Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

১৮ বছর পর্যন্ত এ দেশের প্রতিটি শিশু প্রয়োজনীয় বইপত্র ছাড়া বিনামূল্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য পেলেও বিদ্যালয়ে শিশুরা বার্গার, পিৎজা ইত্যাদি মুখরোচক খাবার পায় না।

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

ভাল নেই ফিনল্যান্ড

ফিনল্যান্ডের বেশির ভাগ লোকসংগীত দুঃখ দিয়ে গড়া কেন— এ কথা শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলেন, ‘আমরা, ফিনল্যান্ডবাসীরা সুখে নেই।’ তাঁরা বছরের ছ’মাস প্রায়-অন্ধকার প্রতিকূল পরিবেশে থাকেন। এর থেকেই মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা। শতকরা প্রায় দশ ভাগ লোক বেকার। কম্পিউটারে সর্বোচ্চ স্তরে ভারতীয় মেধার কাছে এ দেশের ছেলেমেয়েরা পেরে উঠছে না। নোকিয়া কোম্পানির অবস্থা একদম ভাল নয়। গড় তিন হাজার ক্রোন রোজগারে ৩০% ট্যাক্স সরকারকে দিয়ে দিতে হয়। খনিজ বলতে গ্রানাইট। তারও চাহিদা কম। ১৮ বছর পর্যন্ত এ দেশের প্রতিটি শিশু প্রয়োজনীয় বইপত্র ছাড়া বিনামূল্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য পেলেও বিদ্যালয়ে শিশুরা বার্গার, পিৎজা ইত্যাদি মুখরোচক খাবার পায় না। রুশ বিপ্লবের বছরে ফিনল্যান্ড স্বাধীন হয়ে যখন শতবর্ষ পূর্তির সূচনায় সিনেট হল থেকে প্রধানমন্ত্রী ও বিশপ পাশাপাশি হেঁটে চার্চে যান, তখন ওই চত্বরে একা দাঁড়িয়ে লোকশিল্পী (ছবিতে) দুঃখের গান গান।

রমজান আলি হেলসিংকি, ফিনল্যান্ড

পরিহাস

সংবাদে পড়লাম, সম্প্রতি প্রস্তাবিত জিএসটি-র কোপ পড়েছে প্রতিবন্ধীদের সাহায্যকারী যন্ত্রপাতিতে। এক জন প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে এই প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করছি। প্রতিবন্ধীরা এমনিতেই ‘ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড’ যদিও ‘ডিফারেন্টলি এব‌্লড’। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির দাম বাড়লে আরও বেশি করে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। তখন ‘ডিফারেন্টলি এব‌্লড’ শব্দবন্ধ বড় অসহায় পরিহাসের মতো শোনাবে।

অথচ, প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যবহৃত এই সব পণ্য আগে করমুক্ত ছিল। এখন কর ধার্য হয়েছে (শতাংশ হারে)— ব্রেল পেপার-১২, ব্রেল টাইপরাইটার-১৮, প্রতিবন্ধীদের জন্য বাহন-৫, দৈহিক প্রতিবন্ধীদের জন্য গাড়ি-১৮, হুইলচেয়ার, ট্রাই-সাইকেল, নকল অঙ্গ, হাঁটার জন্য আঙ্গিক-৫, শ্রবণ যন্ত্র-১২, ব্রেল ঘড়ি-১২। এর পাশাপাশি তুলনা করুন— পূজার জন্য আগরবাতি-৫, পইতে, রুদ্রাক্ষ, তুলসী ইত্যাদি-০ (শূন্য)। চোখের সামনে আমাদের দুঃখ, কষ্ট না দেখে সর্বশক্তিমান ভগবানকে সাহায্য করা হবে!
এ কেমন বিচার?

আমরা, প্রতিবন্ধীরা তো হাড়ে হাড়ে জানি এই পণ্য আমাদের কিনতেই হবে। নির্মম সত্য যে, উৎপাদকও জানেন তাঁদের পণ্য বিক্রি হবে। কিন্তু এই দুইয়ের মাঝে গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রনায়করা তো বিলক্ষণ জানেন কোথায়, কেন, ও কী ভাবে ভারসাম্য রাখা দরকার! ‘দ্য ন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম ফর দ্য রাইট‌্স অব দ্য ডিজএব‌্লড’ (এনপিআরডি) ও অন্যান্য সংগঠনগুলি রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদন করেছে। সরকারের কাছে বিনীত নিবেদন, প্রতিবন্ধীদের জন্য পণ্যে জিএসটি শূন্য করা হোক।

শুভ্রাংশুকুমার রায় ফটকগোড়া, চন্দননগর, হুগলি

গ্রামের কী হবে?

আমি বাঁকুড়া জেলার সারেঙ্গা ব্লকের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করি। চাকরিসূত্রে বাইরে থাকতে হয় সপ্তাহে পাঁচ দিন। এই গ্রামে বড় হওয়ার সুবাদে জানি চিকিৎসা বিষয়ক সমস্যার কথা। এখান থেকে বাঁকুড়া জেলা হাসপাতাল ৭০ কিমি, সারেঙ্গা ব্লকের স্বাস্থ্য কেন্দ্র ১২ কিমি দূরে অবস্থিত। হঠাৎ একটু পেটখারাপ, জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, বদহজম, কেটে-ছড়ে যাওয়া ইত্যাদি নিয়ে এত দূরে চিকিৎসা করানো এক প্রকার অসম্ভব। তাই ভরসা কিছু আরএমপি, হোমিয়োপ্যাথি ও হাতুড়ে চিকিৎসক। গ্রামে হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার বলে অনেকেই এই চিকিৎসা চান না। তাই এই ডাক্তারদের অ্যালোপ্যাথি কিছু ওষুধের ব্যবহার ও প্রয়োগ জানতে হয় ও চিকিৎসা করতেই হয়। এই ডাক্তারেরা এই সমস্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসার মতো জরুরি পরিষেবা দিয়ে আসছেন বছরের পর বছর। যেখানে না মেলে স্পেশালিস্ট ডাক্তার, না আছে চড়া ফিজ দিয়ে শহুরে ডাক্তারদের কাছে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য।

বর্তমানে জাল ডাক্তার ও নকল ডাক্তারদের ধরপাকড় ও সংবাদমাধ্যমের বাহাদুরি দেখানোর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসলে গ্রামীণ চিকিৎসা ব্যবস্থাই‍ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক জাল কারবারি আছেন ঠিকই, তবে অনেক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তারকেও হেনস্তা করা হচ্ছে। পাশের জেলায় আমার চেনা এক জন হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক, যিনি দীর্ঘ দিন হোমিয়োপ্যাথির সঙ্গে সঙ্গে অ্যালোপ্যাথি ওষুধের ব্যবহারও করেন এবং এ ব্যাপারে তিনি তাবড় এমবিবিএস ডাক্তারদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন তাঁর অভিজ্ঞতা ও পড়াশোনা দিয়ে, তাঁকেও হেনস্তা করা হয়েছে। এর ফলে অনেক চিকিৎসক চিকিৎসা করতেই ভয় পাচ্ছেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। জাল চিকিৎসক ধরা পড়ুক। কিন্তু যাঁদের হাতের স্পর্শে গ্রামীণ চিকিৎসা ব্যবস্থাই‍ দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাঁদের জন্য সরকারি স্পষ্ট নীতি আনা হোক। দরকার হলে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে নয়া রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হোক।

পীযূষ প্রতিহার সারেঙ্গা, বাঁকুড়া

পটের গান

পটশিল্প বাংলার একান্ত নিজস্ব শিল্পরীতি। ‘পটুয়া-শিল্পীর বৃন্দাবন বাংলাদেশে, শিবের কৈলাস বাংলাদেশে; তাহার কৃষ্ণ, রাধা, গোপ-গোপীগণ সম্পূর্ণ বাঙ্গালী; রাম, লক্ষণ ও সীতা বাঙ্গালী, শিব ও পার্বতীও পুরা বাঙ্গালী’ (পটুয়া সংগীত, গুরুসদয় দত্ত)। কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলার পটশিল্প ও শিল্পীদের হতশ্রী অবস্থা লক্ষণীয়। সেখানে কিছু পোটো-পাড়া রয়েছে। কিন্তু হাতে গোনা দু’এক জন বর্তমানে তাদের ঐতিহ্যমণ্ডিত পটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। একদা এই জেলার ‘গনকর ঘরানা’র পটের খুব সুনাম ছিল। দেশ-বিদেশের অনেক সংগ্রহশালায় মুর্শিদাবাদের পট এখনও দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে মুর্শিদাবাদের পটশিল্প যথেষ্ট সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। সবচেয়ে শোচনীয় পরিণতি পটুয়া সংগীতের। কারণ, পটের গানের ব্যবহার হত মূলত গ্রামেগঞ্জে ঘুরে পট নিয়ে ভিক্ষা করার সময়। কিন্তু সেই পিতৃপুরুষের জীবিকা থেকে তারা বিচ্যুত হলে পটের গানও হারিয়ে যেতে থাকে। আমলাইয়ের সেন্টু পটুয়া, গোকর্ণের খেপা পটুয়া, ছাতিনা কান্দির আনন্দ পটুয়া, করবেলিয়ার বাবু পটুয়া ও লাল্টু পটুয়ার মতো গুটিকয়েক পটুয়া এই জেলায় রয়ে গেছেন যাঁরা এখনও পট খেলান। এই শিল্পকে বাঁচাতে সরকারি সাহায্য প্রার্থনা করি।

দীপাঞ্জন দে নগেন্দ্রনগর, কৃষ্ণনগর

কষ্ট হয়

জয়া মিত্রের (‘জল যে জীবন...’, ১৮-৪) লেখাটি পড়ে খুব ভাল লাগল। কষ্টও হল। প্রকৃতি আমাদের জন্য জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বড় বড় নদী, হ্রদ, আরও নানা রকম জলাশয়। কিন্তু সেই জলাধারগুলি নিয়ে সরকার বড় বড় শিল্পের কথা ভেবেছে। নদীর জলপ্রবাহকে কঠিন হাতে বন্ধ করা হচ্ছে। এতে এক শ্রেণির মানুষ অর্থবান হবে। আর এক শ্রেণি জলের অভাবে শুকিয়ে মারা যাবে।

অলি বন্দ্যোপাধ্যায় নদীকূল, নিমতা

ভ্রম সংশোধন

‘প্রয়াত স্বামী আত্মস্থানন্দ’ সংবাদে (১৯-৬, পৃ ১) লেখা হয়েছে ‘১৯৪৯-এর ১ মার্চ স্বামী বিরজানন্দজির কাছে মন্ত্রদীক্ষা নিয়ে সত্যকৃষ্ণই হন স্বামী আত্মস্থানন্দ।’ প্রকৃতপক্ষে স্বামী আত্মস্থানন্দ মন্ত্রদীক্ষা পান শ্রীরামকৃষ্ণের সন্ন্যাসী শিষ্য স্বামী বিজ্ঞানানন্দের কাছ থেকে, এবং ব্রহ্মচর্য ও পরে সন্ন্যাস (১৯৪৯ সালে) লাভ করেন বিবেকানন্দ-শিষ্য স্বামী বিরজানন্দের কাছ থেকে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE