Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

লন্ডন ডায়েরি

উদ্বোধন করতে ফেব্রুয়ারি মাসে আসার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের, অনুষ্ঠান বাতিল। কারণ দেখানো হচ্ছে, আগের পাড়াটা যেমন ছিল, ভক্সহল তত কেতাদুরস্ত নয়।

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:০০
Share: Save:

নতুন দূতাবাস, কিন্তু প্রেসিডেন্ট কোথায়

গ্রোভনর স্কোয়ার-এর মার্কিন দূতাবাসের সামনে সত্তরের দশকে ভিয়েতনাম-বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছিল, ২০০৩-এ ইরাক যুদ্ধের সময়ও হয়েছিল আন্দোলন। রকস্টার, লেখক, ছাত্রছাত্রী, সবাই এসেছিলেন, ‘গ্রোভনর স্কোয়ার চলো’ হয়ে উঠেছিল সত্তরের দশকের প্রিয় স্লোগান। মার্কিন দূতাবাস সম্প্রতি গ্রোভনর স্কোয়ারের অফিস বন্ধ করে, উঠে গিয়েছে টেমসের দক্ষিণে ভক্সহল-এর নাইন এল্‌মস ঠিকানায়। উদ্বোধন করতে ফেব্রুয়ারি মাসে আসার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের, অনুষ্ঠান বাতিল। কারণ দেখানো হচ্ছে, আগের পাড়াটা যেমন ছিল, ভক্সহল তত কেতাদুরস্ত নয়।

ঠিকানা: লন্ডনের নাইন এল্‌মস-এ মার্কিন দূতাবাস কার্যালয়

আসলে ট্রাম্পের আশঙ্কা, তিনি লন্ডনে এলে ব্যাপক বিক্ষোভ হবে। দূতাবাসের আরও বড় জায়গা, ভাল পরিকাঠামো ও নিরাপত্তার প্রয়োজন ছিল, তাই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া। নাইন এল্‌মস-এর এই বাড়িকে বলা হচ্ছে সবচেয়ে সুরক্ষিত, হাই-টেক, পরিবেশবান্ধব দূতাবাসের একটা। তবু, তার তো গ্রোভনর-এর মতো ইতিহাস নেই! নতুন দূতাবাসের সামনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মোমমূর্তি আছে, মাদাম তুসো-র তরফে বানিয়ে দেওয়া!

‘এম’ মানে মজা

জেমস বন্ড ছবিগুলোতে ‘এম’-এর চরিত্রে অভিনয় করা জুডি ডেঞ্চ সম্প্রতি জানালেন, ছবির ব্রিটিশ গুপ্তচর সংস্থা যতই চোখ-ধাঁধানো গ্যাজেটের কারিকুরি দেখাক না কেন, আসল ‘এমআই-সিক্স’ সংস্থা দক্ষিণ লন্ডনের সারে-তে তাঁর বাড়িই খুঁজে পায়নি! ৮৩ বছর বয়সি জুডি পনেরো বছরে আটটা ছবিতে ‘এম’-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। অভিনয়জীবনের ৬০ বছর পূর্তিতে এক সাক্ষাৎকারে বললেন, ১৯৯০-এর দশকে এক দিন তাঁকে এমআই-সিক্স’এর অফিসে ডাকা হয়। বলা হয়েছিল, ওঁর বাড়িতে গাড়ি পাঠানো হবে, জুডির ড্রাইভার যদি অফিসটা খুঁজে না পান! জুডি বলেছিলেন, আরে, টেমসের ধারে অফিসটা কে না চেনে, সব বন্ড-ছবিতেই তো দেখানো হয়! মজার ব্যাপার, এম-আই’এর পাঠানো গাড়িচালক জুডির বাড়ি খুঁজে পাননি, ওঁর পৌঁছতে তাই আধ ঘণ্টা দেরি হয়ে গিয়েছিল! জুডি মজা করে সংস্থার প্রধানকে বলেছিলেন সে কথা।

বিস্কুটের টিনে কোহিনুর

টাওয়ার অব লন্ডন-এ রাখা আছে ব্রিটেনের রাজপরিবারের সব মণিরত্ন— রুবি, এমারেল্ড, হীরে, কোহিনুরও। সম্প্রতি জানা গেল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি হানার আশঙ্কায় রাজা ষষ্ঠ জর্জ ‘ক্রাউন জুয়েল’গুলো একটা বিস্কুটের টিনে ভরে উইন্ডসর কাসল-এ মাটির নীচে লুকিয়ে রাখতে বলেছিলেন। উইন্ডসরের গ্রন্থাগারিক মাটিতে পুঁতেছিলেন টিনটা, উপরে ঘাসও গজানো হয়েছিল যাতে সন্দেহ না জাগে। এত দিন ভাবা হত, যুদ্ধের আবহে ওগুলো কানাডায় বা ডেভন-এ লুকিয়ে ফেলা হয়েছিল, স্বয়ং রানিও নাকি জানতেন না ঠিক কোথায়। বিবিসির তথ্যচিত্র ‘করোনেশন’-এ এক সাক্ষাৎকারে রানি এ বার সত্যটা জেনেছেন। শুনে মন্তব্য করেছেন, ‘ভাগ্যিস সেই গ্রন্থাগারিক লুকনোর জায়গাটা নিজে মনে রেখেছিল! ও নিজেও তো যুদ্ধের মাঝ পথে মারা যেতে পারত!’

পেঙ্গুইন-প্রচার

লন্ডন এই মুহূর্তে ছেয়ে গিয়েছে পেঙ্গুইনে। সত্যিকারের পেঙ্গুইন নয় অবশ্য। তবে লন্ডনের বাসেই হোক কী পাতাল রেলে, কিংবা শহর জুড়ে ছড়িয়ে-থাকা লালরঙা টেলিফোন-বক্সগুলোয়— বড় বড় পেঙ্গুইনের কাটআউট উঁকি মারছে সব জায়গা থেকে। প্রত্যেকটা পেঙ্গুইনের পাশে আবার একটা সুটকেস রাখা। আসলে এটা একটা বিশেষ প্রচার, নাম ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইনস’। ওই একই নামের একটা ছবির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে এই প্রচার-অভিযান আয়োজন করেছে পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ‘গ্রিনপিস’। সংস্থা ডাক দিয়েছে ‘অ্যান্টার্কটিক ওশান স্যাংচুয়ারি’ তৈরির। পেঙ্গুইন তো বটেই, সিল আর তিমিরও পরম আশ্রয়স্থল হয়ে উঠবে এই স্যাংচুয়ারি। শিল্প-অঞ্চলের মাছ-ধরা নৌকাগুলো কুচো চিংড়ির মতো দেখতে ‘ক্রিল’দের ধরছে, তাতে টান পড়ছে পেঙ্গুইন আর সিলদের খাবারে। ১৮ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে থাকা এই স্যাংচুয়ারি হবে বিশ্বের বৃহত্তম সংরক্ষিত স্থান। সিডনি থেকে বার্সেলোনা, পৃথিবীর বহু শহরে চলছে গ্রিনপিস-এর এই প্রচার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

London Diaries লন্ডন ডায়েরি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE