Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

কেমন হয়েছিল সেই রান্না? নবীনচন্দ্রের মুখেই শোনা যাক— ‘মাংসে পেঁয়াজ মসলা কিছুই নাই। যেন খালি খানিকটা জল সিদ্ধ করিয়া রাখা হইয়াছে।’

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

বঙ্কিমের বাড়ির মা‌ংস

‘মাংসাশী বাঙালি’ (রবিবাসরীয়, ৭-৫) প্রসঙ্গে বলি বঙ্কিমচন্দ্রের (ছবিতে বাঁ দিকে) বাড়িতে নবীনচন্দ্রের (ছবিতে ডান দিকে) মাংস খাওয়ার গল্প। নবীনচন্দ্র প্রথম বার গিয়েছেন বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়ি। সান্ধ্য আড্ডা শেষে বঙ্কিমের বাড়ির উপরের বারান্দায় সবাই খেতে বসলেন। বঙ্কিম নবীনকে বললেন, ‘বামুনবাড়ির রান্না মাছ মাংস তুমি খাইতে পারিবে না; নিরামিষ তরকারি যাহা আছে, তাহাতে দুই এক গ্রাস খাইতে পার কিনা দেখ।’ নবীনচন্দ্র মুখে তার প্রতিবাদ করলেন বটে, কিন্তু খেতে গিয়ে দেখলেন বঙ্কিমচন্দ্রের এ সমালোচনা যথার্থ।

কেমন হয়েছিল সেই রান্না? নবীনচন্দ্রের মুখেই শোনা যাক— ‘মাংসে পেঁয়াজ মসলা কিছুই নাই। যেন খালি খানিকটা জল সিদ্ধ করিয়া রাখা হইয়াছে।’ কিন্তু শিষ্টাচারের অনুরোধে নবীনচন্দ্র বললেন, ‘কেন, মাংস ত বেশ হইয়াছে?’ বঙ্কিমচন্দ্রের উক্তি— ‘তোমার ঠানদিদির খোসামুদি করিবার প্রয়োজন নাই। আমি পূর্ববঙ্গের স্ত্রীলোকদিগের রান্না খাইয়াছি। আমাদের এ অঞ্চলের স্ত্রীলোকেরা মাছ মাংস তেমন রাঁধিতে পারে না।’ (তথ্যসূত্র: ‘আমার জীবন’ নবীনচন্দ্র সেন)।

উত্তমকুমার পতি শালডিহা হাইস্কুল, বাঁকুড়া

সিবিএসই

আমি সিবিএসই বোর্ডের দশম শ্রেণির এক জন ছাত্রের অভিভাবক। এই বছর যারা দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী, তারা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সিমেস্টার সিস্টেমে পরীক্ষা দিয়েছিল। কিছু ছাত্রছাত্রী নবম শ্রেণি থেকেই স্কুল-বেসড বোর্ড পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছিল। হঠাৎ দশম শ্রেণিতে এসে তারা জানল যে তাদের পুরো সিলেবাসের ওপর বোর্ড পরীক্ষা দিতে হবে। এটা কি তাদের প্রতি অবিচার নয়? বিশেষ করে সমাজবিজ্ঞান ও বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে, যাতে অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে পরীক্ষা দিতে হয়? বিনীত অনুরোধ জানাই, যেন সিবিএসই বোর্ড এই বছর দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের এই বিড়ম্বনা থেকে বাঁচিয়ে সিমেস্টার সিস্টেম ফাইনাল পরীক্ষায় চালু রাখে।

জয়শ্রী বিশ্বাস কলকাতা-২৬

ভাষার বোঝা

পাহাড়ে আবার আগুন জ্বলে উঠল। মন্ত্রিসভা চলাকালীন এই ধরনের হিংসা ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচি এক বেনজির ঘটনা, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তবে এই ঘটনার জন্য মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দায় এড়াতে পারেন না। তিনি ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের যে কোনও সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিতে বাংলা ভাষার পঠনপাঠন আবশ্যিক করা হবে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে বাংলা শেখাতে চান, সাধু প্রস্তাব। এর সঙ্গে তাঁর আবেগ জড়িয়ে আছে। কিন্তু, এর জন্য কয়েকটি বিষয় যত গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত ছিল, হয়তো তিনি ততটা ভাবেননি। যেমন, বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষা নিয়ে দুটি ভাষা শিখবে। অন্য দিকে, হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু ও সাঁওতালি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার সঙ্গে তৃতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা শিখতে হবে। এই বৈষম্যের জন্য অন্যান্য মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা একটি বাড়তি বিষয়ের চাপ নিতে বাধ্য হবে। তাই, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুন, নচেৎ জঙ্গল মহলেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

শিবু সরেন নীলডাংগা, শান্তিনিকেতন, বীরভূম

নিজের লোক

এই রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের জন্য ডব্লিউ বি সি এস-এর একটি উচ্চতর সার্ভিস তৈরি করার যে প্রস্তাব রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে (‘দরদি আমলা পেতে নয়া ক্যাডার’, ৯-৬) সেই বিষয়ে কিছু বলা দরকার। বর্তমানে যে ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) সার্ভিস রয়েছে, তাতে কিন্তু আগে জুনিয়র সার্ভিস ও সিনিয়র সার্ভিস চালু ছিল। পরে তা পালটে একটিই সার্ভিস হয়ে যায়। মোটামুটি ভাবে এই শতকের প্রথম দশকে যে সব সরকারি আধিকারিক ডব্লিউবিসিএস হিসেবে চাকরি করতেন, তাঁদের অনেকেই জুনিয়র সার্ভিস থেকে প্রোমোশন পাওয়া।

কিন্তু নতুন এই সিদ্ধান্তের একটা বিপজ্জনক দিক হল, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় যে হেতু রাজ্যের পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও কেন্দ্রের ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন সারা দেশেই আলাদা করে প্রশাসনিক আধিকারিক নিয়োগ করে, সেখানে গুণগত বিচারে যাঁরা আইএএস/আইপিএস পাশ করে আসেন, তাঁদের মেধা ও যোগ্যতা রাজ্যের পাবলিক সার্ভিস কমিশন মারফত নিয়োগ করা প্রার্থীদের থেকে অনেক গুণ বেশি। এবং সেই কারণেই রাজ্যের ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) ক্যাডারের আধিকারিকরা চাকরি জীবন শুরু করেন বিডিও হিসেবে। ১০/১২ বছর সেই পদে থাকার পরে তাঁরা মহকুমা বা জেলা সদরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদ পান এবং চাকরি জীবনের শেষ ভাগে এসে তাঁদের কপালে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার সুযোগ আসে। আর আইএএস-রা মহকুমাশাসক হিসেবে চাকরি শুরু করে অতিরিক্ত জেলাশাসক হয়ে জেলাশাসক হয়ে যান ৮-১০ বছরের মধ্যেই।

কিন্তু বিগত বাম শাসনে মূলত মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াসে রাজ্যের কিছু জেলার জেলাশাসকের পদ রাজ্যের আধিকারিকদের জন্য সংরক্ষিত হয়। বর্তমান সরকার ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যা বাড়িয়েছে। উচ্চতর সার্ভিস তৈরি করে আদপে সেই ক্যাডারের আধিকারিকদের দিয়ে আরও পদ পূরণের চেষ্টা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সরকার ওই বিশেষ ক্যাডারের আধিকারিকদের বেতন, ভাতা, বাড়তি ইনক্রিমেন্ট-সহ কিছু সুবিধে পাইয়ে দিয়েছে, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে একই পরীক্ষার দ্বারা নিয়োজিত অন্য দফতরের আধিকারিকদের অন্যায় ভাবে বঞ্চনা করা হয়েছে।

রাজ্যের উন্নয়ন ও প্রশাসনিক দায় শুধু ডব্লিউবিসিএস (এগজিকিউটিভ) ক্যাডারের আধিকারিকরাই সামলান— এটা অত্যন্ত ভুল ও বিভ্রান্তিকর ধারণা। নানা দফতরের আধিকারিকদের সম্মিলিত প্রয়াসেই রাজ্যের কাজ চলে— বিগত ও বর্তমান সরকার একই ভাবে এই ভুল ধারণাকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে ও এই ক্যাডারের আধিকারিকদের অন্যান্য দফতরের মাথায় বসিয়ে বাকিদের কাজ ও নিষ্ঠাকে অপমান ও অবমূল্যায়ন করছে।

উদ্দেশ্যটা খুব স্পষ্ট। সেটা হল সরকারের বশংবদ একটি ‘হেঁ হেঁ বলা’ অনুগত আমলাবাহিনী তৈরি করা। কেন্দ্রীয় সার্ভিসের পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আধিকারিকদের নিয়োগ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর। তাই সরাসরি রাজ্য সরকারের অনুগত থাকাটা তাঁদের পক্ষে বাধ্যতা নয়।

কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও গুজরাত ক্যাডারের আইএএস আধিকারিকদের অনেককেই নয়া দিল্লিতে নিয়ে এসে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়েছেন। নিজেদের ‘লোক’ বসানোর এই প্রয়াস আসলে প্রশাসনের শিরদাঁড়া সোজা করে কাজ করার মনোবলটাই ভেঙে দেবে— সরকারের ইয়েসম্যান হওয়া ছাড়া এঁদের আর কোনও কাজ থাকবে কি?

পার্থ বাগচী কলকাতা-৫২

১৭০ মিটার?

সুজিত দে-র চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জানাই যে কলকাতা মেট্রোর প্ল্যাটফর্মের গড় দৈর্ঘ্য ১৭০ মিটার। দু’খানা দারা সিংহ-ও যদি প্ল্যাটফর্মের দুই প্রান্তে থাকেন, ১৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের দড়ি ৫ সেকেন্ডের জন্যও তুলে রাখতে পারবেন কি না সন্দেহ (‘মেট্রোয় দড়ি’, ১৯-৬)। পুজোর সময় উপচে পড়া ভিড় বড়জোর ১৫ মিটার হবে। ১৫ মিটার মানে দাঁড়াচ্ছে ৪৫-৪৬ ফুট। এত চওড়া কোনও জায়গায় পুলিশকে দড়ি উঁচু করে ধরতে হয় বলে আমার মনে হয় না। আর ১৭০ মিটার!

সুবীরকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় সন্তোষপুর

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE