Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জবাব দিলেন পূর্বস্থলীর ‘স্যার’

খুনের অভিযোগে জেলে ছিলেন দু’বছর দশ মাস। ফিরে আসেন বেকসুর খালাস পেয়ে। তবে পূর্বস্থলীর রাজনীতিতে কখনই প্রাসঙ্গিকতা হারাননি পারুলিয়া কুলকামিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক।

আবীরে লাল পূর্বস্থলী উত্তরের প্রার্থী প্রদীপ সাহা। ছবি: মধুমিতা মজুমদার।

আবীরে লাল পূর্বস্থলী উত্তরের প্রার্থী প্রদীপ সাহা। ছবি: মধুমিতা মজুমদার।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ০১:৫১
Share: Save:

খুনের অভিযোগে জেলে ছিলেন দু’বছর দশ মাস। ফিরে আসেন বেকসুর খালাস পেয়ে।

তবে পূর্বস্থলীর রাজনীতিতে কখনই প্রাসঙ্গিকতা হারাননি পারুলিয়া কুলকামিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক।

২০১১-য় বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। দু’হাজারের কিছু বেশি ভোটে হেরেও গিয়েছিলেন তৃণমূলের তপন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। পরে তৃণমূল নেতা সজল ঘোষ খুনে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে জেলে যান। জেলে থাকাকালীনই পঞ্চায়েত ভোটে তাঁকে প্রার্থী করার কথা ভাবে সিপিএম। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। বেকসুর খালাস পেয়ে এ বার আবারও চেনা প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ভোটের টক্করে নামেন। দু’হাজার আটশো ভোটে জিতেও যান পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের ওই প্রার্থী প্রদীপ সাহা।

সিপিএম নেতাদের দাবি, জেলা থাকাকালীনই পূর্বস্থলীতে প্রদীপবাবুর জনপ্রিয়তা টের পান তাঁরা। ঘোর সবুজ জমানাতেও প্রদীপবাবুর এলাকা কালেখাঁতলা পঞ্চায়েতে সবক’টি আসন জেতে সিপিএম। ছাড়া পাওয়ার পরেও এলাকায় তাঁকে নিয়ে উন্মাদনা ছিল। তাঁকে ভোটে দাঁড় করানোর দাবিও ছিল দলে। এ ছাড়াও তৃণমূল নেতা খুনের মামলা থেকে তাঁর বেকসুর খালাস পেয়ে যাওয়া সিপিএমের প্রচারের অন্যতম হাতিয়ারও হয়ে ওঠে। দেওয়ালে, পোস্টারে এক শিক্ষককে মিথ্যে ফাঁসানোর অভিযোগে সরব হয় সিপিএম। ফলও মেলে।

বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহনের প্রথম রাউন্ড থেকেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলে। প্রথম থেকে ১০ রাউন্ড পর্যন্ত প্রদীপবাবু এগিয়ে ছিলেন। তবে কখনও ব্যবধান হাজার খানেকের বেশি হয়নি। ১১ রাউন্ডে তপনবাবু এগিয়ে যান ১৬৬ ভোটে। ১৭ রাউন্ড পর্যন্ত চলে সাপ-লুডোর লড়াই। প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে ৩৫ ভোটে পিছিয়েও যান প্রদীপবাবু। তবে শেষ রাউন্ডে গণনা হয় কালেখাঁতলা পঞ্চায়েত এলাকা। জয় সুনিশ্চিত হয় ‘স্যারে’র।

পরে জয়ের শংসাপত্র হাতে প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। মানুষ তা মেনে নেননি।’’ সিপিএমের পূর্বস্থলী জোনাল কমিটির সম্পাদক সুব্রত ভাওয়ালের কথায়, ‘‘এলাকার মানুষ যে প্রদীপের উপর এই অন্যায়টা মেনে নেবেন না তা আমরা আগেই টের পেয়েছিলাম। এ দিনের রায় আর এক বার তা প্রমান করল।’’

পরাজয়ের পরে কালনা কলেজের গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসার সময় তপনবাবুর কিছু সমর্থককে তাঁকে ঘিরে কান্নাকাটি করতেও দেখা যায়। তপনবাবু শুধু বলেন, ‘‘এটা আশা করিনি।’’

আর স্যারের অনুগামীদের কথায়, ‘‘জানতাম, জবাব দেবেন স্যার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE