Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

এখন প্রতিদিন টন টন মাটি বয়ে নিয়ে এসে বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে সেই আদ্যিকালের তিনশো বিঘা এলাকার চালতিয়া বিল। বাস্তুতন্ত্র জলাঞ্জলি দিয়ে নগরায়ণের প্রতিজ্ঞায় বাহুবলী ও ট্যাঁকবলীরা একজোট হয়ে আজ এক আজব ধ্বংসলীলায় শামিল হয়েছে।

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

চালতিয়া বিল

কলকাতার মতো অন্যান্য জেলা সদর ও শহরতলিও দ্রুত কংক্রিটের জঙ্গলে ঢেকে যাচ্ছে। বহরমপুর শহরের গোরাবাজার থেকে ভাকুড়ি হয়ে সারগাছি যাওয়ার রাস্তায় চালতিয়া বিল। এই বিলের পশ্চিমে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে ভাগীরথী নদী, আর পূর্ব দিকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ভাণ্ডারদহ বিল। স্বাধীনতার আগে কুড়ি-ত্রিশ ফুট চওড়া খাল দিয়ে চালতিয়া বিলের সঙ্গে ভাগীরথী আর ভাণ্ডারদহ বিলের সংযোগ ছিল।

আর এখন? এখন প্রতিদিন টন টন মাটি বয়ে নিয়ে এসে বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে সেই আদ্যিকালের তিনশো বিঘা এলাকার চালতিয়া বিল। বাস্তুতন্ত্র জলাঞ্জলি দিয়ে নগরায়ণের প্রতিজ্ঞায় বাহুবলী ও ট্যাঁকবলীরা একজোট হয়ে আজ এক আজব ধ্বংসলীলায় শামিল হয়েছে। তার সঙ্গে সঙ্গে, বহরমপুর শহরের বর্জ্য জল কোনও রকম ট্রিটমেন্ট ছাড়াই চালতিয়া বিলকে আরও বিষিয়ে দিচ্ছে। ভাকুড়ি মৎসজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য ছাড়াও প্রায় ষাটটি মৎসজীবী পরিবার জীবন ও জীবিকা নিয়ে আজ কঠিন সংকটে। তার পাশাপাশি, উধাও সেই সব দেশি পাবদা, চিংড়ি, মাগুর, ল্যাটা, শোল মাছ। এর কি কোনও প্রতিকার নেই?

সঞ্জীব রাহা

কৃষ্ণনগর, নদিয়া

রক্তের উপাদান

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে বাংলায় আরও তিনটি ব্লাড ব্যাংকের সূচনা হল। একটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়াতে, অপরটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোপীবল্লভপুরে, এবং তৃতীয়টি মালদহ জেলার চাঁচলে। স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নত করার জন্য মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১১ অক্টোবর এই তিনটি ব্লাড ব্যাংকের শুভ উদ্বোধন করলেন। এগুলির প্রত্যেকটিই মাল্টি-সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের অংশ। নতুন তিনটিকে নিয়ে রাজ্য সরকার চালিত ব্লাড ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সত্তর, বেসরকারি ব্লাড ব্যাংক যোগ করে মোট সংখ্যা ১৩১।

রক্তের অপচয় রোধ করতে করতে সরকার আরও ৪টি প্লেটলেট সেপারেশন ইউনিট স্থাপন করেছে, যেগুলি অবস্থিত নদিয়া এবং আসানসোল জেলা হাসপাতালে, কোচবিহার এম জি এন হাসপাতাল ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সব মিলিয়ে রাজ্যে সরকারি হাসপাতালে রক্ত উপাদান পৃথগীকরণ ইউনিটের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৭টি। অনেক সময় দেখা যায়, রোগীর রক্তের সব উপাদানের দরকার হয় না, সে ক্ষেত্রে ডাক্তাররা রক্তের পৃথক পৃথক উপাদান, যেমন প্লাজমা, প্লেটলেট ইত্যাদির জন্য নির্দেশ দিয়ে থাকেন। এতে রক্তের অপচয়ও অনেক কম হয়।

রক্তের পৃথক পৃথক উপাদানগুলি সহজলভ্য করার দুটি প্রধান উপায় হল: নিয়মিত রক্তদান শিবির করা এবং সংগৃহীত রক্ত থেকে রক্তের উপাদানগুলি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পৃথক করা। সরকারি উদ্যোগে ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং ডাক্তারদের সহযোগিতায় বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়ে থাকে। এই উদ্যোগ যাতে আরও বড় হয় তার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রত্যেক সরকারি ব্লাড ব্যাংকে কত ইউনিট রক্ত এবং রক্তের উপাদান আছে, তা প্রতিনিয়ত ডিসপ্লে বোর্ডে উল্লেখ করতে হবে যাতে করে রক্ত সংগ্রহ করতে মানুষের সুবিধা হয়।

মেহেদি হাসান মোল্লা

বটতলী, গোসাবা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

দায় সকলের

‘বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি কটাক্ষ করছেন, ‘দমদমের মশা যতক্ষণ না কালীঘাটে এসে কামড়াচ্ছে, ততক্ষণ সরকারের হুঁশ ফিরবে না’ (‘ডেঙ্গি নিয়ে ভুল প্রচার, মত মমতার’, ১৩-১০)— এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতকে সামনে রেখে প্রথমেই বলব, সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, রাজ্যে ডেঙ্গি এখনও মহামারীর আকার ধারণ করেছে, এমন পরিস্থিতি দেখা দেয়নি— সরকারের এই তথ্য কতটা বেঠিক বা ঠিক, তা নিয়ে বিতর্ক থাকবে। কিন্তু যে পরিসরেই তা হয়ে থাকুক, তার মোকাবিলা করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সেখানে বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতিকেও সমান ভাবে সহযোগিতা করতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করছে, জীবাণুবাহী রোগের ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে প্রয়োজন জন-সচেতনতা। সচেতন প্রতিরোধই ডেঙ্গির হাত থেকে বাঁচার প্রাথমিক শর্ত। রাজ্যের ডেঙ্গি মোকাবিলার দায় অবশ্যই সরকারের। সেই সঙ্গে এই দায় আমার, আমাদেরও। বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি-সহ তাঁর দলের কর্মীরাই বা কেন সেই দায় বহনের ‘দায়টুকু’ নেবেন না?

আসলে রাজনৈতিক নেতাদের এই আচরণ দেখে গ্রামগঞ্জে কাটানো আমাদের শৈশবকালে আশ্বিনের প্রথম দিকে গ্রামীণ প্রভাতী এক মজাদার প্রথার কথা মনে পড়ে গেল। প্রথাটা ছিল এই রকম— কাকভোরে উঠে আগের রাতে মায়ের পুড়িয়ে রাখা কাঁচা তেঁতুলের সঙ্গে সর্ষের তেল মাখিয়ে সারা শরীরে মেখে, হাতে একটা ভাঙা কুলো নিয়ে পাশের বাড়ির ‘কানাচে’ গিয়ে কুলোটা জোরে জোরে বাজিয়ে সুর করে বলতে হত— আমাদের বাড়ির মশা-মাছি পাশের বাড়ির ঘরে যা যা-আ। তাতে মশামাছিরা সত্যি করেই পাশের বাড়িতে ঢুকে পড়ত কি না দেখিনি। তবে আজ এই সত্যিটা জেনেছি যে ডেঙ্গির উপদ্রবটা আশ্বিনেই বাড়ে। গ্রাম্য-লোকাচারের ওই ছোট্ট শিশু-গল্পটা আজও যে হারিয়ে যায়নি, রাজ্য বিজেপি নেতার মন্তব্যে সেটাই মনে পড়ল।

সংবাদদাতা আরও জানাচ্ছেন, ‘...এক কর্তার (স্বাস্থ্য দফতরের) কথায়’, ‘এই মুহূর্তে পরিস্থিতির গুরুত্ব স্বীকার করে মুখ্যমন্ত্রী যদি সবাইকে এক যোগে এর প্রতিরোধের জন্য সক্রিয় হতে বলতেন, তা হলে হয়তো ফলটা অনেক ভাল হত।’ নিঃসন্দেহে যুক্তিটার যথেষ্ট ধার আছে, তবে প্রশ্ন ওঠে, উক্ত কর্তার কি সেই দায় ছিল না? মুখ্যমন্ত্রীর কোনটা করলে ভাল হত, সেটা যদি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সমীপে বলতেন তা হলে ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজে সাহায্য হত।

সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ডেঙ্গি সচেতনতা শিবিরের এক সাফাই-অভিযানে প্রত্যক্ষ এক ভয়াবহ অভিজ্ঞাতা লাভ করা গেল। সাফাই কর্মীরা যখন ড্রেনের নোংরা জমা জল পরিষ্কার করছেন, তখন এক মহিলাকে ওই নর্দমার জলে নোংরা আবর্জনা ফেলে দিতে দেখে এক জন সাফাই কর্মী বললেন, ‘দিদি, নোংরাগুলো কাছে রাখা ভ্যাটে না ফেলে, এত ক্ষণ ধরে পরিষ্কার করা নর্দমায় বাড়ির নোংরা ফেলছেন কেন?’ এই কথা শুনে তিনি ‘রে রে’ করে বলে উঠলেন, ‘বেশ করেছি। আরও ফেলব। আর রোজ এসে তোরা এটা নিয়েও যাবি। ফেলতে মানা করছিস কোন মুখে রে? সরকারের কাছ থেকে বেতনটা নিস না বুঝি? বসে বসে কেবল টাকাটাই নিবি?’ বুঝুন ঠেলাটা! দায়; সব দায় ওই সরকার ব্যাটার।

তপন ভদ্র

হাবরা, উত্তর ২৪ পরগনা

দুর্ভোগের পথ

চৌত্রিশ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে বা উত্তরবঙ্গের দিক থেকে বহরমপুর হয়ে কলকাতা যেতে এখন দুর্ভোগের শেষ নেই। কিছু দিন হল আমি এখন মুর্শিদাবাদে মৎস্য দফতরের জেলা অফিসে কাজ করছি। দফতরের বিভিন্ন রকম সরকারি কাজের জন্য প্রায়ই মুর্শিদাবাদের ছাব্বিশটি ব্লকের কোনও একটি ব্লকে যেতে হয়। কখনও সরকারি গাড়িতে বা আবার কখনও নিজের ব্যবস্থাপনায় বা কখনও লাইনের বাসে। সময়ে পৌঁছনো বা সময় মতো ফিরে আসা দুঃসাধ্য ব্যাপার। অথচ এই রাস্তা দিয়েই কোনও ভিআইপি-র যাতায়াতের প্রোগ্রাম থাকলে রাস্তা যানজটমুক্ত হয়ে থাকে! সাধারণ মানুষের সময়ের কি কোনও মূল্য নেই? জাতীয় সড়ক চওড়া করার কাজের জন্যই হোক বা পঞ্চাননতলায় রেলের ওভারব্রিজ না থাকার জন্যই হোক বা ভাগীরথী নদীর উপর অপ্রশস্ত ব্রিজের জন্যই হোক, জনগণের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। এই ভোগান্তির শেষ যে কবে হবে সে বিষয়ে কোনও আশার বাণীও শোনা যাচ্ছে না।

সঞ্জয়কুমার মিশ্র

বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Letters To Editor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE