দুর্ঘটনার পর রাজন কুমারদের সেই গাড়ি। ছবি: সৌমেন দত্ত।
মহাজনে বলেন— চরৈবেতি, চরৈবেতি। এগিয়ে চলাই মূল মন্ত্র জীবনের। সামনে এগনোই জীবন, আর থেমে যাওয়াই মৃত্যুর পদধ্বনি— এ যাবৎ অটল বিশ্বাস ছিল এই দর্শনে। কিন্তু সে বিশ্বাস আজ বিপর্যয়ের মুখে। সৌজন্যে একটি জাতীয় সড়ক।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে তথা দু’নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এগিয়ে চলার নাম এখন মৃত্যু। অহরহ অঘটন, যত্রতত্র দুর্ঘটনা এই মহাসড়কে। উল্টে যাওয়া ট্যাঙ্কার আর তা থেকে ঝরে পড়া গরম বিটুমিনের নীচে চেপ্টে গেল গাড়ি, চাপা পড়ল গোটা একটা পরিবার সদ্য। শিউরে উঠতে হয়েছে খবরটাতে। কিন্তু এই একটা নয়, গত চার মাসে ছোট-বড় মিলিয়ে দ্বিশতাধিক দুর্ঘটনার সাক্ষী দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। কখনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি উল্টে যাওয়ায় আমাদের টনক নড়েছে। কখনও কালিকাপ্রসাদের জীবন চলে যাওয়ায় আমরা স্তম্ভিত এবং মুহ্যমান হয়েছি। কখনও দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে আশা শিশু হাতের বাঁচার আর্তিতে সাড়া দিতে না পেরে মানসিক ভাবে অস্থির হয়ে পড়েছি। কিন্তু ওই পর্যন্তই, প্রতিকার খুঁজে বার করা যায়নি।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ব্যক্ত করেছে, কিন্তু সমাধানের খোঁজ দিতে পারেনি। পুলিশের ভূমিকা জাতীয় সড়কে বাড়বে বলে শোনা গিয়েছে, কিন্তু তেমনটাও ঘটেনি। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রায় অপরিহার্য এক মহাসড়ক ক্রমে মৃত্যুর সড়ক হয়ে উঠবে, এমন দুঃস্বপ্নের দিন নিশ্চয়ই আমাদের দেখতে বাধ্য করবে না সরকার। আশু প্রতিকার কিছু একটা খোঁজা হবে বলে আশা রাখছি। কিন্তু সেও খুব দ্রুত হোক, এমনই চাই আজ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির জানলা দিয়ে বেরিয়ে থাকা ছোট্ট হাতটা মানস-পটে ফুটে উঠে সেই আর্তিই জানাচ্ছে যেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy