Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘বিয়ে সুরজিত্ আর পরমেশ্বরী কনীনিকাকে অনেক পরিণত করেছে’

অন্দরমহলের তুমুল জনপ্রিয়তা, ‘পর্ণমোচী’ থেকে ‘হামি’-র মুক্তি, স্বামী সুরজিতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে মুখ খুললেন কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।এক সময় কোথায় যে চলে গিয়েছিলাম, তা আমিই জানি না। কাজ না পাওয়ার সময়টায় যখন সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘চতুষ্কোণ’-এ অভিনয় করলাম, লোকে বলেছিল এইবার নাকি কাজ পাব!

কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ১৩:৪০
Share: Save:

প্রশ্ন: পরমেশ্বরী নাকি কনীনিকা কী বলব আপনাকে?

বহু মানুষের কাছেই আমি পরমেশ্বরী। এমনও শুনেছি আমি নাকি ‘অন্দরমহল’-এ অভিনয় না করলে লোকে জানতই না আমি অভিনয় করি! আসলে কাকেই বা দোষ দিই? এক সময় কোথায় যে চলে গিয়েছিলাম, তা আমিই জানি না। কাজ না পাওয়ার সময়টায় যখন সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘চতুষ্কোণ’-এ অভিনয় করলাম, লোকে বলেছিল এইবার নাকি কাজ পাব! দেখলাম সেটাও হল না।

প্রশ্ন: তারপরেই তো বিয়ে করলেন। তাও আবার এক প্রযোজককে। নায়িকারা কি প্রযোজককে বিয়ে না করলে বিলাসবহুল জীবন যাপন করতে পারেন না?

বাপরে! সুরজিতের সঙ্গে যখন প্রেম হয় জানতামই না ও ছবির প্রযোজক। ওই ছবির ডাবিং এর পরে জেনেছিলাম। থ্যাঙ্কফুলি ওঁকে প্রযোজক হিসেবে কোনও দিন দেখিনি। তবে এখানে একটা কথা বলতে চাই।

প্রশ্ন: বলুন না…

মানুষের জীবনে অসময়, অন্ধকার, ঝড় না উঠলে মানুষ আসল জীবনটাকে দেখতে পায় না। আর বিলাসিতা? আমি খুব অল্পে সন্তুষ্ট। জীবনে ভয়ঙ্কর স্ট্রাগল দেখেছি। আমি আর সুরজিত্ ভাঙা গড়ার মধ্যে দিয়ে নিজেদের দাম্পত্যকে গড়ে তুলছি। আমাদের দু’জনেরই দু’জনকে বুঝতে সময় লেগেছে। তবে বিয়ের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর বলতে পারি, সুরজিত আমায় অনেক সামলেছে।

প্রশ্ন: সুরজিতের আগে বিয়ে হয়েছিল। ছেলেও আছে। অসুবিধা হয়নি?

আমারও তো বিয়ের আগে প্রেম ছিল। সম্পর্ক ছিল।আর দ্রোণ খুব মিষ্টি ছেলে। ওঁর থেকেও আমি জীবনের অনেক কিছু শিখেছি। আপনি যে প্রশ্নটা করেছিলেন সেই কথায় ফিরি। সুরজিত আমার কাছে প্রযোজক নয়, আমার লাকি চার্ম। ও আসার পরেই আমি ‘অন্দরমহল’-এ কাজ পাই। বিয়ে, সুরজিত আর ‘অন্দরমহল’ কনীনিকাকে অনেক পরিণত করেছে। জীবনে লড়তে শিখিয়েছে। এর জন্য লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

প্রশ্ন: তাহলে বিষয়টা ঠিক কী হল? পরমেশ্বরী আর কনীনিকার জীবন কি এক?

না। অনেকটাই আলাদা। বলতে পারেন পরমেশ্বরী আর কনীনিকার প্রেক্ষিত এক। পরমেশ্বরী নিজের লড়াই যে ভাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চালিয়ে যায় আমি সেখান থেকেই শিখি। পরমেশ্বরীর জীবন আধ ঘণ্টার ধারাবাহিকে বাঁধা, আর কনীনিকার জীবন চব্বিশ ঘণ্টার।

প্রশ্ন: সামনে শিবপ্রাসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায়ের ‘হামি’ মুক্তি পাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে দেবের প্রযোজনায় অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ছবিতেও আপনি আছেন। ধারাবাহিক থেকে সিনেমা— এই উঠতি বাজারে কনীনিকা হঠাত্ নাচের অ্যাকাডেমি খোলার কথা ভাবলেন কেন?

সামনে কৌশিক করের ‘পর্ণমোচী’ বলে একটা খুব ইন্টারেস্টিং কাজ মুক্তি পাচ্ছে। এটা নিয়ে আগে নাটক করা হত। পরে ছবিতে আসে। প্লিজ সবাই দেখুন ছবিটা। এ বার আসি নাচের কথায়। এটা আমার বহু কালের স্বপ্ন। আমার জীবনে অভিনয়ের পরেই যদি কিছু থাকে তো সেটা নাচ। আমি খুব লাকি যে অর্ণব বন্দ্যপাধ্যায়, অনুজের মতো নৃত্যশিল্পীর সাহায্য পাচ্ছি। তিন জন মিলে লড়াই করার মজাটাই আলাদা। এর সঙ্গে ছবি না করার কোনও সম্পর্ক নেই।

টলি ক্লাবে স্বামী সুরজিতের সঙ্গে কনীনিকা।

প্রশ্ন: সময় দিতে পারবেন? শোনা যাচ্ছে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার ‘কণ্ঠ’তেও কাজ করবেন?

সেরকমই তো কথা আছে। আসলে উইন্ডোজের টিমটাই আলাদা। ওদের ইউনিটে ঢুকলে মনে হয় নিজের বাড়িতে ঢুকলাম। যা চাইব তাই পাব। আসলে ওখানে দুটো মাথা এত মজবুত যে, অন্য কোনও সমস্যাই হয় না। চিত্রনাট্যের ক্ষেত্রেও সবটা পরিষ্কার।

প্রশ্ন: কখনও মনে হয়নি এরকম একটা ইউনিটে পাওলি দাম বা জয়া আহসানের মতো যদি কেন্দ্রীয় চরিত্র পেতাম?

নাহ। আমি বরাবর অভিনেত্রী হতে চেয়েছি। সেই কোন ছোটবেলা থেকে আমি বলতাম, অভিনেত্রী হব। মানে যে কোনও চরিত্র যা মনে দাগ কাটার ক্ষমতা রাখে। ইন্ডাস্ট্রি বা কারও প্রতি আমার কোনও ক্ষোভ নেই। ক্ষোভ থাকলে কি কাজ পাব? পাব না তো!

প্রশ্ন: ভাল চরিত্র না পাওয়ার আফসোসও নেই?

হুমম! মাঝে মাঝে রাগ হয়। ইশ! এত ভাল নির্দেশক আছেন কেউ আমায় ডাকছেন না! পড়ে ভাবি, সবাইকেই তো লড়াই করতে হচ্ছে আমাকেও হবে। সময় হলে নিশ্চয়ই ডাক পাব। সবাই তো থাকব। আর আমার বয়স ৪০-৪৫ হোক, তারপর আরও ভাল কাজ পাব নিশ্চই। অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডে তো বেশিরভাগ সম্মানিত অভিনেত্রীর বয়স ৪০-এর কোঠায়। অনেক সময় পড়ে আছে।

প্রশ্ন: সম্প্রতি চান্দ্রেয়ীর সঙ্গে রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠান করলেন। এই যে চান্দ্রেয়ী, অনন্যা, শ্রীলেখা এরা এত ভাল অভিনয় করা সত্ত্বেও সে ভাবে জায়গা পায়নি, কী মনে হয়?

যে যার মতো করে পেয়েছে। প্রত্যেকেই এরা জাত অভিনেত্রী। কিন্তু এই ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলাকেন্দ্রিক ছবি এখনও কম হয়। আমাদের প্রত্যেককেই রোজ মাঠে নামতে হবে। সেঞ্চুরি না হোক হাফ সেঞ্চুরি করে যেতেই হবে। এই জগতের এটাই নিয়ম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE