তাঁকে যদি শ্রদ্ধা করি
ভগিনী নিবেদিতার সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপিত হচ্ছে এ বছর। লন্ডনে তাঁর স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে কয়েক দিন আগে স্মৃতি-ফলক লাগানো হল। আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সেই উৎসবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন, খুব আনন্দের কথা। প্রসঙ্গত বলি, ১৮৯৮ সালে যে বছর নিবেদিতা ভারতে আসেন, সে বার প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। কলকাতাও বাদ যায়নি। ভগিনী নিবেদিতা নিজ হাতে ঝাড়ু নিয়ে কলকাতার রাস্তার জঞ্জাল সাফাই করেছিলেন। এক জন বিদেশিনি আর্ত, নিপীড়িত, পরাধীন ভারতবাসীর জন্য নিজের জীবন উত্সর্গ করেছিলন, নিবেদিত করেছিলেন পরার্থে।
সেই সময়ে না-হয় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, শিক্ষা উন্নত মানের ছিল না, কিন্তু এখন তা বলা যাবে না। তা হলে আমরা কি সেই তিমিরেই আছি? কলকাতা ও তার আশপাশে কেন এত আবর্জনা? আধুনিক শহরে এত গলদ, এত নোংরা কেন?
ডেঙ্গি যে ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, সেটা চিন্তার বিষয়। হয়তো আমার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতর একমত হবে না, তবুও চিকিত্সক হিসাবে কিছু বক্তব্য রাখব। কর্পোরেশন, মিউনিসিপালিটি, পঞ্চায়েত এলাকাগুলিকে ওয়ার্ডভিত্তিক কতকগুলি অঞ্চলে ভাগ করে সাময়িক ভাবে ক্যাম্প বসানো হোক। তা সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সেই অঞ্চলের লোকের জ্বর হলে সেখানে রিপোর্ট করবেন, ফ্রি প্যারাসিটামল দেওয়া হবে। দু’দিনের মধ্যে জ্বর না কমলে হাসপাতালে যাবেন। এতে দুটো সুবিধা— কত লোকের জ্বর হচ্ছে একটি রেকর্ড থাকবে এবং হাসপাতালের উপর চাপ কমবে। খুব অসুবিধা না হলে রক্তপরীক্ষার ব্যবস্থাও রাখা যেতে পারে।
ভগিনী নিবেদিতার সার্ধশতবর্ষে ঢাকঢোল পিটিয়ে কতকগুলি সেমিনার, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, নগর ভ্রমণে সীমিত না থেকে এলাকাগুলির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও দুঃস্থ লোকের জন্য কিছু কাজ করলে, তাঁকে যথার্থ ভাবে স্মরণ করা হবে, তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
অর্চনা ভট্টাচার্য, ক্রুকেড লেন, চুঁচুড়া, হুগলি
দার্জিলিং এখন
দার্জিলিং ঘুরে এলাম। ৫ রাত ছিলাম। ৬ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর। যাওয়ার আগে ভয় ভয় ছিল যে ঠিকঠাক ঘুরতে পারব তো? কোনও বিপদে পরব না তো? সব আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে বলতে পারি খুব ভাল ঘুরলাম। অসুবিধা তো দূরের কথা, খুবই সুবিধা হল বেড়াতে| আবহাওয়া অত্যন্ত মনোরম, ঝলমলে রোদ, আরামপ্রদ তাপমাত্রা। পর্যটকদের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের চমৎকার ব্যবহাaর। অধিকাংশ দোকান পাট খোলা কিন্তু ক্রেতা নেই। কিছু হোটেল এখনও বন্ধ। যে ক’টা হোটেল খোলা তাতে বোর্ডার নেই। আমরা যে হোটেলে ছিলাম সেখানে এক দিন দেখলাম আমরা ছাড়া কেউ নেই। স্থানীয় লোকেদের সঙ্গে কথা বলে যেটা বুঝলাম, তা হল তাঁরা কোনও বন্ধ চান না। রাজনীতিকদের একদম পছন্দ করে না। টুরিস্টদের কোনও অসুবিধা হোক তাঁরা চান না। গত বছর একই সময়ে দার্জিলিং গিয়েছিলাম। টুরিস্ট গিজ গিজ করছিল, আর এ বছরে একদম ফাঁকা। ওঁরা বলছেন বন্ধে অনেক ক্ষতি হয়েছে, আর বন্ধ চাই না।
সমীরবরণ সাহা, কলকাতা-৮১
বেড়াল কাটলে
নিরঞ্জন পাল (বেড়ালের রাস্তা কাটা’, সম্পাদক সমীপেষু, ১০-১১) বেড়াল রাস্তা কাটলে গাড়ি দাঁড়িয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চেয়েছেন। বেড়াল গৃহপালিত জীব। গৃহস্থের বাড়িতেই বেড়াল থাকে। সাধারণত বেড়ালকে রাস্তাঘাটে চরে বেড়াতে দেখা যায় না। এরা ঘরকুনো প্রকৃতির এবং ভিতু। কেউ তাড়া করলেই বেড়াল ছুটে পালাতে যায়। গাড়িচালক আশঙ্কা করতেই পারেন বেড়ালকে তাড়া করে পিছনে কেউ আসছে— সে মানুষ হোক অথবা কুকুর। এমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে গাড়ির চালক গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিতে পারেন। হয়তো বা অতীতে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে! এটা একটা কারণ হতে পারে।
আবার বেড়াল মা ষষ্ঠীর বাহন বলে পরিচিত। লোকবিশ্বাসে প্রচলিত আছে, মা ষষ্ঠী সন্তানসুখ দান করেন। বেড়াল আঘাত পেলে সন্তানের কিংবা পরিবারের অমঙ্গল হবে, এই ভাবনা থেকেও গাড়িচালক বেড়াল রাস্তা কেটে গেলে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিতে পারেন। কালো বেড়াল হলে তো আরও ভয়ানক!
তবে মূলত এগুলো সবই কুসংস্কার। এই সব ব্যাপার মন থেকে সরিয়ে ফেলা উচিত। যে কোনও প্রাণীই রাস্তা দিয়ে গেলে তাকে বাঁচাতে গাড়িচালক সাবধান হতেই পারেন। তা বলে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই।
চন্দন দাস, কলকাতা-৪৭
লন্ডনের ঐতিহ্য?
লন্ডনের অলিগলিতে তখন সবে গাড়ির আবির্ভাব! বেড়ালরা তখনও এবং এখনও তাড়া না খেলে দৌড়য় না। গাড়ি চলার রাস্তা দিয়ে হঠাৎ একটা বিড়াল ছুটে যাওয়া মানে কেউ ওকে তাড়া করেছে। হ্যাঁ, বিড়ালকে তাড়া করে বাচ্চারা গাড়ি চলার রাস্তায় চলে আসতে পারে বলে তখন সেই গাড়ির চালকরা গাড়ি থামিয়ে দিত। সেই থেকে হয়তো বেড়ালের রাস্তা কাটা নিয়ে বিশ্বাস তৈরি হয়েছে।
তপনকুমার বসাক, কলকাতা-৮
চাকরি তো নেই
এ রাজ্যে ৪৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ৪৫ লক্ষ প্রার্থী আবেদন করতে পারেন৷ কিন্তু যে ৪৪ লক্ষ ৫৫ হাজার প্রার্থী চাকরি পাবেন না তাঁদের ভবিষ্যৎ কী? এ রাজ্যে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প স্থাপনের যথেষ্ট সুযোগ আছে, কিন্তু ব্যবসায় বিমুখতার কারণে সেই সুযোগ বাঙালির হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে৷ তাই ৭৬ বছরের এক প্রবীণ নাগরিক হিসেবে বর্তমান রাজ্য সরকারকে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ, বাঙালিকে, বিশেষত মধ্যবিত্ত বাঙালিকে স্বাধীন ভাবে ব্যবসা করে স্বনির্ভর হওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে সাহায্য করুন৷
এটা তো অস্বীকার করে আর কোনও লাভ নেই যে, আজকের জমানায় সাধারণ মানের গ্র্যাজুয়েট বা পোস্টগ্র্যাজুয়েটদের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা যেমন নেই বললেই চলে, তেমনি আবার এদের মধ্যে ব্যবসা করার অনুকূল মানসিকতাও থাকে না৷ তা হলে উপায়টা কী? সাধারণ শিক্ষার অভিমুখটা বদলে দিয়ে সেটাক ‘কর্মমুখী’ করে দিতে হবে৷ শিক্ষক ও অভিভাবক উভয়েই ছাত্রের সঙ্গে পরামর্শ করে তার শিক্ষা গ্রহণ করার ক্ষমতা ও নিজস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী ঠিক করবেন যে, ছাত্রটি অষ্টম শ্রেণির পড়া শেষ করে বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা নেবে, না একাদশ শ্রেণির পড়া শেষ করে কোনও বৃত্তিমূলক শিক্ষা পেতে চেষ্টা করবে, না আরও উচ্চ শিক্ষা নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করবে৷
এ রাজ্যে এতগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ আছে, ম্যানেজমেন্ট পড়ানোর প্রতিষ্ঠান আছে, কারিগরি কাজ জানা দক্ষ শ্রমিক আছে৷ তা সত্ত্বেও এ রাজ্যে একের পর এক নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বা যাচ্ছে৷ অন্যান্য রাজ্য এর ফসল তুলছে৷ যেহেতু ব্যবসার মানসিকতা বাঙালির রক্তে নেই, তাই রাজ্য সরকার যদি এ ব্যাপারে সব রকমের উৎসাহ দেয়, তা হলে দেখা যাবে অনেক বাঙালি উদ্যোগপতি এগিয়ে আসছেন৷
সরোজ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-৩১
উল্টোরথ
একটা কথা কাগজে পড়েছি: ‘বাইরে বেড়াতে গিয়ে এ রাজ্যে অনেক মানুষ ডেঙ্গির ভাইরাস শরীরে বহন করে আনছেন।’ খবর পেলুম এর উল্টোটাও হচ্ছে। মেয়ে জানাল, আমেরিকায় ওর তিন দেশোয়ালি বন্ধু— দু’জন কলকাতার আর এক জন দিল্লির, পুজো-দেওয়ালি-ভাইফোঁটার ছুটি দেশে কাটিয়ে আমেরিকায় ফিরে ডেঙ্গির খপ্পরে পড়ে। তিন জনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে। আপাতত সুস্থ।
রানা মজুমদার, কলকাতা-৩৪
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy