রণক্ষেত্র কৃষ্ণনাথ কলেজ। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
দু’দিন পেরোতে না পেরোতেই ফের ছাত্র সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বহরমপুর। এ বার ঘটনাস্থল কৃষ্ণনাথ কলেজ। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ কলেজ চত্বরেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে টিএমসিপি-ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের মোট ছ’জন আহত হয়েছেন।
কী হয়েছিল এ দিন?
প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানিয়েছেন, ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা সংসদের ঘরে বসে গল্প করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় টিএমসিপি-র কয়েক জন সদস্য ঘরে ঢুকে আচমকাই ছাত্র পরিষেদের সদস্যদের মারধর শুরু করে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে টিএমসিপি পাল্টা জানিয়েছে, ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা দিনের পর দিন বহিরাগতদের কলেজে ঢোকাচ্ছে। এ দিন সেই ঘটনার প্রতিবাদ করা হয়েছিল মাত্র। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রাজা ঘোষ জানিয়েছেন, পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়, কলেজে কোনও বহিরাগতদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। অথচ ছাত্র পরিষদের সদস্যরা বহিরাগতদের ঢুকিয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করছে।
পাল্টা অভিযোগ এনে ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সরফরাজ শেখ রুবেল জানান, পুলিশ ও প্রশাসনের মদতে টিএমসিপি-র গুন্ডাবাহিনী হামলা চালিয়েছে।
এই কলেজে সামনেই নির্বাচন। তার আগে দু’পক্ষের সংঘর্ষে রীতিমতো বিব্রত কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছেন।
গত ২২ নভেম্বর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বহিরাগতদের উপস্থিতি নিয়ে টিএমসিপি ও ছাত্র পরিষদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বহরমপুর কলেজ। সে দিনের ঘটনায় আহত হন সাত জন।
রাজ্যে ক্ষমতায় এসে শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতি মুক্ত করার চিন্তাভাবনা করেছিল শাসকদল। বাম জমানা থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে ছাত্র রাজনীতিতে রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছিল তারা। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে কলেজ নির্বাচন, সংসদ দখল এবং নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন কলেজে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কলেজ নির্বাচনকে ঘিরে টিএমসিপি, ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআই পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বার বার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের কলেজগুলিতে নৈরাজ্যের চিত্র যে বিন্দুমাত্র বদলায়নি সোমবার বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজের ঘটনা ফের তা প্রমাণ করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy