Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাকেও বলা হয়েছে যে বি এস-৪ যানের গাড়িতে যেন অটোমেটিক হেডলাইট সর্বদাই প্রজ্বলিত থাকে গাড়ির সচলতার সঙ্গে। এই বিধানের ইতিবাচক দিকটি স্বীকার্য হলেও আর একটি দিক আমাদের যথেষ্ট ভাবনার বিষয়।

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

বাইকের হেডলাইট

দ্বিচক্রযান ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সুচিন্তিত পর্যবেক্ষণ ও তার নির্দেশিকা অনুযায়ী সাম্প্রতিক বিধান হল যে, বাইকের হেডলাইট যেন অন মোডে থাকে ইঞ্জিনের সচলতার সঙ্গে। কেন্দ্রীয় সরকার সেই মোতাবেক এটিকে আইনি বৈধতা দিয়েছে। গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাকেও বলা হয়েছে যে বি এস-৪ যানের গাড়িতে যেন অটোমেটিক হেডলাইট সর্বদাই প্রজ্বলিত থাকে গাড়ির সচলতার সঙ্গে। এই বিধানের ইতিবাচক দিকটি স্বীকার্য হলেও আর একটি দিক আমাদের যথেষ্ট ভাবনার বিষয়। তা হল বিশ্বের এই শক্তি সংকটের সামনে, যেখানে ১ ওয়াট শক্তি অপচয়কে ভবিষ্যতের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতি বলে মনে করা হয়, সেখানে সারা দেশব্যাপী কোটি কোটি দ্বিচক্রযান সূর্যের আলোকে উপেক্ষা করে তাদের ঔজ্জ্বল্য জাহির করতে যে শক্তি ব্যয় করবে, তা নেহাত কম নয়। তা ছাড়া বিপুল সংখ্যক হেডলাইট অধিক সময় প্রজ্বলিত থাকায় তাদের ব্যবহারজনিত ব্যয়ও অধিক হবে। মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় এই বিধান কার্যকর করা যেতে পারে; কিন্তু দিনের সারা ক্ষণই এই শক্তি অপচয় চলতে থাকাটা যথোপযুক্ত কি না তা আর এক বার ভেবে দেখা দরকার।

প্রবীরকুমার ঘোষ সল্ট লেক-৯৮

পণ্ডিতের ভণ্ডামি

বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আন্তরিক ধন্যবাদ— কিছু অপ্রিয় এবং বিপজ্জনক সত্যকে বলিষ্ঠ ভাবে উপস্থাপনের জন্য (‘সময় এসেছে ধর্ম...’, ১৫-৬)। জানি না যাঁরা জেগে ঘুমোন, এতে তাঁদের সম্বিৎ ফিরবে কি না। উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত সাহিত্যিক সলমন রুশদি এবং লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে আমাদের ভীত আত্মসমর্পণ। এই ‘জেগে ঘুমানো’-রা মনে করেন সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িকতা বা মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করে ধামাচাপা দিয়ে মানিয়ে নেওয়া বা বড়জোর একান্তে আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত।

এই দ্বিচারিতা কেন? একটি বিশেষ হিংস্র সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী আছে সেই ভয়ে, না সহজে ও নিরাপদে থেকে হাততালি পাওয়ার লোভে? ক্ষেত্র বিশেষে হিরণ্ময় নীরবতা শুধু নিজেকে সমস্ত বিতর্ক থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার সচেতন প্রয়াস নয়। তা দ্বিচারিতা হিসেবেও গণ্য হয়। আইএস তাদের পরিকল্পনার ছক প্রকাশের পরও কোনও কোনও পণ্ডিত আবার তাদের কাজের সাফাই হিসাবে এই ইসলামি চরমপন্থাকে একটা প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখাতে চান এবং কখনও কখনও মুসলিম মৌলবাদকে প্রকারান্তরে সমর্থনের ঢাল হিসাবে সাচার কমিশনের রিপোর্ট উল্লেখ করেন।

আর যারা আইএস বা অন্য কোনও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীতে যুক্ত বলে জানা যাচ্ছে তারা অধিকাংশই সম্পন্ন ঘরের, এবং তারা কেবলমাত্র ধর্মীয় উন্মাদনায় এ কাজে লিপ্ত। অন্য দিকে, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় অনেক খামতি এবং সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ভারতে গণতান্ত্রিক আবহ এখনও বর্তমান। তৃতীয় বিশ্বে, এমনকী এশিয়ার মধ্যেও ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো দৃষ্টান্তস্বরূপ। এই গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদী সমাজবিশিষ্ট ভারতও আজ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের লক্ষ্য। শ্রীবন্দ্যোপাধ্যায় ঠিকই বলেছেন, ভারতকে এক বার কোনও ভাবে পেড়ে ফেলতে পারলে সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত এই জঙ্গিগোষ্ঠীর সামনে ফাঁকা মাঠ।

এখানে আর একটি ব্যাপার আছে। গণতন্ত্রে ভোটবাক্সে প্রতিফলিত সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ। অতএব যে কোনও ভাবে সংখ্যা বাড়িয়ে মাথাপিছু একটি ভোটের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা সর্বত্র প্রবল। পশ্চিমবঙ্গের শুধু সীমান্তবর্তী জেলাগুলি নয়, অন্য জেলা এবং কলকাতা মহানগরীতে জনবিন্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে গত কয়েক দশকে। সেটা মনে রাখা দরকার।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস প্রতিরোধে সকলের একজোট হওয়া উচিত, বিপদ যখন বলতে গেলে ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে। এটা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিবন্ধ লিখিয়েরা জানেন না, তা নয়। কিন্তু তবু দেখা যায় এই এলিটিস্ট ভণ্ডামি। বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সামনে পরস্পর রণং দেহি দুই রাজনৈতিক শিবিরের দুই মান্যগণ্য ব্যক্তির পরস্পরের মুখে বিশেষ একটি মাংস গুঁজে দিয়ে নিজেকে ‘নাস্তিক’ ‘প্রগতিশীল’ জাহির করার প্রচেষ্টাও এক ধরনের ভণ্ডামি।

শ্রীবন্দ্যোপাধ্যায় যে এলিটিস্ট ভণ্ডামির কথা বলেছেন, তার আর এক রকম প্রকাশও লক্ষ করা যায়। সাধারণ ভাবে হিন্দুধর্ম রেজিমেন্টেড নয়। কিন্তু আমাদের রাজ্যে কিছু ব্রাহ্মণ্যবাদী বামপন্থী (!) আছেন, যাঁরা নিজেদেরকে প্রগতিশীল প্রতিপন্ন করার জন্য নিজ ধর্ম স্বীকার করতেও কুণ্ঠা বোধ করেন এবং নিজেকে নাস্তিক দাবি করে অনেক সময় সশস্ত্র বিপ্লবীদের কালীপুজো করা বা কোনও অভিযানে যাওয়ার আগে কালীমূর্তিকে প্রণাম করে যাওয়ার বা স্বদেশকে দেশমাতৃকা রূপে ভাবনার মধ্যে হিঁদুয়ানির গন্ধ খুঁজে পান। কিন্তু চাপা জাত্যভিমানে বিশেষ বিশেষ সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন বর্ণকৌলীন্যের বিশেষ স্বীকৃতি/প্রাধান্য আদায়ের লোভে। ভাবনা জাগে, শিক্ষিত জনেদের এমন আচরণ মৌলবাদী সন্ত্রাস মোকাবিলায় এবং প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির পক্ষে কতখানি সহায়ক হবে?

রত্না রায় কলকাতা-৪৭

বাংলা পরীক্ষা

নবোদয় বিদ্যালয় সমিতি ১১.১২.১৬ তারিখে তৃতীয় ভাষার শিক্ষক নিয়োগের যে লিখিত পরীক্ষা নিয়েছিল, ২৬.০৫.১৭ তারিখে তার সব ক’টির (অসমিয়া, বোড়ো, গুজরাতি, কন্নড়, মরাঠি, ওড়িয়া, পঞ্জাবি, উর্দু ইত্যাদি) ফল ঘোষণা করলেও বাংলার ফল ঘোষণা করেনি। কেন দেরি এবং কবে ফল জানানো হবে সে বিষয়েও তারা নীরব। বাংলা কি পূর্ব-উল্লিখিত ভাষাগুলির সমমর্যাদাপ্রাপ্ত নয়?

তা ছাড়া বাংলার যে ঠিক উত্তরের তালিকা পরীক্ষা গ্রহণকারী সংস্থা সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন তৈরি করেছে, তাতে হিন্দু কলেজের প্রতিষ্ঠার (১৮১৭) আগে বাংলা সাময়িকপত্রের সূচনা (১৮১৮) হয়েছিল, সকল দেশবাসী গালিলিওর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল (‘গালিলিও’ প্রবন্ধে লেখক সত্যেন্দ্রনাথ বসু এ কথা কোথাও বলেননি), ‘গঙ্গামঙ্গল’-এর রচয়িতা দ্বিজমাধব (অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন ‘গঙ্গামঙ্গল’ মাধব আচার্যের রচনা এবং চণ্ডীমঙ্গলের কবি দ্বিজমাধবকে কেউ কেউ মাধব আচার্য আখ্যা দিলেও তা সম্পূর্ণ ভুল। বাংলাসাহিত্যের ইতিবৃত্ত, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ ৯৩)— এই ভুল বিষয়গুলিকে ঠিক বলে তার ভিত্তিতে উত্তরপত্রের মূল্যায়ন হয়েছে।

এ ছাড়া বাংলা কারকের সংখ্যা, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের সমাপ্তি (‘তবে অনুমান নিছক রাধাবিলাপে কাব্যটি সমাপ্ত হয়নি, কারণ ভারতীয় সাহিত্যের শেষে বিরহের কাহিনি দিয়ে কাব্য শেষ করার প্রথা ছিল না’, বাংলাসাহিত্যের সম্পূর্ণ ইতিবৃত্ত, ড. অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, পৃ ২৭) সংক্রান্ত প্রশ্নের প্রকাশিত উত্তর সম্পর্কেও মতভেদ আছে।
এ ভাবে নম্বর দেওয়া অনৈতিক এবং সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে অভাবনীয়! কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রকের অন্তর্গত স্বশাসিত সংস্থা নবোদয় বিদ্যালয় সমিতির কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সহৃদয়তার সঙ্গে বিবেচনা করতে অনুরোধ করি। যাঁরা ঠিক উত্তর দিয়েছেন, তাঁদের যাতে কোনও ভাবেই অবহেলিত হতে না হয়।

স্বাতী মাহাতো জামশেদপুর, ঝাড়খণ্ড

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE