Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

এই সব কিছুর মধ্য দিয়েই পরিবেশ বিষয়ে আমাদের প্রবল উদাসীনতা ফুটে ওঠে। গোটা ভারতকে এই বিষয়ে আত্মসমালোচনা করতে শিখতে হবে। তা না হলে, এক সময় শুধু বিদেশিদের নিন্দে থেকে মুখ লুকোবার জন্যই আমাদের মুখোশ-নাকোশ পরে ঘুরতে হবে! 

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

পরিবেশ দূষণ নিয়ে এত কথা হয়, কিন্তু আমাদের টনক যেন কিছুতেই নড়ে না। বহু গাড়ি থেকে ভীষণ কালো ধোঁয়া বের হয়, তার মধ্যে সরকারি গাড়ির সংখ্যা কিছু কম নয়, কিন্তু এদের কোনও শাস্তি হয় কি? বহু পাড়ায় এক একটা জায়গায় জঞ্জাল স্তূপ করে ফেলা থাকে, বার বার বলা সত্ত্বেও জঞ্জালের গাড়িতে না ফেলে অনেক লোক সেখানেই ময়লা ফেলে দেন। কোনও জন্তু মারা গেলে, বহু দিন সেই পচা দেহের গন্ধ পথচারী ও বাসিন্দাদের সহ্য করতে হয়। পুরুষদের যেখানে-সেখানে হালকা হওয়ার বিশ্রী অভ্যাস আর তার দরুণ যে দুর্গন্ধ ও দৃশ্যদূষণ হয় সে কথা না-ই বা বললাম।

সম্প্রতি দিল্লিতে দূষণের চোটে শ্রীলঙ্কার টেস্ট টিমের ক্রিকেটাররা নাকে একটি করে ‘নাকোশ’ আটকে খেললেন। তাই দেখে লজ্জিত হওয়া তো দূরের কথা, অনেকে তাঁদের নিন্দে করলেন, কেউ ব্যঙ্গ করলেন! অত্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকেরা বললেন, কোহালি যেখানে কোনও রকম মুখোশ না সেঁটে দু’দিন ব্যাট করতে পারলেন, সেখানে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা মুখোশ ছাড়া খেলতে পারলেন না কেন? পরে ভারতের খেলোয়াড় শামি যখন মাঠে বমি করে ফেললেন, তখন বোধহয় এঁরা লজ্জায় মুখ লুকোলেন। অনেকে এমনকী এই মুখোশ পরাটাকে শ্রীলঙ্কার কৌশল বলেও অভিহিত করেছেন, কোহালির তিনশো রান থামাবার জন্য নাকি তাঁরা এগুলো করছিলেন! যেখানে অতিথিদের অসুবিধার জন্য আমরা লজ্জিত হব এবং তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইব, সেখানে আমরা তাঁদের গাল দিয়ে ব্যাপারটা থেকে নিস্তার পেতে চাইছি!

এই সব কিছুর মধ্য দিয়েই পরিবেশ বিষয়ে আমাদের প্রবল উদাসীনতা ফুটে ওঠে। গোটা ভারতকে এই বিষয়ে আত্মসমালোচনা করতে শিখতে হবে। তা না হলে, এক সময় শুধু বিদেশিদের নিন্দে থেকে মুখ লুকোবার জন্যই আমাদের মুখোশ-নাকোশ পরে ঘুরতে হবে!

আশিস রাহা কলকাতা ৬৮

নিজেরাই বাদ

এই রাজ্যে বঞ্চনা এবং অবহেলার সেরা শিকার বোধহয় বহুমুখী স্বাস্থ্যকর্মী (পুরুষ) বা ইংরেজিতে মাল্টিপারপাস হেল্থ ওয়ার্কার (মেল)। ২০০৯-১০’এ ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম বা এনভিবিডিসিপি-র অধীনে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়ে পাশ করা প্রায় চারশো জনকে উক্ত পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয় পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ইত্যাদি জেলাতে। বিভিন্ন উপ-প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই এঁদের নিয়োগের কথা হলেও, আজ এঁরা বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও কাজ করে চলেছেন অন্য অনেক পদে। কেউ কেউ সুপারভাইজরের কাজও করছেন, কেউ বা করছেন ম্যালেরিয়া ইনস্পেক্টরের কাজ, আবার অনেকে ব্লকে ডেটা এন্ট্রি বা অ্যাকাউন্টের কাজটুকুও করে দিচ্ছেন। যাঁরা নিজেদের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করছেন, তাঁরা বিভিন্ন ব্লকের দূর থেকে দূরতম অঞ্চলে গিয়ে পরিষেবা দিচ্ছেন। কখনও লড়ছেন ম্যালেরিয়া, জাপানি এনসেফালাইটিস, ডেঙ্গির সঙ্গে, কখনও যক্ষ্মা, ডায়রিয়ার সঙ্গে। করছেন বিভিন্ন রকমের সার্ভে।

স্বাস্থ্য দফতরে কর্মরত সব অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি হলেও, কোনও অত্যাশ্চর্য কারণে, ২০১১ সালে মাত্র এক বার ছাড়া, এই হতভাগ্য কর্মচারীদের আর কক্ষনওই বেতন বৃদ্ধি হয়নি (তাঁদের ন্যূনতম যোগ্যতা বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ, অনেকেই মাস্টার ডিগ্রি প্রাপ্ত)। এঁরা অন্যান্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত। সব অস্থায়ী কর্মচারীদের ‘ইপিএফ’-এর আওতাভুক্ত করা হলেও, শুধু এঁদের হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প’-র মতো অত্যন্ত মানবিক একটি প্রকল্প থেকেও এঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে। জানতে ইচ্ছে করে, এঁরা কি মানুষ নয়? এঁদের কি স্বাস্থ্যের অবনতি হয় না? যাঁরা অন্যের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য পরিশ্রম করে চলেছেন, তাঁদের নিজেদের স্বাস্থ্যের অধিকার থেকে তাঁদের নিজেদের দফতর বঞ্চিত করছে?

নবনীতা রায় সাগরদিঘি, কোচবিহার

আগে জল

গত ১৯ নভেম্বর সারা পৃথিবী জুড়ে পালিত হল ইউনাইটেড নেশনস আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড টয়লেট ডে’। এই উপলক্ষে সারা দেশে সরকারি ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযান যেমন চলল, তেমন এই রাজ্যেও ‘নির্মল বাংলা’ নামে সাফাই কর্মসূচি সম্পন্ন হল। এই সব অভিযানের অঙ্গ হিসাবে বহু সুলভ শৌচালয় তৈরি হয়েছে, হচ্ছে। আনন্দের কথা। কিন্তু বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছি, মিডিয়াতে শৌচালয়ের দরজা বন্ধ করার কথা বার বার বলা হলেও, শৌচকর্মের জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত জল কোথা থেকে আসবে, সেই বিষয়ে কিছু বলা হচ্ছে না। অথচ পাকা বা স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগারের আবশ্যিক শর্ত হল, পরিষ্কার ও পর্যাপ্ত জল, যা ওই সব শৌচালয়ে আদৌ নেই, বা থাকলেও দু’চার দিনের মধ্যে তার জোগান-ব্যবস্থা বিকল হয়ে যায়। তাই অনুরোধ, শুধু ঝাঁ-চকচকে টয়লেট বানালেই চলবে না, সেখানে ওভার-হেড ট্যাঙ্কসহ পাম্প মোটরে জলের জোগান নিশ্চিত করুন। অন্যথায় সর্বক্ষণের হ্যান্ডপাম্প বা টিউব ওয়েল লাগাতে হবে শৌচাগার সংলগ্ন জমিতে। যেখানে নলকূপ বসানো সম্ভব নয়, সেখানে খাল বিল নদী থেকে পরিস্রুত জল এনে ঢাকা দেওয়া চৌবাচ্চায় রাখতে হবে। নইলে ‘টয়লেট ডে’ ব্যর্থ হতে বাধ্য।

সঞ্জীব রাহা পাডিয়া মার্কেট, কৃষ্ণনগর, নদিয়া

পরীক্ষাই ফেল

সম্পাদক সমীপেষু বিভাগে ‘ব্যাগ সমস্যা’ (১০-১০) এবং ‘পরীক্ষায় দুর্ভোগ’ (১-১১) চিঠি দুটি পড়ে এই লেখা। আমিও আর পাঁচটা সাধারণ যুবকের মতো এক জন চাকরি-প্রার্থী। এখন চাকরির পরীক্ষার সেন্টারগুলিতে আমাদের চরম হেনস্তা হতে হচ্ছে। গত ৩ অক্টোবর মাল্টি টাস্কিং নন-টেকনিক্যাল স্টাফ পদে নিয়োগের একটি পরীক্ষা ছিল। ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট কলেজে সিট পড়েছিল। তুমুল বৃষ্টির মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনের একমাত্র ছোট্ট চায়ের দোকানটি ছিল পরীক্ষার্থীদের মাথা গোঁজার অবলম্বন। মেন গেট থেকে বিল্ডিং অনেকটা ভিতরে, গেটে কর্মরত কর্মচারীরা বার বার আবেদন-নিবেদন সত্ত্বেও আমাদের ভিতরে ঢুকতে দিলেন না। পরীক্ষাকেন্দ্রটি নির্মীয়মাণ, লোহার রড কাটার মেশিনের ইলেকট্রিক তার জলের মধ্যে ডুবে ছিল, সেই জল পেরিয়েই পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে হচ্ছিল। তা থেকে যে কোনও রকমের বিপত্তি হতে পারত।

এখন বেশির ভাগ পরীক্ষাই খাতায় নয়, কম্পিউটারে হয়, এবং বলা হয় যাবতীয় ধাতব দ্রব্য (এর মধ্যে খুচরো পয়সা, হাতের আংটি, গলার চেন, বেল্টও পড়ে) নিজ দায়িত্বে ব্যাগে রাখতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষ সেই সব জমা রাখার দায়িত্ব নেন না, আবার ব্যাগগুলি রাখারও নির্দিষ্ট ও নিরাপদ জায়গা থাকে না। এক জায়গায় তো পরীক্ষার্থীদের জুতো খুলে খালি পায়ে হেঁটে পরীক্ষার ঘরে যেতে বলা হল। ঝাঁ-চকচকে কম্পিউটার-রুমগুলিকে বর্ষার জলে ভেজা পরীক্ষার্থীদের নোংরা পায়ের ছাপ থেকে বাঁচানোর জন্যই কি এই নিয়ম?

গৌরব পণ্ডিত কলকাতা-১৫২

ভোল বদল

‘পটি’ শব্দের অর্থ কী? জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের অভিধানে লেখা, ‘পটি’ শব্দের অর্থ ফালি, কাপড়বিশেষ। আর, ‘পটী’ মানে শ্রেণি, শাখা। অথচ শিক্ষিত বাঙালি পরিবারে ‘পটি’ বা ‘পটী’ অর্থে এখন শুধুই মলত্যাগ বোঝানো হয়। শব্দার্থটি বেমালুম বদলে গেল কেমন করে?

শিবাশিস দত্ত কলকাতা-৮৪

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE