Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কৃষ্ণগঞ্জে জমি জবরদখলকারীদের গুলিতে নিহত এক মহিলা

জমি জবরদখলকারীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মৃত্যু হল অপর্ণা বাগ (৩৮) নামে এক মহিলার। রবিবার সকালে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের ঘুঘড়াগাছির ঘটনা। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন লতিকা তরফদার ও শ্যামলী তরফদার নামে আরও দুই মহিলা এবং একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাজীব মণ্ডল। থানায় ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। এঁদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত লঙ্কা ঘোষ। তিনি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য লঙ্কাকে ‘সমাজবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে ঘটনার দায় নিতে অস্বীকার করেন। সিপিএমের অভিযোগ, আসন্ন কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে ওই এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াতেই তৃণমূল দুষ্কৃতীদের দিয়ে জমি জবরদখল করাচ্ছে।

মৃতা অপর্ণা বাগ। রবিবার সুদীপ ভট্টাতার্যের তোলা ছবি।

মৃতা অপর্ণা বাগ। রবিবার সুদীপ ভট্টাতার্যের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৪ ১৭:৪৪
Share: Save:

জমি জবরদখলকারীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মৃত্যু হল অপর্ণা বাগ (৩৮) নামে এক মহিলার। রবিবার সকালে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের ঘুঘড়াগাছির ঘটনা। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন লতিকা তরফদার ও শ্যামলী তরফদার নামে আরও দুই মহিলা এবং একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাজীব মণ্ডল। থানায় ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। এঁদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত লঙ্কা ঘোষ। তিনি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য লঙ্কাকে ‘সমাজবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে ঘটনার দায় নিতে অস্বীকার করেন। সিপিএমের অভিযোগ, আসন্ন কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে ওই এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াতেই তৃণমূল দুষ্কৃতীদের দিয়ে জমি জবরদখল করাচ্ছে।

কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা এলাকাটি তৃণমূলের ঘাঁটি। এই পঞ্চায়েত সমিতির ৭টা পঞ্চায়েতের মধ্যে পাশাপাশি জঘাটা ও গোবিন্দপুর কেবলমাত্র সিপিএমের দখলে। সীমান্ত থেকে ৭-৮ কিলোমিটার দূরের ঘুঘড়াগাছি গ্রাম জঘাটা পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে। ঘুঘড়াগাছি গ্রামটি সিপিএম প্রভাবিত। সেখানে ২২ বিঘার মতো জমির মালিকানা নিয়ে জট রয়েছে। বছর তিরিশেক আগে গ্রামেরই ৫৬টি দরিদ্র পরিবারের মধ্যে ওই জমি ভাগ করে দেওয়া হয়। সেখানে মুগ, মুসুর ডাল ও শাক-সব্জি চাষ করে সংসার চালাত পরিবারগুলি। সম্প্রতি স্থানীয় পীরপুর এলাকার নেপাল ঘোষ, পলাশ ঘোষ ও নাথপুর পাড়ার বাসিন্দা লঙ্কা ঘোষ দাবি করেন, কলকাতায় ওই জমির আসল মালিকের কাছ থেকে জমি কিনে নিয়েছেন তাঁরা। জমি থেকে উঠে যাওয়ার জন্য মাস তিন-চারেক ধরে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল ওই পরিবারগুলিকে। তা নিয়ে স্থানীয় হাঁসখালি থানায় অভিযোগও জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।

রবিবার সকালে গ্রামের পুরুষেরা অধিকাংশই জনমজুরের কাজে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। মেয়েরা কাজ করছিলেন মাঠে। আচমকাই ৪০-৫০ জনের একটি দল তিনটি ট্রাক্টর নিয়ে মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়ে। চাষজমির উপর দিয়ে ট্রাক্টর চালানো শুরু করে ওই দুষ্কৃতীরা। মাঠে যাঁরা কাজ করছিলেন তাঁরা রুখে দাঁড়ান। তখনই দুষ্কৃতীরা গুলি-বোমা ছুড়তে শুরু করে। মাঠেই কাজ করছিলেন অপর্ণাদেবী। দুষ্কৃতীদের গুলি তাঁর বুকে এসে লাগে। মাঠেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। খবর পেয়ে গ্রামের বাকিরা জড়ো হলে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। এরই মধ্যে চলে আসে পুলিশ। উত্তেজিত গ্রামবাসীরা পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুরও করেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE