ব্লিচিং পাউডার
সাম্প্রতিক কালে মশা দমনে ব্লিচিং পাউডারের ব্যবহার বিষয়ে বিতর্ক হয়েছে। ব্লিচিং ছড়ানোর রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার সূত্রপাত যে ভাবেই হয়ে থাক, চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করাই কাম্য। সরাসরি পূর্ণাঙ্গ মশা প্রতিরোধে ব্লিচিং পাউডারের ভূমিকা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রমাণিত হয়নি এখনও। কিন্তু ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশার জীবনচক্রের বিভিন্ন ধাপ, যথা ডিম ও লার্ভার ওপর এর প্রভাব হাতেকলমে পরীক্ষা করেছেন বহু পতঙ্গবিদ। স্বীকৃত গবেষণাপত্রে এর উল্লেখও রয়েছে।
২০১৫ সালে মার্চ মাসে ‘জার্নাল অব দি আমেরিকান মসকিটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশন’ প্রকাশ করে এমনই একটি গবেষণাপত্র। ‘ইভলিউশন অব হাউসহোল্ড ব্লিচ অ্যাজ অ্যান ওভিসাইড ফর দ্য কন্ট্রোল অব এডিস ইজিপ্টাই।’ আরও আগে ২০০৪ সালে ডিসেম্বর মাসে উক্ত পত্রিকায় প্রকাশিত হয় আরও একটি গবেষণাপত্র: ‘দি ইউজ অব হাউসহোল্ড ব্লিচ টু কন্ট্রোল এডিস ইজিপ্টাই।’ বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, ব্লিচিং পাউডার কেবলমাত্র এডিস মশকীর ডিম নষ্টই করে না, সেই সঙ্গে তাকে ডিম পাড়তেও নিরুৎসাহও করে। সুতরাং ডেঙ্গির আবহে মশা নিয়ন্ত্রণের অন্যান্য উপায়গুলির পাশাপাশি ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর প্রয়াসকে উপহাস করে উড়িয়ে দেওয়া বৈজ্ঞানিক উদারতার পরিচায়ক হবে না। বরং এ নিয়ে গবেষণায় আরও উৎসাহ দেওয়াই বিচক্ষণতার কাজ হবে।
জয়শ্রী কোনার কলকাতা-১২
লক্ষ্যমাত্রা কেন
‘লক্ষ্যমাত্রা হয়নি, আটকাল বেতন’ (দক্ষিণবঙ্গ, ৮-১১) শীর্ষক সংবাদে প্রকাশ, একশো দিনের কাজে জেলাশাসকের বেঁধে দেওয়া পঞ্চায়েতপিছু দৈনিক ৪০০ শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় হুগলি জেলায় ২০০ চুক্তিভিত্তিক গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মীর বেতন আটকে দেওয়া হয়েছে।
আশ্চর্যের বিষয়, এম জি নারেগা (একশো দিনের কাজ) প্রকল্পে ‘টার্গেট’ নামের একটা অলিখিত বিষয় চালু হয়েছে। অথচ এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য, চাহিদা ভিত্তিক শ্রমদিবসের জোগান দেওয়া এবং সেই শ্রমদিবসকে কাজে লাগিয়ে এলাকায় সম্পদ সৃষ্টি করা। কিন্তু বর্তমানে তা পুরোপুরি উলটে গিয়ে চালু হয়েছে টার্গেট বেঁধে দিয়ে তা পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। আবার শ্রমদিবস তৈরিতে যেখানে এত প্রচেষ্টা, সেখানে সম্পদ তৈরির চেষ্টায় যথেষ্ট ঘাটতি। গত এগারো বছর ধরে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে প্রচুর মাটির রাস্তা, ড্রেন, পুকুর সংস্কার হয়েছে। যদিও সেগুলির অনেকই এখন খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ মাটির সম্পদ স্থায়ী নয়। সেই অজুহাতে একই পুকুর এবং ড্রেন বার বার সংস্কার দেখিয়ে শ্রমদিবস সৃষ্টির অভিযোগ অনেক। এমনকী ভুয়ো শ্রমিক দেখিয়ে তার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও বিরল নয়। শুধু জোর দেওয়া হয় বেশি শ্রমদিবসের উপর। আর এতেই ভুয়ো কাজ, ভুয়ো শ্রমদিবস, ভুয়ো সম্পদের সংখ্যা বাড়ছে। সম্ভবত তাতে লাগাম পরাতেই ব্যক্তিগত পুকুর বা ড্রেন সংস্কার এ বছর থেকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর ওখান থেকেই তৈরি হত শ্রমদিবসের সিংহভাগ। ফলে টান পড়েছে শ্রমদিবসে। চাপ আসছে প্রশাসনের উপর। ধাপে ধাপে তা নেমে আসছে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত। বলির পাঁঠা হচ্ছে পঞ্চায়েতের স্বল্প বেতনের কিছু চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী।
বর্তমানে একশো দিনের প্রকল্পে কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় ঢালাই রাস্তা তৈরির রমরমা বাজার চলছে। সবাই জানে এ কাজে মিক্সচার মেশিন আর দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন। ক’জন একশো দিনের প্রকল্পের শ্রমিক এ কাজ করতে পারেন? তবুও হচ্ছে। কী ভাবে হচ্ছে, তা যাঁরা করছেন আর যাঁরা করাচ্ছেন, তাঁরাই জানেন। তাই বেতন বন্ধ করার আগে সমস্যার গোড়ায় পৌঁছনো দরকার। দ্বিতীয়ত, টার্গেট বেঁধে না দিয়ে চাহিদাভিত্তিক শ্রমদিবস জোগান দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। তৃতীয়ত, সম্পদেরও খোঁজ নেওয়া প্রয়োজন।
কৃষ্ণা কারফা বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
‘আনস্টপেব্ল’
‘‘তাড়া করে ‘ধৃত’ ইঞ্জিন’’ শীর্ষক সংবাদ (১০-১১) পাঠে রোমাঞ্চিত হলাম। একটি খুলে রাখা ইঞ্জিন কর্নাটকের ওয়াডী জংশন থেকে চালকবিহীন অবস্থায় হঠাৎই চলতে শুরু করে। বাইকে প্রায় তেরো কিমি রাস্তা ধাওয়া করে এক ট্রেনচালক ইঞ্জিনটি থামাতে সক্ষম হন। এ প্রসঙ্গে ২০১০ সালে টনি স্কট প্রযোজিত ও নির্দেশিত, বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ‘আনস্টপেব্ল’ ছবির কথা মনে পড়ে গেল। এক চালকবিহীন মালগাড়ি শেষ পর্যন্ত থামাতে সক্ষম হয়েছিলেন এক ইঞ্জিনিয়র ও তাঁর সহকারী কনডাক্টর। প্রধান দুই চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন ড্যাঞ্জেল ওয়াশিংটন ও ক্রিশ পিনে। ছবিটি অস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিল। কানাডায় চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছিল ১২ নভেম্বর ২০১০। আশ্চর্য সমাপতন।
সরিৎশেখর দাস চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর
অরাজক অবস্থা
সম্প্রতি ফ্লাইটে মুম্বই যাওয়ার প্রয়োজন হয়। ফ্লাইট ধরার আগে সিকিয়োরিটি চেক পেরিয়ে ডিপারচার হলে অপেক্ষার সময় ২৪/২৫ নম্বর বোর্ডিং গেটের কাছের শৌচাগার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা পীড়াদায়ক। খালি সোপ ডিস্পেন্সার, মেঝের জায়গায় জায়গায় জল থইথই, উপচে পড়া ওয়েস্টবিন আর খালি টিস্যু ডিস্পেন্সার। বিভিন্ন জায়গাতে কাগজ, খাবার ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে। প্রায় দু’ঘণ্টা সময়ে ডিপারচার হল বা শৌচাগারের আশপাশে এক জনও সাফাই কর্মী নজরে আসেনি। শৌচাগারের ভিতর ‘ইন্সপেকশন-লিস্ট’টিতে শেষ সই আগের দিন দুপুরবেলার।
‘ব্যাগেজ ক্লেম’-এর কনভেয়র বেল্টের কাছের শৌচাগারের অবস্থাও আহামরি কিছু নয়। যাত্রীর তুলনায় শৌচাগারের সংখ্যাও কম। রাতে কলকাতা বিমানবন্দরের বাইরেও চূড়ান্ত অব্যবস্থা। প্রধান গেটগুলির ঠিক সামনেই যেমন ইচ্ছে প্রাইভেট গাড়ি দাঁড়িয়ে, সামনের রাস্তাতেও বিভিন্ন গাড়ির ঠেলাঠেলি আর তার সঙ্গে অহেতুক হর্ন। সব মিলিয়ে এক অনিয়ন্ত্রিত অরাজক অবস্থা। টাকা খরচ করে নানা উন্নতির কথা বললেও কলকাতা বিমানবন্দর পরিচ্ছন্নতা ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থার মাপকাঠিতে অনেক পিছিয়ে। প্রশাসনিক উদাসীনতাই এর প্রধান কারণ। দেশের অন্য প্রান্তে মুম্বই বিমানবন্দরে প্রতিটি শৌচাগার পরিষ্কার, সাফাই কর্মী সর্বক্ষণ মোতায়েন। এটাও কিন্তু ভারতবর্ষ।
শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা-৩৪
দুর্গন্ধের রাস্তা
মালদহ ইংরেজবাজার শহরের ৩২০ মোড়। অন্য দিকে মঙ্গলবাড়ির চৌরঙ্গি মোড়। এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গার পাশ দিয়েই চলে গেছে ৩৪ নং জাতীয় সড়ক। অভিযোগ, এই সড়কের ধারে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছে দোকানদারেরা। তাঁর উপর ৩২০ মোড়ের মুরগির ব্যবসায়ীরা যে মুরগি মজুত করেন, তা থেকেই নাকে ভেসে আসে অসহনীয় গন্ধ। মঙ্গলবাড়িতেও
একই হাল। এর ঢিলছোড়া দূরত্বেই রয়েছে গৌড় মহাবিদ্যালয়। কলেজ যাওয়ার পথে পড়ুয়াদের রাস্তাটি অতিক্রম করার সময় নাকে রুমাল চাপা দিতে হয়।
মঙ্গলচন্দ্র ঘোষ মালদা, গৌড় মহাবিদ্যালয়
ভ্রম সংশোধন
গত কাল (১৭-১১) এই পত্রিকার কিছু সংস্করণে ‘এক নজরে’ কলামে ‘ইন্দিরা স্মরণে’ শীর্ষক খবরে ‘প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী’ লেখা হয়েছে (পৃ ৫)। ঠিক তথ্যটি হবে ‘প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী’। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy