Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

লন্ডন ডায়েরি

ইংল্যান্ডে গানে, কবিতায় অমর হয়ে আছে নাইটিংগেল। হ্যাম্পস্টেডে এক পাব-এ বসে জন কিট্‌স ‘ওড টু আ নাইটিংগেল’ লিখেছিলেন। ডেম ভেরা লিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন্যদের শুনিয়েছিলেন গান ‘আ নাইটিংগেল স্যাং ইন বার্কলে স্কোয়্যার’।

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৫৫
Share: Save:

নাইটিংগেল আর স্যামের কনসার্ট

ইংল্যান্ডে গানে, কবিতায় অমর হয়ে আছে নাইটিংগেল। হ্যাম্পস্টেডে এক পাব-এ বসে জন কিট্‌স ‘ওড টু আ নাইটিংগেল’ লিখেছিলেন। ডেম ভেরা লিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন্যদের শুনিয়েছিলেন গান ‘আ নাইটিংগেল স্যাং ইন বার্কলে স্কোয়্যার’। তাই ভাল লাগল, যখন শুনলাম, স্যাম লি কনসার্ট শুরু করেছেন এই পাখিদের নিয়েই। স্যামকে প্রথম শুনেছিলাম বিবিসি রেডিয়োতে। এক সাউন্ড রেকর্ডিস্টকে নিয়ে তিনি বনে গিয়েছিলেন, রাত নামতে স্যাম তাঁর নরম, উষ্ণ কণ্ঠে নাইটিংগেলদের সুরেই শিস দিয়ে উঠলেন। পাখিও উত্তর দিল সুরে সুরে।

বার্ড-ম্যান: স্যাম লি’র হাতে নাইটিংগেলের ছবি

সেই নাইটিংগেল-প্রীতিই স্যাম এ বার নিয়ে আসতে চান জনসমক্ষে। ‘মারকিউরি প্রাইজ’-এর জন্য মনোনীত লোকগায়ক স্যাম কনসার্ট করেন কয়েকটা বাছাই জঙ্গলে। ছোট্ট একটা দল রাতে ওঁর সঙ্গে যান সেখানে, শোনেন স্যাম আর নাইটিংগেলদের অনন্য মেহফিল। সম্প্রতি এক রাতে সুযোগ হয়েছিল স্যামের কনসার্ট শোনার। ‘ফিংরিংহো উইক’ নাইটিংগেলের জন্য বিখ্যাত, সেখানে। রাত সাড়ে দশটার পর অন্ধকারে বনের মধ্যে হেঁটে গেলাম, নুড়ি, বালি, ঝোপঝাড় পেরিয়ে। তার পরেই হঠাৎ শুনতে পেলাম ওদের মায়াবী সুর। তারাভরা আকাশের তলায়, একটা গাছে প্রায় ত্রিশটা নাইটিংগেল গান গাইছিল। স্যামও যোগ দিলেন ওদের সঙ্গে, গাইলেন। ভোরের আলো ফুটতে ফিরলাম, এক অনন্য অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে। মে মাস অবধি দক্ষিণ ইংল্যান্ডের বনে চলবে স্যামের কনসার্ট।

নিলামে স্যামন

বাঙালির যেমন ইলিশ, স্কটদের তেমনই স্যামন। এখনও পর্যন্ত ছিপ-বঁড়শি দিয়ে সবচেয়ে বড় স্যামন ধরার রেকর্ড জর্জিনা ব্যালান্টাইন-এর। টে নদীতে ১৯২২ সালে তিনি মাছটা ধরে, দু’ঘণ্টার চেষ্টায় ডাঙায় তুলতে পেরেছিলেন। মাছটা ছিল ১ মিটার ৩৭ সেন্টিমিটার লম্বা, ওজন ২৯ কিলো! প্লাস্টারের একটা ছাঁচ করে রেখে দেওয়া হয়েছিল তার। সেই ছাঁচের একটা ফাইবারগ্লাস প্রতিরূপ নিলামে উঠছে এডিনবরায়। ৫০০০ পাউন্ড দাম উঠতে পারে, মনে করা হচ্ছে।

ভোল বদল

ব্রিটিশ মিউজিয়মের নতুন ডিরেক্টর হার্টউইগ ফিশার ঠিক করেছেন, ব্রিটেনের জনপ্রিয় এই মিউজিয়মে বেশ কয়েকটা বড়সড় বদল আনবেন। ১৮৬৬ সালের পর ফিশারই ব্রিটিশ মিউজিয়মের প্রথম বিদেশি ডিরেক্টর। প্রতি বছর প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ মিউজিয়ম দেখতে আসেন। ফিশার চান মিশরীয় মমিদের উপরের গ্যালারি থেকে সরিয়ে নীচের বিরাট হলঘরে অন্যান্য মিশরীয় স্থাপত্যকর্মের সঙ্গে রাখতে। বিখ্যাত ‘রিডিং রুম’টাও নতুন করে সাজাতে চান। চার্লস ডিকেন্স যে ডেস্কে বসে শেক্সপিয়র পড়তেন, বা কার্ল মার্ক্স যে ডেস্কে ‘দাস ক্যাপিটাল’ লিখেছিলেন, সেটা কোথায় রাখবেন, ভাবছেন।

প্রদর্শনীর বাইরে

অগোচর: ঘণ্টাকে ঘিরে আইভরির ফ্রেম

রানি এলিজাবেথ নরফোক-এর সান্ড্রিংহামে তাঁর গ্রামের বাড়ির এস্টেটে আয়োজিত এক প্রদর্শনী থেকে একটা জিনিস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে বস্তুটা নিয়ে এত চর্চা, সেটা একটা প্রাচীন ও বহুমূল্য ঘণ্টা, দু’পাশে বিরাট বড় দুটো হাতির দাঁত দিয়ে ফ্রেম করা। ১৪০ বছর আগে, রানির প্রপিতামহ, ‘প্রিন্স অব ওয়েলস’ ষষ্ঠ এডওয়ার্ড ভারত সফরে এলে ওই ঘণ্টাটা তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতালাভের সত্তর বছর পূর্তি উপলক্ষে সান্ড্রিংহামের এই প্রদর্শনীতে ঘণ্টাটি রাখা হয়েছিল। আইভরি-বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ‘কন্ট্রোল অব ট্রেড ইন এনডেঞ্জার্ড স্পিশিস অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, নির্দিষ্ট গড়ন বা আকার দেওয়া হয়নি এমন আইভরির বাণিজ্যিক প্রদর্শন নিষিদ্ধ। আইনভঙ্গের শাস্তি দু’বছরের কারাবাস, সঙ্গে বিশাল জরিমানাও। সঙ্গত কারণেই ঘণ্টাটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রদর্শনী থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ode to a Nightingale
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE