সামরিক সাফল্য দেরিতে হলেও পাওয়া সম্ভব। যা সম্ভব নয়, তা হল মুসলিম মানস ও চৈতন্য থেকে খিলাফতের স্বপ্ন ঘুচিয়ে দেওয়া, সামরিক অভিযানে ‘সভ্যতার সংঘাত’ মিটবে না।

শোভনলাল চক্রবর্তী কলকাতা-৯৪

ধর্মীয় মিলন

১৯৪১ সালের ৬ এপ্রিল বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির রজত জয়ন্তী উৎসবে কবি নজরুল ইসলাম ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি ‘হিন্দু-মুসলমানকে এক জায়গায় ধরে এনে হ্যান্ডশেক করাবার’ কথা বলেন। তার কিছু কাল আগে (১৩৩৩ বঙ্গাব্দ, ইংরেজি ১৯২৬) কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একটি প্রবন্ধে (বর্তমান হিন্দু-মুসলমান সমস্যা) লেখেন, ‘হিন্দু-মুসলমান মিলন একটা গালভরা শব্দ।’ তিনি এ বিষয়ে সন্দিহান ছিলেন, নয়তো বলবেন কেন, মিলন হলে তিনি খুশি হবেন, তবে তা যদি নাই ঘটে এবং ঘটার কোনও লক্ষণ না দেখা দেয়, তবে এ নিয়ে আর্তনাদ করে কোনও লাভ নেই। মিলনের ভার নিতে হবে মুসলমানদের,এমন কথাও বলেছিলেন শরৎবাবু। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য কালিদাস নাগকে লিখিত পত্রে (১৩২৯ বঙ্গাব্দ, ইংরেজি ১৯২২) জানিয়েছিলেন, ‘হিন্দুমুসলমানের মিলন যুগপরিবর্তনের অপেক্ষায় আছে।’ হিন্দু মুসলমান উভয়কেই গণ্ডির বাইরে যাত্রা করতে হবে— এ কথা বলার পরেও হিন্দুদের আচার মানা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। হিন্দুরা পদে পদে নিজের বেড়া তুলে রেখেছে আচারে, কিন্তু এ ক্ষেত্রে মুসলমানের বাধা প্রবল নয়। অথচ, ‘আচার হচ্ছে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্বন্ধের সেতু...।’ অর্থাৎ, দুই সম্প্রদায়ের মিলনের ভাবনায় হিন্দুর দায়িত্ব বেশি, এমন কথারই ইঙ্গিত যেন কবির কথায়।

আজ ১৪২৪ বঙ্গাব্দের গোড়ায় তিন মনীষীর কথার কি কোনও প্রাসঙ্গিকতা আছে? আছে। হিন্দু মুসলমানকে হ্যান্ডশেক করাবার কথা আজও ভাবেন বামপন্থী এবং ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদীরা। দুই সম্প্রদায়ের মিলন নয়, মুসলমানদের ওপর আধিপত্য বজায় রাখতে চান হিন্দুত্ববাদীরা। তারা তো মুসলমানদের দোষী এবং দায়ী প্রতিপন্ন করতে সদা তৎপর। শরৎচন্দ্রের লেখাতেও সে দিন মুসলমানের কঠোর সমালোচনা ছিল। তবে রবীন্দ্রনাথ ভরসা জুগিয়েছিলেন। লিখেছিলেন, ‘আমরাও মানসিক অবরোধ কেটে বেরিয়ে আসব।’ গেরুয়াবাদীদের হুঙ্কার সত্ত্বেও এ বিশ্বাসে বুক বাঁধছে মানুষ। মানসিক বাধা কাটাবার জন্য ইতিহাসবিদদের যুক্তিকে মানা দরকার। রোমিলা থাপারের কয়েকটি কথা স্মর্তব্য: এক, ঔপনিবেশিক নীতিরই ফসল সাম্প্রদায়িকতা। দুই, সাম্প্রদায়িকতা চূড়ান্ত ভাবে মানুষের মনের এমন একটা মনোভাব, যা অনুমানের ভিত্তিতে তৈরি। তিন, জাতীয়তাবাদকে আমাদের নতুন করে নির্মাণ করতে হবে, সকলকে অন্তর্ভুক্ত করার একটা ধর্মনিরপেক্ষ উপায়ে, যাতে প্রত্যেক ভারতীয় সমান ভাবে ও সম-অধিকার নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

শিবাশিস দত্ত কলকাতা-৮৪

ব্যাঙ্ক নেই

দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর উপকণ্ঠে অবস্থিত আমরাই গ্রাম। ‘এ জোন’ সংলগ্ন এই গ্রামের চার পাশে রয়েছে আরও কয়েকটি গ্রাম যেমন কুড়ুরিয়া, কাণ্ডেশ্বর, ঝান্ডাবাদ, আরতি ইত্যাদি। উপরন্তু এই গ্রামের চার পাশে বর্তমানে স্থাপিত হয়েছে বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক বসতি যেমন ইন্দ্রপ্রস্থ, উত্তরায়ণ, সারদা নগর, মিলনপল্লি ইত্যাদি। সব মিলিয়ে এখানেও বসবাস বেশ কয়েক হাজার মানুষের। বর্তমানে এই সমস্ত অঞ্চলে বরিষ্ঠ নাগরিকের সংখ্যাও বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে যাঁরা একান্ত ভাবেই নির্ভর করে থাকেন তাঁদের নিয়মিত ভাবে ব্যাঙ্ক থেকে তোলা মাসিক স্বল্প সঞ্চয়ের সুদ বা পেনশনের উপর।

কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আজও এই বিশাল অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত নেই কোনও ব্যাঙ্কের শাখা এমনকী কোন এটিএম কাউন্টার। যার ফলে আপামর জনসাধারণ এই উন্নত প্রযুক্তির যুগেও যারপরনাই অসুবিধায় পড়ছেন তাঁদের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে। এই প্রখর গ্রীষ্মের দাবদাহ উপেক্ষা করে বৃদ্ধ, বৃদ্ধা-সহ সকলকেই যেতে হয় দূরদূরান্তের কোনও ব্যাঙ্কের শাখায়।

এমনকী ছয় লেনের রাস্তা পেরিয়ে চরম বিপদের ঝুঁকি নিয়ে পেটের তাগিদে তাঁদের মাসিক সুদটুকু তুলে আনতে যেতে হয় সাইকেল কিংবা স্কুটার, মোটরসাইকেলে। বছরখানেক আগে স্টেট ব্যাঙ্কের মেন গেট শাখার আধিকারিকরা এসে বেশ কিছু মানুষের সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করেন এখানে ক্যাম্প করে। ব্যাপক সাড়া পেয়ে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান এই গ্রামে তাঁদের ব্যাঙ্কের একটি এটিএম কাউন্টার খোলার। কিন্তু তা এখনও পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। ফলে অবস্থা সেই তিমিরেই।

এমতাবস্থায় যদি কোনও ব্যাঙ্ক এই গ্রামে তাদের শাখা এবং একটি এটিএম কাউন্টার খোলার ব্যবস্থা করেন, তা হলে জনসাধারণ বিশেষ ভাবে উপকৃত হবেন।

কাঞ্চনকুমার চট্টোপাধ্যায় আমরাই, দুর্গাপুর–৩

গাছ ফিরুক

বড় হয়েছি বাগুইআটিতেই। আস্তে আস্তে চোখের সামনে এই বাগুইআটির অনেক উন্নয়ন দেখেছি। বাড়ি থেকে ফ্ল্যাট হয়েছে, রাস্তাঘাট চওড়া হয়েছে, অনেক বেশি মসৃণ হয়েছে। ভিআইপি রোডের সেই চূড়ান্ত জ্যামটাও এখন আর নেই উড়ালপুলের সৌজন্যে। কিন্তু সেই সঙ্গে আমার ছোটবেলার চেনা সেই গাছগুলো হারিয়ে গেছে। আগে বাগুইআটি ভিআইপি রোডের ধারে গাছগুলো সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকত, তাতে এই তীব্র গরমেও কিছুটা আরাম মিলত। কিন্তু এখন বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ালেই খটখটে রোদ মাথায় দাঁড়াতে হয়। তাই সরকারের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, আবার যদি ভিআইপি রোডের ধারে বৃক্ষরোপণ করা হয়, তা হলে গরমের হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যাবে।

দিব্যরূপ চৌধুরী কলকাতা-৫৯

ভ্রম সংশোধন

‘যুবকের মৃত্যুর ২৬ দিন পরেও গ্রেফতার হয়নি কেউ’ (কলকাতা ২৩-৪) খবরের শিরোনাম ভুলবশত ‘গুলিতে হত সেনা’ প্রকাশিত হয়েছে। ‘চাঙড় খসছে হেরিটেজ ভবনের’ (কলকাতা ১৯-৪) শীর্ষক খবরে রামমোহন রায়ের পদবি ভুলবশত মিত্র প্রকাশিত হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলোর জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE