ইংরেজি ক্যালেন্ডারের শেষ বড় উৎসব আজ। গোটা বিশ্ব বড়দিনের সাজে উজ্জ্বল। তাই প্রথমেই বড়দিনের শুভেচ্ছা সকলকে। উৎসব আনন্দময় হোক।
বড়দিন অবশ্য বড় একটা সুবিধার নয় এ বার। সান্তাক্লজের ঝোলা ভারতভূমিতে বেশ রিক্ত এ মরসুমে। তাঁর এ অসহায় দশার কারণ কিন্তু আর এক ‘সান্তাক্লজ’। তিনি লাল-সাদা পোশাকের সান্তা নন, তিনি গেরুয়া ধ্বজাধারী সান্তা। গোটা ভারতকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি— ‘অচ্ছে দিনের’ স্বপ্ন। অদৃশ্য কোনও ঝোলায় সমগ্র জাতির জন্য অভূতপূর্ব এক সুসময় রয়েছে, অমোঘ স্পর্শে দিন বদলে দিতে সক্ষম এক জাদুকাঠি রয়েছে, আর প্রত্যেকের জন্য অন্তত ১৫ লক্ষ টাকা করে রয়েছে— স্বপ্নের অবয়বটা অনেকটা এ রকমই ছিল। অতএব স্বপ্নাবিষ্ট ভারতের নির্বাচনে সান্তাক্লজের বিপুল জয়ধ্বনি শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তার পর থেকে এ যাবৎ ‘অচ্ছে দিনের’ পদধ্বনিটা আর শোনা গেল না।
গেরুয়া সান্তাক্লজ ভোটবাজারে ঝোলা কাঁধে নিয়ে যে স্বপ্নগুলোর নাম ধরে হাঁকাহাঁকি করছিলেন, ঝোলা উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে সে সব স্বপ্নের একটিকেও বাস্তবের মাটিতে নেমে আসতে দেখা যায়নি এখনও পর্যন্ত। উপহার যা কিছু মিলেছে, সে সবের অবয়ব একটু বিপরীতধর্মীই বরং। একটু মূল্যবৃদ্ধি মিলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম অনেকটা কমা সত্ত্বেও ভারতে জ্বালানি তেলের দাম মোটের উপর অপরিবর্তিত থেকেছে, রেল পরিষেবা আগের চেয়ে কিছুটা বেশি খরচসাপেক্ষ হয়েছে, আর সব শেষে আচমকা এক দিন বাজার থেকে ৮৬ শতাংশ নগদ প্রত্যাহার করে নিয়ে দেশবাসীকে নগদরহিত অর্থনীতিতে অভ্যস্ত হতে বলা হয়েছে।
বড়দিনের সান্তাক্লজ এ বছর মোজার ভিতরে কতটুকু দিতে পারবেন উপহার, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে বিস্তর। সান্তার অসহায়তার কারণটাও অবশ্য স্পষ্ট করেই জানা রয়েছে। তবু মোজা পেতে অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই। ঠিক যেমন ভাবে গোটা ভারত মোজা পেতে, চোখ বুঁজে দিল্লির সান্তাক্লজের উপহারের অপেক্ষায় এখনও।
অপেক্ষায়, আশায়, ভরসায় আরও বেশ কিছু দিন হয়তো কাটাবে ভারত। তার পর শুরু হবে অন্যতর এক অপেক্ষা— পরবর্তী নির্বাচনের অপেক্ষা।
আশায় বুক বেঁধে আপাতত উৎসবে সামিল হওয়া যাক। বড়দিন আর বর্ষবিদায়ের উৎসব উজ্জ্বল হোক। আবার বলি, উৎসব আনন্দময় হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy