দুর্ঘটনার পর জ্বলছে বাস ও লরিটি।
ঝাড়গ্রামে বাস ও লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল তিন জনের। আহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শনিবার ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রামের বালিভাসার কাছে মুম্বই রোডের উপর এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহতদের ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন ভোরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে রাঁচি থেকে কলকাতার দিকে আসছিল একটি যাত্রীবোঝাই দোতলা বাস। বালিভাসার কাছে একটি তেলের ট্যাঙ্কারকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায় বাসটি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার একেবারে ডান দিকে চলে আসে ট্যাঙ্কারটিও। তখনই উল্টো দিক থেকে আসা একটি চটের বস্তা বোঝাই লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বাসটির। সংঘর্ষের পরেই আগুন লেগে উল্টে যায় বাসটি। লরিটিতেও আগুন লেগে যায়। বাসের যাত্রীরা জানলা দিয়ে কোনওমতে বেরিয়ে আসেন। কিছু ক্ষণ পরই ঝাড়গ্রাম থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কলাইকুন্ডা থেকে বায়ুসেনার দমকলও এসে পৌঁছয়। বাসটিতে জনা পঞ্চাশেক যাত্রী ছিলেন। এঁদের মধ্যে কমবেশি আহত হয়েছেন প্রায় সবাই। আহতদের মধ্যে সাত মহিলা-সহ ২৯ জনকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার প্রসূন ঘোষ। প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয় ছ’জনকে। বাকি যাত্রীদের মধ্যে কয়েক জন পরের একটি বাসে উঠে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হন।
চলছে উদ্ধারকাজ।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস এবং লরিটি থেকে তিনটি দগ্ধ দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনার পর এলাকায় পৌঁছন ঝাড়গ্রামের থানার আইসি তানাজি দাস। তিনি বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, প্রবল গতিতে থাকা বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো দিক থেকে আসা লরিটিকে ধাক্কা মারে। তবে যাত্রীরা ঘুমিয়ে থাকায় দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়। লরি থেকে উদ্ধার হওয়া দেহ দু’টি লরির চালক এবং খালাসির হতে পারে। বাস থেকে উদ্ধার হওয়া দেহটি সম্ভবত কোনও যাত্রীর। তবে তাঁর পরিচয় এখনও জানা যায়নি।” দগ্ধ মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থলে বসতি কম থাকায় এবং ভোর বেলা যাত্রীরা ঘুমিয়ে থাকায় ঠিক কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটল তা জানা যায়নি। বাসের আহত এক যাত্রীর দাবি, “রাঁচি ছাড়ার পর থেকেই চালক প্রচণ্ড গতিবেগে বাসটি চালাচ্ছিল। আমরা বারবার সাবধান করেও লাভ হয়নি। ভোরবেলা ঘুমিয়ে ছিলাম। আচমকা প্রচণ্ড ধাক্কায় পড়ে যাই। পরে কোনওমতে বাস থেকে বেরিয়ে আসি।”
দুর্ঘটনার জেরে প্রায় আড়াই ঘণ্টা জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে ফের শুরু হয় যান চলাচল।
ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy