Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

পরিবেশ-বান্ধব যান হিসেবে সাইকেল বিশ্ব জুড়ে সমাদৃত। কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর জন্য বিশ্বের সমস্ত উন্নত দেশের শহরে সাইকেল চলাচলের সুবিধার্থে সাইকেল লেন তৈরি হয়েছে ও হচ্ছে।

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

অন্যে ভাবে আমরা না

খবরে প্রকাশ, কর্নাটক সরকার বেঙ্গালুরু শহরে তাদের ‘ট্রিনট্রিন’ প্রোজেক্টটির সম্প্রসারণের জন্য নতুন করে ৮০.১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এই প্রোজেক্টে শহরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য বাই-সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায় ঘণ্টা হিসেবে। মাস কয়েক ধরে মহীশূরে পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রোজেক্ট চলার সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বেঙ্গালুরুতে এটি চালু করার ব্যবস্থা করছে কর্নাটক সরকার (২৮-৯)।

পরিবেশ-বান্ধব যান হিসেবে সাইকেল বিশ্ব জুড়ে সমাদৃত। কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর জন্য বিশ্বের সমস্ত উন্নত দেশের শহরে সাইকেল চলাচলের সুবিধার্থে সাইকেল লেন তৈরি হয়েছে ও হচ্ছে। জনসাধারণকে সাইকেল ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার জন্যে দেশের প্রধানমন্ত্রীরা সাইকেলে চ়ড়ে মন্ত্রিসভায় যান। আমাদের পড়শি দেশ চিনের অনেক বড় বড় শহরে ‘ট্রিনট্রিন’ প্রোজেক্টের মতো প্রোজেক্ট বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে। ফলও পাওয়া গেছে হাতে-হাতে। শহরগুলির দূষণ মাত্রা বেশ কমে গেছে। এ ব্যাপারে আমাদের অভিজ্ঞতা বড়ই তিক্ত। কলকাতার পাটুলি থেকে উল্টোডাঙা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চোদ্দো কিমি রাস্তার দু্’ধারে সাইকেল লেনের ব্যবস্থা প্রথম থেকেই প্ল্যানে ছিল। রাস্তার বেশ কিছু অংশ তৈরিও হয়ে গেছে বহু দিন আগে। কিন্তু প্রশাসনের সচেতনতার অভাবে আজও তা সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি। বহু মানুষ প্রতি দিন বিপদ মাথায় নিয়ে অতি দ্রুতগতিসম্পন্ন যানবাহনের সঙ্গে রাস্তার ধার দিয়ে সাইকেল চালান। ইতিমধ্যে ওই সাইকেল লেনের কিছু কিছু অংশ জবরদখল করে রাস্তার পাশের হকাররা বসতে শুরু করে দিয়েছেন। এর প্রতিবাদে ‘কলকাতা সাইকেল সমাজ’ গত ২৭ অগস্ট আয়োজন করে একটা ‌মিছিলের। এতে সমাজ-সভ্যবৃন্দ ছাড়া কয়েকশো সাধারণ মানুষও সাইকেল নিয়ে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, ইএম বাইপাসে অবিলম্বে সাইকেল লেন চালু করা, কলকাতায় সাইকেল চালকদের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে ফাইন আদায় বন্ধ করা, শহরের বড় বড় রাস্তায় পৃথক সাইকেল লেন চালু করা ইত্যাদি।

শহরের মধ্যে ভুক্তভোগী সব সাইকেল চালকরা জানেন, কলকাতায় ট্রাফিক পুলিশ ছুতো-নাতায় তাঁদের ধরে ১০০ টাকা করে জরিমানা করেন। যাঁরা তৎক্ষণাৎ দিতে পারেন না, তাঁদের কপালে বহু দুর্ভোগ থাকে। আর যাঁরা তখনই তা দিয়ে দেন, তাঁরা জানেন, টাকাটা কিন্তু সরকারের ঘরে গেল না। টাকাটা সরকারি রসিদের বদলে সাদা চিরকুটে লেখা রসিদে নেওয়া হয়। পুলিশ-প্রশাসনের কাছে কলকাতা সাইকেল সমাজের কর্মীরা জানতে পেরেছেন, সাইকেল চালকদের কাছ থেকে জরিমানা নেওয়ার আইনি কোনও অধিকার তাঁদের নেই। এ-ও জানা গেছে যে, সাইকেল শ্লথ গতির যান, যা শহরের যান চলাচলের উচ্চগতির সঙ্গে বেমানান। সাইকেল চালকরা নাকি প্রায়শই ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গ করে থাকেন। তাই তাঁরা এঁদের ঠেকানোর জন্যে... ইত্যাদি। সমস্ত পৃথিবী, আমাদের দেশের অন্যান্য রাজ্য যখন সাইকেল নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন, তখন আমাদের রাজ্যের প্রশাসকদের চিন্তা-ভাবনার এমন দৈন্য বড়ই পীড়াদায়ক।

সুরজিৎ ঘোষ সভ্য, কলকাতা সাইকেল সমাজ

প্রভাব ভারতেও

প্রায় দশ বছর আগে, ২০০৭-২০০৮ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে শুরু হয় ভয়ানক অর্থনৈতিক মন্দা। অর্থনীতিবিদরা সেই সময়টাকে বলে থাকেন ‘দ্য গ্রেট রিসেশন’। আমেরিকার মতো পোক্ত অর্থনীতিও রেহাই পায়নি। হুড়মুড়িয়ে পড়ে যায় শেয়ার বাজার। বন্ধ হয়ে যায় বহু কলকারখানা, কাজ হারান হাজার হাজার মানুষ। এমনকী বন্ধ হয়ে যায় লেম্যান-ব্রাদার্সের মতো সুবিশাল আমেরিকান ব্যাংকও। ভারতের ‘আউটসোর্সিং’-নির্ভর তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পেরও ব্যাপক ক্ষতি হয় তখন।

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া যেমন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আমেরিকায় তেমন ফেডেরাল রিজার্ভ, সংক্ষেপে ‘ফেড’। মন্দার সামনে দাঁড়িয়ে ফেড-এর কাছে তখন প্রধান লক্ষ্য দুটো— কী ভাবে মার্কিন অর্থনীতিকে আরও পতনের হাত থেকে বাঁচানো যায়, আর তার পর মন্দা কাটিয়ে অর্থনীতিকে আবার কী ভাবে চাঙ্গা করে তোলা যায়। প্রথম লক্ষ্যটা স্বল্প মেয়াদের হলেও দ্বিতীয়টার জন্য দরকার ছিল সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। ফেডেরাল রিজার্ভ ঘুরে দাঁড়ানোর যে দাওয়াই নিয়ে আসে তখন, অর্থনীতির ভাষায় তাকে বলে ‘কোয়ান্টিটেটিভ ইজিং’ বা কিউ-ই।

কী এই কিউ-ই? খুব সহজ করে বললে, কিউ-ই হল দুঃসময়ে ফেড-এর দেওয়া ‘অর্থনৈতিক ত্রাণ’। ওই সময় থেকে ফেডেরাল রিজার্ভ কিছু অতিরিক্ত ডলার আমেরিকার অর্থনীতিতে পাঠাতে শুরু করে। এই অতিরিক্ত ডলারের পরিমাণটা কম নয় মোটেই, বরং চোখ কপালে তুলে দেওয়ারই মতো— প্রায় ৪.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (১ ট্রিলিয়ন= ১ লক্ষ কোটি)। কিউ-ই’র অন্যতম উদ্দেশ্য হল, ওই অতিরিক্ত অর্থ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হাত ঘুরে সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছবে, মানুষের হাতে অর্থ এলে মানুষের কেনাকাটা বাড়বে আর তার ফলে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে।

এর পর প্রায় দশ বছর কেটে গিয়েছে। মন্দা কাটিয়ে ধীরে ধীরে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে আমেরিকার অর্থনীতি। বেকারত্বের হার দশ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে চার শতাংশের আশেপাশে। সুদের হার শূন্য থেকে বেড়েছে ১.২৫ শতাংশের মতো, এবং ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে। আমেরিকার অর্থনীতি এখন স্বাবলম্বী হয়েছে। তাই অর্থনৈতিক মন্দার সময় ‘ত্রাণে’ দেওয়া সেই ৪.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজার থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার সময় এসেছে।

ফেডেরাল রিজার্ভ প্রতি তিন মাস অন্তর আমেরিকার অর্থনীতি পর্যালোচনা করে। এই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আপাতত প্রতি ত্রৈমাসিকে দশ বিলিয়ন ডলার করে ফিরিয়ে নেওয়া হবে বাজার থেকে। তার পর পরিমাণটা ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে।

কিন্তু ভারতের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়তে পারে কি? হ্যাঁ, সম্ভবনা রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে টাকার বিনিময়-মূল্যে এর প্রভাব পড়তে পারে। কেন? এ বার অর্থনীতির গোড়ার কথা— চাহিদা প্রায় একই থাকলে, জোগান কমলে দাম বাড়ে। ধীরে হলেও ডলারের জোগান বা লভ্যতা কমবে ক্রমশ, তাই বাড়তে পারে ডলারের সাপেক্ষে টাকার বিনিময় মূল্য। আর তখন ডলার-নির্ভর লেনদেন প্রভাবিত হতে পারে, যেমন, আমদানির খরচ বাড়তে পারে। তবে, মনে রাখা দরকার, ডলার-টাকার বিনিময় মূল্য আরও একাধিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়ে থাকে।

সুকান্তদেব বাগ শার্লট, নর্থ ক্যারোলিনা, আমেরিকা

ভুল ঠিকানা

তিন-চার বছর হল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রধান আরটিআই কার্যালয়ের ঠিকানা পরিবর্তন করে ১১/এ মির্জা গালিব স্ট্রিট হয়েছে। অথচ গুগল সার্চ করলে ভুল ঠিকানা দেখাচ্ছে। কোনও সরকারি কর্মীর কি এ বিষয়ে কোনও দায়িত্ব নেই?

সুশান্ত হাটি ই-মেল মারফত

এখনই বুলেট?

দেশের রেলব্যবস্থা বিপর্যস্ত। জরাজীর্ণ পরিকাঠামোর জন্যে প্রায়ই দুর্ঘটনা লেগেই আছে। কিছু দিন আগে মুম্বই শহরের অদূরে ওভারব্রিজে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কত যাত্রীর প্রাণ গেল! দূরপাল্লার ট্রেনে প্রায়ই জল থাকে না। তার ওপর ইঁদুর ও আরশোলার উপদ্রব। সম্প্রতি আমার ভাই জালিয়ানওয়ালাবাগ এক্সপ্রেস ট্রেনে অমৃতসর ভ্রমণে গিয়েছিল। সেই ট্রেন প্রায় ৯ ঘণ্টা বিলম্বে পৌঁছয়। আবার নতুন দিল্লি থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে হাওড়ায় পৌঁছয় প্রায় ৬ ঘণ্টা দেরিতে। এই পরিকাঠামো পরিবর্তন না করে বুলেট ট্রেনের প্রয়োজন আছে কি?

কল্যাণ চক্রবর্তী কলকাতা-৯১

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE