মৈত্রীর মূর্তি আমার গ্রাম
জয়ন্ত ঘোষালের ‘প্রমাণ হল, এটা পশ্চিমবঙ্গ’ (৪-১০) শীর্ষক লেখাটি বেশ কিছু স্মৃতি উসকে দিল। কৃষ্ণনগর থেকে তিরিশ কিলোমিটার দূরে আমার গ্রাম বড় আন্দুলিয়া। যে গ্রামের কথা তাঁর লেখায় উল্লিখিত হয়েছে, সেই গ্রাম পেরিয়েই যেতে হয় আমাদের গ্রামে। ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যে আমাদের গ্রামের কথা আছে। বহু পুরনো এই গ্রামের লোকসেবা শিবিরকে তাঁর কাজের জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন কবি বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায়। হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষের পারস্পরিক সহযোগিতায় এই গ্রামের বেশির ভাগ অনুষ্ঠানই খুব সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়— ছোটবেলা থেকেই তা দেখেছি। দশমীর সকালে শৈশবের স্মৃতিপথে হেঁটে এলাম।
বাসরাস্তা থেকে নামতেই ইয়াদা টুকটুকি নিয়ে হাজির। বাড়ির সামনেই করমকাকার টেলারিং-এর দোকান। খুব ছোটবেলায় মুজিবর কাকার বাবা-ই আমাদের পুজোর জামা তৈরি করতেন। তার পর করমকাকার হাতে তৈরি জামাপ্যান্ট পরেছি। আরশাদদার সঙ্গে গল্প হল অনেক ক্ষণ। দশমীর বিকেলে জলঙ্গি নদীতে নৌকাবাইচ আমাদের গ্রামের ট্র্যাডিশন। নদীর দু’ধারে দাঁড়িয়ে থাকে সব সম্প্রদায়ের মানুষ। নৌকা করে এ বারও ঘুরলাম নদীতে।
হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষের শুভেচ্ছা বিনিময় চিনিয়ে দেয় অন্য পশ্চিমবঙ্গকে।
মুসলমান পরিবার দিয়ে ঘেরা একমাত্র হিন্দু বাড়ি আমাদের। কবি জয়নাল আবেদিন, হজরত আলি আমার ঠাকুমাকে আজও প্রণাম করে যান। এক মুসলিম বয়স্ক মহিলা, যার কোলেপিঠে মানুষ আমাদের বাড়ির অনেকেই, দশমীর সন্ধ্যায় তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করি ছোটরা সবাই। কোনও দিন কোনও আতঙ্ক কিংবা দ্বিধা কাজ করেনি মনের মধ্যে। আজও করে না। হারুণ, ইস্তিয়াক, মেহেবুব, হাসান, আবুবক্করদের সঙ্গে এক বেঞ্চে বসা আমি গর্বিত এই ভেবে যে, আমার গ্রাম আজও মৈত্রীর প্রতিমূর্তি।
অমৃতাভ দে কৃষ্ণনগর, নদিয়া
অন্য যুবরাজ
উত্তর ভারত বিশেষত গোবলয়ে বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। গত লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ছাপান্ন ইঞ্চি ছাতির বিপরীতে রাহুল গাঁধী আদৌ দাঁড়াতে পারেননি। তাঁকে ‘পাপ্পু’ নামক গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে। লোকসভায় মাঝেমধ্যে কলাবতীর দুরবস্থার আবেগঘন কাহিনি পরিবেশন করে তিনি ঝলক দেখিয়েছিলেন, ‘স্যুট-বুটের সরকার’ কটাক্ষ করে সাময়িক বিরোধিতা করতে পেরেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সংসদ চলাকালীন ঘুমিয়ে পড়ে বা সরকারকে চেপে ধরার পরিবর্তে ‘চিন্তন শিবির’-এর নামে বেপাত্তা হয়ে অপবাদও কুড়িয়েছেন।
সম্প্রতি দশ দিনের মার্কিন মুলুক ও ইউরোপ সফরে প্রবাসী ভারতীয়দের সম্মেলনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনারে রাহুল গাঁধীকে অন্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখে দেশবাসী আশ্চর্য হয়ে গেছে। তাঁর পরিশীলিত ও পরিণত বক্তৃতায় শাসক দল জবাব দিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ২০১৪ সালের আগে নরেন্দ্র মোদী চিন থেকে আমেরিকা সর্বত্র ঘুরে ঘুরে বক্তৃতা দিয়ে যে কায়দায় বিদেশে প্রবাসী ভারতীয়, বিশ্ববাসীর সামনে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন, রাহুল ঠিক সে ভাবেই নিজেকে মেলে ধরছেন। তফাত এটাই, রাহুল শুধু যে মোদী সরকারের উন্নয়নের ফানুস ফুটো করে দিয়েছেন তা নয়, তিনি কংগ্রেসের খামতির কথা স্বীকার করে অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন। নিউ ইয়র্ক টাইম স্কোয়ারে তাঁকে ঘিরে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে ‘নিজস্বী’ তোলার ধুম পড়ে গিয়েছে।
প্রবাসী কংগ্রেসের সম্মেলনে সুকৌশলে বলেছেন ‘ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকদের সঙ্গে দেখা করার সময় আমি বলার আগেই তাঁদের প্রশ্নে আমি বিস্মিত। তাঁদের সিংহভাগ উদ্বেগ প্রকাশ করছেন— ভারতের সহিষ্ণুতা, সম্প্রীতির কী হল? হাজার বছর ধরে ভারত বিশ্বকে সম্প্রীতির পথ দেখিয়েছে। আর এখন একটা শক্তি দেশে বিভাজন আনছে, এটা বিপজ্জনক।’ এই মাস্টারস্ট্রোক-এর সামনে বিজেপি স্পষ্টতই খেই হারিয়ে ফেলছে। শুধু তা-ই নয়, মোদীর রাজ্য গুজরাতে গিয়ে তিনি ‘বিকাশ গান্ডো থায়ে ছে’ (উন্নয়ন পাগল হয়ে গেছে)-র মতো মাত্র এক লাইনের প্রচার করে তুমুল আলোড়ন তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন। বিতর্কের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার শুভ চেষ্টা লক্ষ করে কংগ্রেস কর্মীরা রাহুলকে ঘিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।
তবে বিজেপি তথা এনডিএ-কে হঠানোর জন্য চাই সক্রিয় সংগঠন এবং বিভিন্ন স্বার্থ নিয়ে চলা আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে মসৃণ জোট রসায়ন। এই দু’কাজে সাফল্য না পেলে শুধু ‘ডিবেট’ করে ক্ষমতা দখল অধরা থেকে যাবে।
সরিৎশেখর দাস চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর
চালাবে কী করে
সম্প্রতি স্পিড লিমিট ড্রাইভারদের কাছে একটা আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এটা ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’-এর একটা অংশ। এটা মানলে রাস্তায় বিপদ কমবে নিশ্চিত। কিন্তু এই ঘন ঘন স্পিড লিমিট চেঞ্জ-এর নির্দেশ গাড়ি চালকদের বিপদের মুখে ফেলতে পারে। কলকাতার রাস্তায় যেমন গাড়ি, তেমন পথচারীর ভিড়। তাই ড্রাইভারদের, বিশেষ করে দু’চাকার চালকদের খুবই দুরবস্থা। এক দিকে ভিড় রাস্তা, আর এক দিকে ফাইন-এর ভয়! এই অবস্থায় সে স্পিডোমিটার দেখবে, না গাড়ি চালাবে! সরকার এবং ট্রাফিক বিভাগ যদি একটু ভাবনা-চিন্তা করে, তবে চালকদের আতঙ্ক কমবে।
মনামী চক্রবর্তী ও মনমিতা চক্রবর্তী কলকাতা-১০৩
প্যাসেঞ্জার ট্রেন
আজিমগঞ্জ থেকে নিউ ফরাক্কার মধ্যবর্তী ছোট স্টেশনগুলির জন্য (যেখানে এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি দাঁড়ায় না) চল্লিশ বছর আগেও হাওড়া থেকে তিনটি সরাসরি ট্রেন ছিল। ৩৩৩/৩৩৪, ৩৪৫/৩৪৬ এবং ৩৪৭/৩৪৮ নম্বর ট্রেনগুলি হাওড়া থেকে যথাক্রমে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে এবং রাত্রি ৮টা ৫৫ মিনিটে ছাড়ত। ৩৪৭/৩৪৮ নম্বর ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি ফাস্ট প্যাসেঞ্জার নামে চলাচল করত। বিভিন্ন পরিবর্তনের পর সেটি এখন ১৩০৩৩/১৩০৩৪ নম্বর হাওড়া-কাটিহার এক্সপ্রেস হয়ে চলাচল করছে। উল্লিখিত এলাকার জন্য এটিই একমাত্র ট্রেন, যেটি হাওড়া থেকে সরাসরি চলে। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ, সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে (বি এ কে লুপ হয়ে) নিউ ফরাক্কা পর্যন্ত একটি সরাসরি প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানো হোক।
নন্দকুমার সরকার মির্জাপুর, গনকর, মুর্শিদাবাদ
ট্রেনের শৌচাগার
সম্প্রতি দক্ষিণ ভারত যাওয়ার সময় বেশ কয়েক বছর পর দূরপাল্লার ট্রেনে চাপলাম। অবাক হয়ে দেখলাম, ট্রেনের টয়লেটগুলো আগের মতোই আছে। যাত্রীদের মল-মূত্র যত্রতত্র ফেলতে ফেলতে ছুটছে ট্রেনগুলি। দুর্গন্ধ ও দৃশ্যদূষণে গা গুলিয়ে ওঠে। অথচ দিকে দিকে ‘স্বচ্ছ ভারত’-এর ঢাক পেটানো চলছে।
প্রণবকুমার মাটিয়া পাথরপ্রতিমা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
জেব্রা ক্রসিং
এয়ারপোর্টের কাছে যশোর রোডের মাঝখান থেকে রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যেখান থেকে পথচারীরা রাস্তা পারাপার করবেন, সেখানে কোনও জেব্রা ক্রসিং নেই। ফলে পথচারীরা খুবই অসুবিধায় পড়ছেন। বিশেষ করে, এয়ারপোর্ট তিন নম্বর গেটে যাঁরা রাস্তা পার হয়ে কলকাতার দিকের বাস ধরেন, তাঁদের প্রচণ্ড সমস্যায়। বাচ্চাকে স্কুলবাসে ওঠাতে আসা মায়েরাও বাচ্চা নিয়ে বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা পার করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সমীরবরণ সাহা কলকাতা-৮১
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy