ছবি: সংগৃহীত।
বৃত্তটি সম্পূর্ণ হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে। প্রাচীন ঐতিহ্যের স্পর্শ লেগে থাকা মুগলসরায় স্টেশনের নাম বদলে পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় হয়ে গেল আনুষ্ঠানিক ভাবে। ইতিহাসকে বিবর্তন করে সময়, যুগ ও রাজনীতি উপযোগী নাম বসানোর প্রবণতা শুধু উত্তরপ্রদেশ বা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারেরই আছে, এমনটা বললে ঘোর অসত্য বলা হবে। এই পথে ডানে-বামে-তৃণে কোথাও কোনও ভেদ নেই। এবং একই সঙ্গে এই কথাও বলে রাখা দরকার, পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত স্মারক নিয়েও আপত্তি নেই। আপত্তিটা আসলে ইতিহাসের অধ্যায়কে মুছে ফেলার প্রয়াসে।
শুধু একটি স্টেশনের নাম বদল যদি আলোচ্য হত, এত কথার প্রয়োজন হয়ত পড়ত না। কিন্তু যখন উত্তরপ্রদেশে আখলাক খুনে অভিযুক্তদের চাকরির প্রকাশ্য আশ্বাস দেন বিজেপি বিধায়ক, যখন মহারাষ্ট্রের ওশিওয়ারা স্টেশনের নাম বদলে করে দেওয়া হয় রামমন্দির, অথবা অযোধ্যায় রামের বিশাল মূর্তি উন্মোচনের পরিকল্পনা ঘোষণা করে যোদী আদিত্যনাথ ছোটেন ভোটমুখী গুজরাতে হিন্দুত্বের ধ্বজা ওড়াতে— তখন কোথাও একটা বৃত্ত রচনার কৌশল নজরে আসে। দূর আকাশে সেই সিঁদুরে মেঘ দেখলে ঘর পোড়া গরু যে ভয় পাবে, তা তো প্রবচনসিদ্ধ।
বস্তুত, ইতিহাসের বিনির্মাণ চলছে এখন। ইতিহাস নিজেই সাক্ষী, নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে বিনির্মাণ সফল হয়নি কখনও। ইতিহাসকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখার প্রয়াস যুগে যুগে হয়েছে, সেই প্রতিস্পর্ধায় ঋদ্ধ হয়েছে ইতিহাস। কিন্তু কোনও অধ্যায়ের বিলুপ্তি প্রয়াসে ইতিহাসের চাকা ওল্টানোর ধৃষ্টতা আছে।
প্রতিস্পর্ধা আর ধৃষ্টতার মধ্যে একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। শাসকের গোচরে তা থাকে কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy