আগুনের গ্রাসে। ছবি: রণজিত্ নন্দী।
টানা তিন ঘণ্টার চেষ্টার পরে নিয়ন্ত্রণে আসে পার্ক স্ট্রিটের কাছে ময়দান লাগোয়া চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালের আগুন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ওই বহুতলে ভয়াবহ আগুন লাগে। এ দিন সকালে ওই বহুতলের ষোলো তলা থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই আগুন অনেকটাই ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু আগুন যে উচ্চতায় লেগেছিল সেখানে পৌঁছতে দমকলবাহিনীকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় আরও ১১টি ইঞ্জিন পৌঁছয়। আনা হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। বহুতলের যেখানে আগুন লাগে তার ঠিক উপরের তলায় বেশ কয়েক জন মানুষ আটকে পড়েন। উদ্ধারের আকুতি নিয়ে সেখান থেকেই লাল কাপড় নাড়াতে থাকেন তাঁরা। পরে দমকল কর্মীরা স্কাইলিফ্ট নিয়ে এসে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে তাঁদের উদ্ধার করেন। দমকল মন্ত্রী জাভেদ খান জানান, উপরে চার জন আটকে ছিলেন। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, আগুন লাগার ঘটনায় তিন জনকে নিয়ে এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁদের প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রথম দিকে বহুতলের ওই আগুন লাগা অংশে পৌঁছতে পারছিলেন না দমকলকর্মীরা। প্রাথমিক ভাবে পাশের একটি পাঁচ তলা বাড়ির ছাদ থেকে পাইপের মাধ্যমে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে খুব একটা সুবিধা হয়নি। স্কাইলিফ্ট আনার পরে আরও চারটি ল্যাডার নিয়ে আসা হয়। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় ষোলো তলায় পৌঁছয় দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কিন্তু তত ক্ষণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সতেরো তলায়। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ষোলো ও সতেরো তলায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বিপর্যয় মোকাবিলায় এই প্রথম কলকাতা পুলিশের তরফে ব্যবহার করা হয় উড়ুক্কু যান। প্রাথমিক ভাবে দমকলের ধারণা, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। তারা জানিয়েছে, এই বহুতলে একশোরও বেশি অফিস রয়েছে। অফিস শুরুর আগে আগুন লেগেছে বলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো গিয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে ১৫টি সংস্থার অফিস সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। প্রায় একই রকম ভাবে ২০১০-এর ২৩ মার্চ দুপুরে পার্ক স্ট্রিটেরই স্টিফেন কোর্টে ভয়াবহ আগুন লাগে। ওই বহুতলে বেশ কয়েকটি অফিস এবং ফ্ল্যাট ছিল। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় ৪৩ জনের। আহত হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন।
এ দিন সাত সকালে আগুন লাগায় আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বহুতল সংলগ্ন এলাকা খালি করে দেওয়া হয়। চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনাল বিল্ডিংটি পার্ক স্ট্রিট ফ্লাইওভার ঘেঁষা হওয়ায় ওই পথে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় জওহরলাল নেহরু রোডের গাড়িও। অফিসের ব্যস্ত সময়ে শহরের অন্যতম প্রধান রাস্তায় গাড়ি চলাচল থমকে যাওয়ায় অসুবিধায় পড়েন বহু মানুষ।
মহানগরে অগ্নিকাণ্ড
২০১৪
২ অগস্ট
বড়বাজার ক্যানিং স্ট্রিট
১২ অগস্ট
আলিপুর
২৬ অগস্ট
নন্দন
১৮ অগস্ট
হিন্দুস্থান বিল্ডিং
৮ অগস্ট
অ্যাকাডেমি
১৯ জুলাই
গিল্যান্ডার হাউস
১৯ জুলাই
ফারপো মার্কেট
২০১১
২৭ অক্টোবর
ব্যাঙ্কশাল কোর্ট
৮ ডিসেম্বর
আমরি হাসপাতাল
২০১০
২৩ মার্চ
স্টিফেন কোর্ট
২০০৮
১১ জানুয়ারি
নন্দরাম মার্কেট
ফ্রেমবন্দি অগ্নি-স্মৃতি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy