Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

অভিযুক্তরাই প্রতিনিধি, পাড়ুইয়ে ভেস্তে গেল পুলিশের সর্বদল বৈঠক

পাড়ুই এবং সংলগ্ন এলাকায় শান্তি ফেরাতে পুলিশের ডাকা সর্বদল বৈঠক। আর তাতে উপস্থিত শাসক দলের ‘ফেরার’ অভিযুক্তরা। শুক্রবার এমনই এক অভিনব বৈঠকের সাক্ষী থাকল পাড়ুই থানা। যদিও বিজেপি এবং সিপিএম বয়কট করায় কিছুক্ষণ পরেই ভেস্তে যায় সেই ‘শান্তি’ বৈঠক। পাড়ুই, মাখড়া চৌমণ্ডলপুর, যাদবপুর— বেশ কয়েক দিন ধরেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তাল বীরভূমের এই গ্রামগুলি। শাসক থেকে বিরোধী, মৃত্যু হয়েছে দু’পক্ষেরই একাধিক সমর্থকের।

বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের শেখ মুস্তাফা, মোস্তাক হোসেন এবং বিজেপির দুধকুমার মণ্ডল। ছবি বিশ্বজিত্ রায়চৌধুরী।

বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের শেখ মুস্তাফা, মোস্তাক হোসেন এবং বিজেপির দুধকুমার মণ্ডল। ছবি বিশ্বজিত্ রায়চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৪ ১৮:৪৭
Share: Save:

পাড়ুই এবং সংলগ্ন এলাকায় শান্তি ফেরাতে পুলিশের ডাকা সর্বদল বৈঠক। আর তাতে উপস্থিত শাসক দলের ‘ফেরার’ অভিযুক্তরা। শুক্রবার এমনই এক অভিনব বৈঠকের সাক্ষী থাকল পাড়ুই থানা। যদিও বিজেপি এবং সিপিএম বয়কট করায় কিছুক্ষণ পরেই ভেস্তে যায় সেই ‘শান্তি’ বৈঠক।

পাড়ুই, মাখড়া চৌমণ্ডলপুর, যাদবপুর— বেশ কয়েক দিন ধরেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তাল বীরভূমের এই গ্রামগুলি। শাসক থেকে বিরোধী, মৃত্যু হয়েছে দু’পক্ষেরই একাধিক সমর্থকের। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তল্লাশির নামে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ। বিরোধীরা বারবার অভিযোগ করেছেন, বোমা এবং দুষ্কৃতীদের খোঁজে বেছে বেছে বিজেপি অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে হানা দিয়েছে পুলিশ। অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ বাহিনীও তৈরি করেছে জেলা পুলিশ। কিন্তু তাতেও মিলছিল না কাঙ্খিত সাফল্য। গ্রামগুলিতে শান্তি ফেরাতে এরপর সর্বদল বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। কিন্তু বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তদের প্রতিনিধিত্ব করার অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগে কার্যত ভেস্তে গেল সেই বৈঠক। সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত ছিল মাখড়া কাণ্ডে অভিযুক্ত শাসকদলের শেখ মুস্তাফা, মুস্তাক হোসেন, নুরুল ইসলাম।

এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ পাড়ুই থানায় শুরু হয় বৈঠক। তৃণমূল এবং বিজেপির জনা ছ’য়েক প্রতিনিধি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের তিন এবং পিডিএসের এক জন প্রতিনিধি। একমাত্র কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধিই উপস্থিত ছিলেন না। প্রশাসনের তরফ থেকে যোগ দেন সি আই চন্দ্রশেখর দাস এবং পাড়ুই থানার ওসি অমরজিত্ বিশ্বাস। মিনিট ২০ পর থেকেই ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে থাকে পরিবেশ। অভিযুক্তদের নিয়েই পুলিশ বৈঠক করছে— এই অভিযোগ তোলে বিজেপি। তৃণমূলও পাল্টা অভিযোগ করে বলে, বিজেপির অভিযুক্তদের ধরছে না পুলিশ। পরিবেশ ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বৈঠক ছেড়ে বেড়িয়ে যান সিপিএমের প্রতিনিধিরা। এর কিছু পরে বেরিয়ে যায় বিজেপিও। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এলাকায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছিল। প্রায় সব দলই এসেছিল। কিন্তু বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তদের নিয়ে কেন বৈঠক করল পুলিশ? সি আই চন্দ্রশেখর দাসের দাবি, “এরা কেউই অভিযুক্ত নয়। শুধুমাত্র এফআইআর করলেই কেউ অভিযুক্ত হয় না। আর এরাই গ্রামের মাথা। এদের ছাড়া বৈঠক করব কাকে নিয়ে?” তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে পুলিশের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলা হয়েছে, এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে পুলিশকে সবরকম ভাবে সাহায্য করা হবে। তাদের আরও দাবি, বিজেপি শান্তির বিপক্ষে বলেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE