ম্যাচের দুই নায়ক। সঙ্গাকরা ও থিরিমানে। ছবি: এএফপি।
জোড়া শতরানে মর্গানবাহিনীকে হারাল শ্রীলঙ্কা। থিরিমানের অনবদ্য ১৩৯ এবং সঙ্গাকরার ১১৭ শ্রীলঙ্কার তরীকে অনায়াসে পার করে দিল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল তারা। রবিবার ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। শ্রীলঙ্কার পেস অ্যাটাককে অবলীলায় উড়িয়ে দেন ইয়ান বেল-জো রুটরা। মালিঙ্গা, লকমলকে রেয়াত করেনি ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা। এ দিন বেলের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন জো রুট। ১০৮ বলে ১২১ রান করেন তিনি। তার মধ্যে ১৪টি বাউন্ডারি ও ১টি ওভারবাউন্ডারি রয়েছে তাঁর। পেস অস্ত্র তেমন ভাবে ধারাল না হওয়ায় তর তর করে স্কোরবোর্ডে রান বাড়তে থাকে ইংল্যান্ডের। উপমহাদেশীয় ক্রিকেট দলগুলির মূল অস্ত্র স্পিন। বাধ্য হয়ে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ সেই অস্ত্রকেই কাজে লাগান। জো রুট অবলীলায় মালিঙ্গা-লকমলদের বোলিংকে ‘হত্যা’ করে চলেছেন, তখনই হেরথকে বল করতে আনেন ম্যাথিউজ। ব্যস, অমনি কাজ! তাঁর বলেই এলবিডব্লিউ হন জো রুট। এর পর ইংল্যান্ডের লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা একে একে সেই স্পিন অস্ত্রেই বধ হন। তেমন ভাবে আর কোনও বড় রানই খাড়া করতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। ৬ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৩০৯।
ব্যাট করতে নেমে যে ভাবে দিলশান ও থিরিমানে নিজেদের মেলে ধরে তাতে প্রথম থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় ম্যাচের ফলাফল কোন দিকে গড়াচ্ছে। শ্রীলঙ্কার পেস আক্রমণের মতোই এ দিন অ্যান্ডারসন-ব্রডদের পেস অ্যাটাক ছিল ম্যাড়ম্যাড়ে। তাঁদের পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কার ভিত নড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট ছিল না এ দিন। একমাত্র মইন আলি উইকেট পান দিলশানের। বাকিদের উইকেটের ঝুলি ছিল শূন্য। দিলশান আউট হয়ে যাওয়ার পর থিরিমানের সঙ্গে দলের হাল ধরেন সঙ্গাকরা। এ দিন সঙ্গাকরার খেলা দেখে মনে হয়েছিল তিনি তাঁর পুরনো মেজাজেই রয়েছেন। কখনওই মনে হয়নি সদ্য টেস্ট থেকে অবসর নেওয়া সঙ্গার খেলায় এবং শট নির্বাচনে খুঁত রয়েছে। নিজেকে যেন আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বকাপে মেলে ধরেছেন। তাঁদের ২১২ রানের পার্টনারশিপে শ্রীলঙ্কা অনায়াসেই ৪৭.২ ওভারে ম্যাচ জিতে নেয়। এ দিন এক দিনের ক্রিকেটে নিজের ২৩তম শতরান করলেন সঙ্গাকরা। ব্যক্তিগত ৩ রানের মাথায় থিরিমানের ক্যাচ ফেলার মাশুল দিতে হল ইংল্যান্ডকে। ইংল্যান্ড বোলিংকে চূর্ণ করে সদর্পে শতরান করলেন তিনি। শ্রীলঙ্কাও এ দিন বেশ কয়েকটি ক্যাচ মিস করে। কিন্তু ব্যাটিংয়ে সেই ভুল শুধরে নিয়ে জয় ছিনিয়ে নেয় তাঁরা। সে রকমটা কিন্তু করতে পারেনি ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ হারার পর জ্বলে ওঠেন ম্যাথিউজরা। এর পর আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও সহজে জয় আসে তাঁদের। এ দিন ইংল্যান্ড কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল তাদের। কিন্তু সেই ইংল্যান্ডকেই এমন অবলীলায় হারানো পর বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা আরও জোরালো দাবিদার হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্য দিকে, ইংল্যান্ডের ইতিমধ্যেই চারটে ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে তিনটেতেই হেরেছে তারা। আর যে ম্যাচটি জিতেছে তা হল স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে। দল হিসাবে ইংল্যান্ডের কাছে কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল না স্কটল্যান্ড। পারফরম্যান্সের বিচারে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ায় ইতিমধ্যেই সে দেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy