Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Editorial News

এই মেয়েদের জন্য গর্বিত না হয়ে পারা যায় না

খেলার মাঠে ভারতীয় মেয়েদের বৃহৎ অর্জন কিন্তু এই প্রথম নয়। সাইনা নেহওয়াল বা সানিয়া মির্জা বা মেরি কমরা বহু প্রতিকূলতা ঠেলে অনন্য নজির গড়েছেন আগেও। কিন্তু মিতালি রাজরা যে ভাবে গোটা জাতির মনসংযোগের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠলেন, যে ভাবে গোটা ভারতীয় জনগোষ্ঠীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রইলেন টানা কয়েক দিন ধরে, তা এ দেশে বিরল।

ঐতিহাসিক লর্ডসে কাপ না জিতলেও মন জয় করলেন মিতালি রাজরা। ছবি: গেটি ইমেজেস।

ঐতিহাসিক লর্ডসে কাপ না জিতলেও মন জয় করলেন মিতালি রাজরা। ছবি: গেটি ইমেজেস।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৫:৩৬
Share: Save:

ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলকে অশেষ অভিনন্দন! যে অর্জনে পৌঁছেছেন মিতালি, ঝুলন, হরমনপ্রীতরা, তা অসামান্যই। বিশ্বকাপ ফাইনালে জয় বা পরাজয় বড় কথা নয়। যে মাইল-ফলকে পৌঁছলে সমগ্র জাতির নজর নিজেদের দিকে টেনে নেওয়া যায়, অজস্র বাধা সরিয়ে সেখানে পৌঁছতে পারাই সবচেয়ে বড় অর্জন। দলের গর্বিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। দেশের প্রত্যেক নারীর গর্বিত হওয়ার কারণ রয়েছে। গোটা ভারতের জন্যই গর্বানুভূতির এক অনন্য অবকাশ তৈরি হয়েছে।

খেলার মাঠে ভারতীয় মেয়েদের বৃহৎ অর্জন কিন্তু এই প্রথম নয়। সাইনা নেহওয়াল বা সানিয়া মির্জা বা মেরি কমরা বহু প্রতিকূলতা ঠেলে অনন্য নজির গড়েছেন আগেও। কিন্তু মিতালি রাজরা যে ভাবে গোটা জাতির মনসংযোগের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠলেন, যে ভাবে গোটা ভারতীয় জনগোষ্ঠীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রইলেন টানা কয়েক দিন ধরে, তা এ দেশে বিরল।

আজও এ দেশে ‘বেটি বচাও, বেটি পঢ়াও’ কর্মসূচি নিতে হয় সরকারকে। কন্যাভ্রূণ যাতে ভূমিষ্ঠ হতে পারে এবং জন্ম নেওয়া কন্যাসন্তান যাতে বড় হতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য আজও দেশজোড়া প্রচার চালাতে হয় প্রশাসনকে। মেয়েদের নিরক্ষর করে রাখলে যে আকাশের অর্ধেকটাই অন্ধকারে ঢাকা পড়ে, তা দেশবাসীকে বোঝানোর জন্য আজও রোজ প্রচারমাধ্যমকে সক্রিয় রাখতে হয়। এমন এক সমাজে কোনও মেয়েকে ক্রিকেটার বা ফুটবলার বা খেলোয়াড় হয়ে উঠতে কতটা পথ পেরিয়ে আসতে হয়, কত ঝড়-ঝাপটা সয়ে আসতে হয়, সে কথা আজ উপলব্ধি করা দরকার প্রত্যেকের। সেই তুমুল ঝড়-ঝাপটার ভুবনটা পেরিয়ে আসার পরই কিন্তু মিতালি-ঝুলনদের নতুন করে শুরু করতে হয় আরও একটা ভুবন পেরিয়ে বিশ্বসেরা হওয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছনোর লড়াইটা। এই মেয়েদের জন্য গোটা দেশ গর্বিত না হয়ে পারে কী করে?

আরও আগেই এই উপলব্ধি আসা জরুরি ছিল। সাইনা-সানিয়া-মেরিদের দেখে অনেক বেশি করে প্রাণিত হওয়া জরুরি ছিল। হতে পারিনি, সে আক্ষেপের বিষয়। আজ মিতালিদের দেখে প্রাণিত হতে পারলাম, সে খুশির বিষয়। মিতালি-ঝুলনরাই শুধু মাইল-ফলকে পৌঁছননি, আমরাও আজ নতুন মাইল-ফলকে পৌঁছে গিয়েছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE