Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টের অস্বাভাবিক মৃত্যু বাঁকুড়ায়

প্রায় তিন বছর ধরে তিনি একটি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট ছিলেন। বাজার থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। কিন্তু, সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় প্রায়ই আমানতকারীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হত। সম্প্রতি খুব চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন বলে পরিবারের দাবি। এরই মধ্যে রবিবার রাতে ওই এজেন্ট ইনজামুল খানের (২৪) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। তাঁর বাড়ি বাঁকুড়া সদর থানার সপাগড়া গ্রামে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ১২:০৩
Share: Save:

প্রায় তিন বছর ধরে তিনি একটি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট ছিলেন। বাজার থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। কিন্তু, সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় প্রায়ই আমানতকারীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হত। সম্প্রতি খুব চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন বলে পরিবারের দাবি। এরই মধ্যে রবিবার রাতে ওই এজেন্ট ইনজামুল খানের (২৪) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। তাঁর বাড়ি বাঁকুড়া সদর থানার সপাগড়া গ্রামে।

মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, গত বছর তিনেক ধরে রোজভ্যালির হয়ে কাজ করতেন ইনজামুল। ভালই ব্যবসা দিতেন তিনি। কিন্তু, সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সেই ব্যবসায় ভাটা দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, আমানতকারীরা টাকা ফেরত চাইতে শুরু করেন তাঁর কাছে। মাঝে মাঝে ক্ষোভের মুখেও পড়তে হত। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আমানতকারীদের ক্ষোভ ওই এজেন্টের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করে। সোমবার মৃতের কাকা আখতার খান বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে খুব চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল ইনজামুল। মনে হচ্ছিল, কোনও সমস্যায় ভুগছিল। ওর মনের উপর যে প্রবল চাপ ছিল সেটা বুঝতে পারছিলাম।”

কী হয়েছিল ওই রাতে?

ইনজামুলের পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়ি সংলগ্ন বাগানের দিকে যেতে দেখা যায় তাঁকে। বেশ কিছু ক্ষণ কেটে যাওয়ার পরও তিনি ফিরে না আসায় ডাকাডাকি শুরু হয়। কিন্তু, তাঁর সাড়া না মেলায় বাগানের দিকে আলো নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। বাগানের দিকে একটু এগোলেই কুয়ো। সেখানে পৌঁছে সকলে ইনজামুলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। যে কপিকলের সাহায্যে দড়ি বাঁধা বালতি করে কুয়ো থেকে জল তোলা হয়, সেই কপিকল ঝোলানোর রড থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দড়িতে ঝুলছে তাঁর দেহ।

দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট ছিলেন ইনজামুল। তাঁর দাদা মেহের আলি জনমজুরের কাজ করেন। তিনি বলেন, “টাকা ফেরত দিতে না পারায় প্রায়ই ভাইকে অপদস্ত হতে হত। সেই অপমানের জ্বালা মেটাতেই ও হয়তো আত্মহত্যা করেছে।” এলাকাবাসীর পাশাপাশি প্রাথমিক ভাবে পুলিশেরও তাই ধারণা। তারা জানিয়েছে, দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগ জমা না পড়লেও তদন্ত চলছে।

বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টের আত্মহত্যার ঘটনা এর আগেও ঘটেছে রাজ্যে। সেই তালিকায় রোজভ্যালির এজেন্টও ছিলেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের সুতিতে উদ্ধার হয়েছিল ওই সংস্থার এক মহিলা এজেন্ট দশমী দাসের দেহ। বছর বত্রিশের ওই মহিলাও বাজার থেকে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। কিন্তু, সংস্থার অফিস ঘুরে ঘুরেও আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারেননি তিনি। সে কারণে আত্মহত্যা করেন বলে এলাকাবাসীদের একাংশ জানিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abdul manna rosevalley bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE