Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গুজ্জরদের আন্দোলনে রাশ টানতে প্রশাসনকে নির্দেশ আদালতের

সংরক্ষণের দাবিতে গুজ্জরদের লাগাতার আন্দোলনের জেরে ক্রমশ জটিল হচ্ছে রাজস্থানের পরিস্থিতি। অষ্টম দিনে পড়া এই আন্দোলনের জেরে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। অচলাবস্থা কাটাতে বৃহস্পতিবার আসরে নেমে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ত্সনা করেছে হাইকোর্ট। এর পরই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এ দিন সকালে ফের এক দফা আলোচনার জন্য গুজ্জরদের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তৈরি থাকতে বলা হয়েছে নিরাপত্তাবাহিনীকেও। সূত্রের খবর, বৈঠক ব্যর্থ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে সিআরপিএফের একটি দলও।

ভরতপুরে চলছে রেল রোকো।

ভরতপুরে চলছে রেল রোকো।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ১৩:০২
Share: Save:

সংরক্ষণের দাবিতে গুজ্জরদের লাগাতার আন্দোলনের জেরে ক্রমশ জটিল হচ্ছে রাজস্থানের পরিস্থিতি। অষ্টম দিনে পড়া এই আন্দোলনের জেরে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। অচলাবস্থা কাটাতে বৃহস্পতিবার আসরে নেমে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ত্সনা করেছে হাইকোর্ট। এর পরই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। এ দিন সকালে ফের এক দফা আলোচনার জন্য গুজ্জরদের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তৈরি থাকতে বলা হয়েছে নিরাপত্তাবাহিনীকেও। সূত্রের খবর, বৈঠক ব্যর্থ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছে সিআরপিএফের একটি দলও।

সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশ সংরক্ষণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন গুজ্জর সম্প্রদায়ের মানুষ। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে তাঁদের বৈঠকও হয়েছে বেশ কয়েক বার। কিন্তু সমাধান সূত্র মেলেনি। আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ে শেষ এক সপ্তাহে। দাবি না মানা পর্যন্ত লাগাতার রেল রোকো এবং পথ অবরোধ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয় গুজ্জররা। বিক্ষোভের জেরে বিপর্যস্ত দিল্লি-মুম্বই রেল যোগাযোগ। ভরতপুরের কাছে লাইনে বসে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি খুলে দেওয়া হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার ফিশপ্লেট। ফলে বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন। শতাধিক ট্রেনের গতিপথ ঘুরিয়ে কোটা-মথুরা শাখা দিয়ে চালানো হচ্ছে। বাড়তি ট্রেন চালানোর ফলে চাপ বাড়ছে ওই শাখার রেল চলাচলেও। বাতিল হয়েছে প্রায় দু’লক্ষ টিকিট। এখনও পর্যন্ত রেলের ক্ষতি ছাড়িয়েছে একশো কোটি। সওয়াইমাধেপুরার কাছে গত সাত দিন ধরে অবরুদ্ধ আগ্রা-জয়পুর জাতীয় সড়ক।

গুজ্জরদের সঙ্গে আলোচনায় সরকারের তরফে তিন মন্ত্রীকে নিয়ে একটি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে ১৩ সদস্যের গুজ্জর প্রতিনিধিদের প্রথম বৈঠক হয় গত শনিবার। অচলাবস্থা কাটাতে দু’পক্ষ ফের আলোচনায় বসে মঙ্গলবার রাতে। ব্যর্থ হয় সেই বৈঠকও। সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সামাজিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চলতি সংরক্ষণ নীতি বদল করা অসম্ভব। ফলে গুজ্জরদের সংরক্ষণও এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। সরকারের কাছ থেকে কোনও আশ্বাস না পেয়ে তীব্র হয় আন্দোলন।

এই পরিস্থিতেই এ দিন হস্তক্ষেপ করে হাইকোর্ট।


চলছে দু’পক্ষের বৈঠক।

গুজ্জরদের আন্দোলনকে ‘অগণতান্ত্রিক’ আখ্যা দিয়ে বিচারপতি আর এস রাঠৌর বলেন, “গুজ্জরদের এই অগণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে সাধারণ মানুষ নাকাল হচ্ছে।” আদালত কক্ষে উপস্থিত রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব এবং পুলিশের ডিজি-কে তীব্র ভর্ত্সনা করে বিচারপতি বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আন্দোলনকারী এবং সরকার— দু’পক্ষের কেউই তত্পরতা দেখায়নি। সড়ক এবং রেলপথ এত দিন আটকে থাকলেও এক জন আন্দোলনকারীকেও গ্রেফতার করেনি প্রশাসন।” বিচারপতির রোষানল থেকে বাদ যাননি রেলের আধিকারিকেরাও। আন্দোলনকারীরা ফিশপ্লেট খুলে নিলেও আরপিএফ কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি জানতে চাওয়া হয় তা-ও। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। শুক্রবার আদালতে সশরীরে উপস্থিত থেকে স্বরাষ্ট্রসচিব এবং পুলিশ প্রধানকে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল তা জানাতে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

আদালতের এই নির্দেশের পরে ফের এক দফা বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি আন্দোলন প্রভাবিত এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যাও। দু’পক্ষের মধ্যে শুরুও হয়েছে বৈঠক। তবে সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি।

ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE