Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভোটবাক্সে দ্বন্দ্বের ছায়ায় আশঙ্কা তৃণমূলে

ভবি যে ভোলার নয় বারবারই তা প্রমাণ করেছেন। দলীয় নেতৃত্বের হুঁশিয়ারি, নেত্রীর ধমক কিছুতেই যে কিছু যায় আসে না দেখিয়ে দিয়েছেন তাও। এবার দক্ষিণ দিনাজপুরের ভোটবাক্সেও ঢুকে পড়ল শাসক দলের সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৬ ০৩:৫৫
Share: Save:

ভবি যে ভোলার নয় বারবারই তা প্রমাণ করেছেন। দলীয় নেতৃত্বের হুঁশিয়ারি, নেত্রীর ধমক কিছুতেই যে কিছু যায় আসে না দেখিয়ে দিয়েছেন তাও। এবার দক্ষিণ দিনাজপুরের ভোটবাক্সেও ঢুকে পড়ল শাসক দলের সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

১৭ এপ্রিল ভোটের দিন এবং পরবর্তীতে তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র এবং তাঁর গোষ্ঠীর নেতাদের বিরুদ্ধে সরাসরি জোট প্রার্থীর হয়ে প্রচার ও ভোট করানোর অভিযোগ তুলেছেন গঙ্গারামপুরের প্রার্থী সত্যেন রায় এবং কুমারগঞ্জের প্রার্থী তোরাফ হোসেন মন্ডল গোষ্ঠীর নেতারা। পাল্টা সত্যেন রায় অনুগামী সোনা পাল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হরিরামপুর কেন্দ্রের প্রার্থী বিপ্লব মিত্রকে হারাতে সিপিএম প্রার্থীর হয়ে সরাসরি প্রচারের অভিযোগ তুলে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানানো হয়েছে।

গঙ্গারামপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সত্যেন রায়ের নির্বাচনী এজেন্ট তথা সেখানকার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অমলেন্দু সরকার দলনেত্রী এবং মহাসচিবকে লিখিতভাবে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ জানিয়েছেন। দল থেকে বিপ্লব মিত্রদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। অমলেন্দুবাবু অভিযোগ করেছেন, এরা দলে থাকলে গুন্ডাবাজি ও তোলাবাজির কাজ চলতে থাকবে। অন্যদিকে তাঁকে হরিরামপুরে হারাতে সত্যেন অনুগামী সোনা পাল সক্রিয় ছিলেন হয়েছে বলে বিপ্লববাবু পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘জিতলে তখন নিজের কৃতিত্ব। আর হেরে গেলে অন্যের দোষ। ওরাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’’

তৃণমূল সভানেত্রীকে চিঠি লিখে অমলেন্দুবাবু অভিযোগ করেছেন, দলের প্রার্থী সত্যেন রায়কে হারাতে ভোটের দিন গঙ্গারামপুরের প্রতিটি বুথে বাম জোটের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য বিপ্লব মিত্র ও তার ভাই পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র সক্রিয় ছিলেন। ভোটের দিন বিভিন্ন বুথে জোট প্রার্থীদের শিবিরে তাদের বসতে দেখা গিয়েছে বলেও অমলেন্দুবাবু অভিযোগ করেন।

ভোটের আগে থেকেই জেলার হিলি থেকে হরিরামপুর—৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের অধিকাংশ জায়গায় দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় এসে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে একসঙ্গে ভোটে কাজ করতে কড়া বার্তা দিয়ে গেলেও সমস্যা মেটেনি। মমতার হেলিকপ্টার উড়ে যেতেই হরিরামপুর কেন্দ্রে সোনা পাল বনাম বিপ্লব মিত্র গোষ্ঠীর মধ্যে কাজিয়া চরম আকার নেয়। প্রভাব পড়ে অন্য আসনগুলিতে।

এ দিকে কুমারগঞ্জের প্রার্থী তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তোরাফ হোসেন মন্ডলও বিপ্লব মিত্রগোষ্ঠীর অন্তত ৩০ জন দলীয় নেতার নাম দিয়ে জোট প্রার্থীর হয়ে প্রচার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

দুই গোষ্ঠীর এই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ঘটনায় তৃণমূলের সংসার ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। হারের সম্ভাবনা আড়াল করতেই ভোট শেষে এই কাজিয়া নতুন মাত্রা পেয়েছে কি না উঠছে সে প্রশ্নও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 conflict shadow
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE