Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশে এই মুহূর্তে বিচারব্যবস্থা মানুষের সবচেয়ে বড় আশ্রয়। সেই স্তম্ভেই যদি আঘাত লাগে, সাধারণ মানুষের বিচলিত হওয়া স্বাভাবিক।

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

আদালত তুমিও!

মূল প্রশ্নটা হল, ভারতের বিচারব্যবস্থা এমন জায়গায় এল কী করে, যেখানে শীর্ষ আদালতের চার প্রধান বিচারপতিকে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সুপ্রিম কোর্টের ভিতর হয়ে চলা ‘অনৈতিক’ কাণ্ডের কথা বলতে হচ্ছে?

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশে এই মুহূর্তে বিচারব্যবস্থা মানুষের সবচেয়ে বড় আশ্রয়। সেই স্তম্ভেই যদি আঘাত লাগে, সাধারণ মানুষের বিচলিত হওয়া স্বাভাবিক। এখন শীর্ষ আদালতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু মামলার শুনানি চলছে, যে মামলার রায়গুলি এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে অনেকাংশে। আধার কার্ডের আবশ্যিকতা, সবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার, সমকামী সম্পর্কের বৈধতা— এই সব বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কী বলে, তার উপর নির্ভর করবে, ভারত কোন দিকে যাবে। এবং অন্যান্য দেশই বা ভারত সম্পর্কে কী ভাববে। এই অবস্থায় শীর্ষ আদালতের অভ্যন্তরীণ গোলযোগ সামনে এলে, মানুষ বিভ্রান্ত হবেই।

বিচারক বি এইচ লোয়া-র মৃত্যু সংক্রান্ত মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে বিবাদটি সামনে এল, সেই মামলার শুনানিও চলছে এখন। বিচারক লোয়া-র মৃত্যুর ১৫ দিনের মধ্যেই সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলা থেকে অব্যাহতি পান বর্তমান বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। আর এর পরেই মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বাঁধে। একই ভাবে, মধ্যপ্রদেশে ব্যপম কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ও সাক্ষীদের একের পর এক অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়েও দেশবাসীর মনে অনেক প্রশ্ন এখনও রয়েছে। তার বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন, কিছু মামলা এখনও চলছে।

সুবিচারের আশায় মানুষ সর্বস্ব দিয়ে শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের দরজায় যায়, সম্পূর্ণ আস্থা আর বিশ্বাস নিয়ে। প্রবীণ বিচারকদের কাছে অারজি, সেই বিশ্বাসের ভিতটা নড়তে দেবেন না।

শুভ্রা চক্রবর্তী, হাও়ড়া-৩

তোষামোদ

সুগত বসুর সময়োপযোগী নিবন্ধ ‘আবার নতুন করে চর্চা শুরু হোক... ’ (২৯-১২) কিঞ্চিৎ ব্যতিক্রমী বক্তব্যে সমৃদ্ধ হলেও, ভবিষ্যৎ ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের প্রতি তাঁর আহ্বান/উপদেশে পাওয়া গেল শুধু সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের বর্তমান অসহিষ্ণু প্রতিক্রিয়ার খণ্ডিত প্রেক্ষিত। স্বাধীন দেশের সত্তর বছরের ইতিহাসে, ভোটের বাক্সে সাফল্য পাওয়ার জন্য বহু রাজনৈতিক দলই ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ দূরে ফেলে কিছু গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে আপস/তোষামোদ করেছে, সে উপাখ্যান অপরিস্ফুট রয়ে গেল। এখনকার অবস্থার জন্য বাকিদের যেন কোনও দায়দায়িত্ব নেই, বা ছিল না! যদিও তিনি অনেক পণ্ডিতের মতো বলেননি যে নেহরু যুগ (ধর্ম সম্পর্কে ঘোষিত অনীহা সত্ত্বেও যখন কোনও একটি সম্প্রদায়ের নরম মৌলবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে) ফিরিয়ে আনা উচিত, তবু তিনিও ‘...নরম হিন্দুত্বের মধ্যে যে ফাঁপা সুবিধেবাদ আছে, দৃঢ় হিন্দুত্বের অন্ধ রক্ষণশীলতার মতোই তা আমার কাছে ঘৃণ্য ও পরিত্যাজ্য’— এই বক্তব্যটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেন। তাঁর ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় কেন মনে হল না, যে, তাঁর এই অনুভূতি অন্য ধর্মবাদীদের ক্ষেত্রেও সমান প্রযোজ্য? অর্থাৎ, প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ গঠনের জন্য সব ধর্মীয় মৌলবাদ— নরম কিংবা উগ্র, সমান ঘৃণ্য ও পরিত্যাজ্য। আর ‘অন্ধ রক্ষণশীলতা’ প্রসঙ্গে ইতিহাসের সাক্ষ্য কিন্তু এই, যে, হিন্দু ধর্ম তুলনামূলক ভাবে অনেক কম রেজিমেন্টেড। এই ধর্মের এই বাংলার এক পূজারি ব্রাহ্মণ তাই বিশ্বমানবতাবাদে নিজের বিশ্বাস সহজ-সরল ভাষায় দ্বিধাহীন ভাবে প্রকাশ করেন এই বলে— যত মত তত পথ।

আবার এই সত্য বিস্মৃত হলে ভূল হবে, ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়েছিল কেবলমাত্র ধর্মীয় দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে— অন্য কোনও আদর্শগত কারণে নয়; এবং নতুন রাষ্ট্রের জন্মের সঙ্গে বহু মানুষের ভিটেমাটি স্বজন সম্ভ্রম হারানোর চোখের জল মিশে ছিল। ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র পাকিস্তানের পাশে, এ দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করা হল, যদিও তার পর রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় অনেক ক্ষেত্রে অন্যায় দাবির প্রতি অতিরিক্ত সহনশীলতায় এক দিকে এক ধরনের মৌলবাদ প্রশ্রয় লাভ করল, অন্য দিকে সুপ্ত ক্ষোভ বিভাজনের বীজ বপন করল।

এও সত্য যে ভারতের কোনও যথার্থ ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেই। দু’দিকের সীমানার ও-পারে অন্তত দুটি প্রতিবেশী ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বারংবার নিপীড়নের ঘটনা এবং সেখান থেকে এ দেশে নিয়মিত অবৈধ অনুপ্রবেশ— এ দেশের জনমানসে অবিশ্বাস ও বিরূপতার বীজ বপনে অনুঘটকের ভূমিকা নেয়। অন্য দিকে এক ধর্মীয় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী বিশেষ এক ধর্মসাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের প্রাণ হরণ করছে, গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদী সমাজবিশিষ্ট ভারতও আজ তাদের লক্ষ্যবস্তু। তাদের কাজের সাফাই হিসাবে এই ধর্মীয় চরমপন্থাকেও একটা প্রতিক্রিয়া হিসেবে উপস্থাপন এবং এমনকী এই মৌলবাদকে প্রকারান্তরে সমর্থন, বিরূপতার জন্ম দেয়।

সুগতবাবু যে দলের সাংসদ, সেই দল সগর্বে ঘোষণা করেছে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে তোষণের কথা (সেই সম্প্রদায়কে ়আধুনিক শিক্ষার আলোয় এনে প্রকৃত উন্নয়ন ঘটানোর সদিচ্ছা প্রকাশ করেনি)। ওই সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতাদের বিশেষ ভাতার ব্যবস্থার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ— কী ভাবে সমাজে লেখক-উল্লেখিত ‘রাষ্ট্রবাদী আদর্শমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষতার মূল্যবোধ’ চর্চায় সহায়ক হবে?

রত্না রায়, কলকাতা-৪৭

হেস্টিংস-ভ্রান্তি

‘দ্বীপের নাম গঙ্গাসাগর’ (রবিবাসরীয়, ১৪-১) শীর্ষক লেখায় বলা হয়েছে, ওয়ারেন হেস্টিংসই সাগর তীর্থের আসল প্রাণপুরুষ! তিনিই প্রথম ওখানে বসতি করার জন্য ১৮১৯-এ ত্রিশ হাজার টাকা অনুমোদন করেন। তথ্যটি ঠিক নয়। সে সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন ফ্রান্সিস রডন হেস্টিংস, লর্ড ময়রা নামে সমধিক পরিচিত। তাঁর সময়কাল ১৮১৩-১৮২৩। আর ওয়ারেন হেস্টিংস-এর গভর্নর জেনারেল থাকার সময়কাল ১৭৭৪-১৭৮৫। দু’জনের নামেই হেস্টিংস যুক্ত থাকায় হয়তো এই বিপত্তি।

প্রলয় চক্রবর্তী, কলকাতা-১২৪

ঋদ্ধিমান

উইকেটরক্ষক নির্বাচনের অভিনব মানদণ্ড আবিষ্কার করলেন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট! কেউ প্রথম এশিয়ান উইকেটরক্ষক হিসাবে এক টেস্টে দশটা ক্যাচ নিয়ে উজ্জ্বল রেকর্ড গড়লেও, পরবর্তী টেস্টেই তিনি দল থেকে বাদ! কারণ? ব্যাট হাতে ‘সুপারস্টার’রা সমবেত ভাবে ব্যর্থ হতেই পারেন, কিন্তু উইকেটরক্ষক ব্যাট হাতে একটা টেস্টেও ব্যর্থ হলে, ‘ক্ষমাহীন অপরাধ’! আর ঋদ্ধিমান ঠিক কখন ‘আহত’ হয়ে পড়লেন? টেস্টের দিন সকালে প্রথম একাদশ ঘোষণার ঠিক আগে! ভারতীয় ক্রিকেটের জন্মলগ্ন থেকে যে বাঙালি-বিদ্বেষের ‘ঐতিহ্য’(মন্টু-সুঁটে-সুব্রত বন্দোপাধ্যায় থেকে গোপাল বসু-শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়-উৎপল চট্টোপাধ্যায় হয়ে শিবশঙ্কর পাল-রণদেব বসু-অশোক ডিন্ডা), তারই গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না তো?

কাজল চট্টোপাধ্যায়, সোদপুর

ভ্রম সংশোধন

উত্তরবঙ্গের কিছু সংস্করণের (১৮-১, পৃ ১১) ‘কাজ হলেও বাইপাস নিয়ে উদ্বেগ কাটেনি’ শীর্ষক খবরে অনবধানতায় পুরনো খবর প্রকাশিত হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE