Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: মহিলা উপাচার্য

বিশ্বকবির প্রয়াণের পর উপাচার্য হন তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রথীন্দ্রনাথ আকস্মিক দেহরাদূনে প্রয়াত হন।

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০০:২৮
Share: Save:

মাননীয় সবুজকলি সেন বিশ্বভারতীর প্রথম মহিলা উপাচার্য নিযুক্ত হয়েছেন বলে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রে প্রচারিত হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। বিশ্বকবির প্রয়াণের পর উপাচার্য হন তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রথীন্দ্রনাথ আকস্মিক দেহরাদূনে প্রয়াত হন। তার পর বিশ্বভারতীর প্রথম মহিলা উপাচার্য হন বিশ্বকবির মেজদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কন্যা ইন্দিরা দেবীচৌধুরাণী (ছবিতে), ‘সবুজপত্র’খ্যাত প্রমথ চৌধুরীর স্ত্রী।

দিলীপকুমার পাল প্রাক্তন সম্পাদক, বিশ্বভারতী কর্মিপরিষদ

হিন্দির দাবি

‘‘পনির, হিন্দি এবং ‘জয় ভারত’’(১-৩) নিবন্ধে লেখা হয়েছে, ‘পনেরো বছর পর ইংরেজি তুলে দিয়ে শুধুই হিন্দি রাখার প্রস্তাব হয়। সেটা মানেননি অহিন্দিভাষীরা। প্রবল বিরোধিতায় সরব হয় তামিলনাড়ু।’ এই প্রসঙ্গে বলি— ২৬ জানুয়ারি ১৯৬৫-র ঠিক আগে আগেই উগ্র হিন্দিপ্রেমীদের বক্তব্য ছিল, ইংরেজির দিন শেষ। হিন্দিই হবে সারা ভারতের ভাষা। তামিলনাড়ু তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তখন পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছিল যে দক্ষিণ ভারতে কংগ্রেসের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার মুখে। সে-সময় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বাঙালি সদস্য অতুল্য ঘোষের দৌত্যে দক্ষিণ ভারতের কামরাজ, সঞ্জীব রেড্ডি ও নিজলিঙ্গাপ্পার বৈঠক হয়। পরে হিন্দিভাষী প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর আকাশবাণীর মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে ভাষানীতি ঘোষণা করেন। ফলে সে-যাত্রায় রক্ষা পায় বিপন্ন জাতীয় সংহতি।

নন্দগোপাল পাত্র সটিলাপুর, পূর্ব মেদিনীপুর

‘সন্মান’ হবে না

জ্যোতি চক্রবর্তী (‘সন্মান’ হয়, ৯-৩) হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ থেকে উদাহরণ দিয়ে বলেছেন ‘সম্মান’ ও ‘সন্মান’ সমার্থক। সমার্থক হলেও ব্যবহারের দিক থেকে ‘সন্মান’ শুদ্ধ নয় বলেই মনে হয়। বঙ্গীয় শব্দকোষেই আছে,‘সন্মান’ হিন্দি, মরাঠি ও গুজরাতি ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ, যেখানে ‘সম্মান’ সংস্কৃতজাত। বাংলা সরাসরি সংস্কৃত থেকে না জন্মালেও, তা থেকে প্রাকৃত, অবহট্ঠরূপ বিবর্তনের মধ্য দিয়েই বাংলার জন্ম। তাই আমাদের বাংলা শব্দব্যবহারে ‘সম্মান’-ই মান্যতা পেয়ে আসছে।

বিপ্লব বিশ্বাস কলকাতা-৫৯

হরণ ও আহরণ

‘কুম্ভীলক’ (১১-৩) শীর্ষক চিঠিতে লেখা হয়েছে, এডগার অ্যালেন পো-র ‘টু হেলেন’ কবিতাটির সঙ্গে জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’-এর মিল আছে। পো-র উক্ত কবিতাটির দ্বিতীয় পঙ‌্‌ক্তি পূর্ববর্তী কবি কোলরিজের ‘ইয়ুথ অ্যান্ড এজ’ কবিতার একটি পঙ্‌ক্তি থেকে অনুপ্রাণিত। গবেষকগণ খুঁজে দেখতে পারেন, কোলরিজ কার দ্বারা অনুপ্রাণিত।

জীবনানন্দের কবিতায় এক বিশেষ ধরনের রূপক অর্থাৎ সুদূরগত সাদৃশ্য দেখা যায়, যাকে ইংরেজিতে কনসিট বলা হয়। কবিতায় এই জাতীয় রূপকের উদ্ভাবন করেন ষোড়শ শতকের কবি জন ডান। অতএব জীবনানন্দকে জন ডানের দ্বার অনুপ্রাণিত বলা যায়। গবেষকরা প্রমাণ করেছেন যে জন ডান এ-ক্ষেত্রে চতুর্দশ শতকের ইতালীয় কবি ফ্রানসেসকো পেত্রার্ক দ্বারা অনুপ্রাণিত।

আসলে পূর্ববর্তী লেখকের লেখা পরবর্তী লেখকগণ ‘ট্র্যাডিশন’ হিসাবে পড়ে থাকেন। তাঁদের স্মৃতির মধ্যে সেই সব লেখা জাগরূক থাকে। তাই এক লেখকের লেখায় যখন তাঁর পূর্ববর্তী লেখকের ছাপ দেখা যায়, তখন তাকে হরণ মনে না করে, আহরণ বললেই বোধহয় ঠিক হয়।

শ্রীশঙ্কর ভট্টাচার্য কলকাতা-৩৯

মাতৃভাষা

স্কুলের পড়াশোনা মাতৃভাষাতেই ভাল হয়। বিদেশি যে-কোনও ভাষার তুলনায়, নিজের ভাষায় শেখার অভ্যাস উঁচু ক্লাসে এমনকী দ্বিতীয় ভাষাকেও আয়ত্ত করতে সাহায্য করে। কোনও একটি ভাষায় ভাল করে পড়া আর লেখার অভ্যাস তৈরি হয়ে গেলে সেটা অন্য ভাষাকে দ্রুত আয়ত্তে আনতে কাজে লাগে। আমরা ভাবি ‘লার্নিং’ ব্যাপারটা স্কুলেই শুরু হয়। পড়ুয়া যা কিছু শেখে, সব স্কুলই তাকে শেখায়। যা শেখে না, তাও স্কুল শেখায়
না বলেই শেখে না। ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়।

শিশুর শেখার শুরু তার বাড়িতে, তার বাবা, মা, আত্মীয়দের কাছে, তার পরিবেশে। যে-ভাষায় সে বাড়িতে কথা বলে, অন্যদের বলতে শোনে, সেটাই তার শেখার সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম। স্কুলে গিয়ে, সে সেই অভিজ্ঞতা-নির্ভর শেখার পদ্ধতিটাকেই চালিয়ে নিয়ে যায়। মাতৃভাষার ভূমিকা এখানে প্রধান। অভিজ্ঞতা আর ‘লার্নিং’-এর মাঝে মাতৃভাষার সেতুই তাই সবচেয়ে ভরসার।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিজের ভাষায় একটি বর্ণ থেকে একটি ধ্বনি শিখতে হয়। যেমন ‘ম’ বর্ণ ও ‘আ’ শিখলে ‘মা’ শেখা হয়। দ্বিতীয় ভাষার শিক্ষায় পড়ুয়ার কাজটা এর চেয়ে সহজ হয়ে যায়। কারণ, সে তখন আর বর্ণ থেকে ধ্বনিতে যায় না। কোনও একটি ধ্বনি উচ্চারণ করতে তার কী কী বর্ণ লাগবে, তখন সেটাই তাকে জানতে হবে। সে সহজেই তাই MA অথবা MAA লিখবে। কার্যত সে-ভাবেই রোমান হরফে বাংলা এসএমএস আমরা লিখি। এটা কি আমাদের আলাদা করে শেখাতে হচ্ছে, না বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়ারা এতে পিছিয়ে?

চার দিকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বাড়বাড়ন্ত। সেখানে সন্তানদের ভর্তি করার সামাজিক চাপ আছে, সেটা বাড়ছেও। তাই বলে বাংলা মাধ্যম স্কুল হাত গুটিয়ে বসে থাকবে? বামফ্রন্টের যে সময়ে ইংরেজি তুলে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল, তখন কিন্তু বাংলা মাধ্যম স্কুলে বাংলা শেখানোর জন্য কোনও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেটা নিলে আজ হয়তো মানুষ এতটা প্রতারিত বোধ করতেন না। বাংলা সাহিত্য, ব্যাকরণ সহজ করে তুলে ধরার কোনও কাজই হয়নি। মাইকেল মধুসূদন দত্ত-র বাংলা পড়ে যদি বিতৃষ্ণা জন্মায়, তাতে স্কুল-পড়ুয়াকে দোষ দেওয়া যায় কি? বিজ্ঞান ইতিহাস ভূগোল বইয়ের বিষয়ে ও বিন্যাসে যে আধুনিকতা ও স্মার্টনেস থাকা দরকার, তা কোথায়? এগুলি না দিয়েও আমরা কী ভাবে অজুহাত খাড়া করতে পারি যে, ইংরেজির দাপটে বাংলার বিপদ বাড়ছে? বাংলাকে সামনে রেখে লড়াই করতে হলে, বাঙালিকে সারা পৃথিবীর সঙ্গে জুঝতে হবে। লড়তে হবে গুগ্‌লের সঙ্গে। সেখানে আবেগকে অস্ত্র করে বেশি দূর যাওয়া যাবে না। ছাত্রস্বল্পতায় শহরের স্কুল উঠে গেলেও মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ১১ লক্ষের বেশি ছাত্রছাত্রী। তারা বাংলা ভাষাটাকে নিয়েই বেঁচে আছে। তাদের দিকে তাকিয়ে আমাদের এগনোর কথা ভাবা দরকার। মোমবাতি জ্বালানোর সময় এটা নয়।

অরণ্যজিৎ সামন্ত কলকাতা-৩৬

একটা ‘এস’

‘সেফ ড্রাইভ’? (১৬-৩) চিঠিটি প্রসঙ্গে লিখি, সেভ লাইফ-এ সেভ-এর পর একটা ‘এস’ যোগ করলেই বাক্যটি চমৎকার মানে পেয়ে যাবে। সেফ ড্রাইভ সেভস লাইফ।

সুশীল সাহা ই-মেল মারফত

নিবেদিতার নাম

প্রায় সকলেই জানেন, এমনকী বহু সংবাদপত্র ও পত্রিকাতেও লেখা হয়, ভগিনী নিবেদিতার প্রকৃত নাম ছিল: মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল। এই ‘নোবেল’টি ভুল। তাঁর নাম ছিল Margaret Elizabeth Noble. অর্থাৎ, নামের শেষ শব্দটি ‘নোব্‌ল’, কখনওই নোবেল নয়।

অমিয়কুমার মাইতি সুতাহাটা, পূর্ব মেদিনীপুর

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE