কীর্তি কুলহারি।
প্রশ্ন: ‘ব্ল্যাকমেল’ পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে ছবি। আপনি নিজে কি পরকীয়ায় বিশ্বাসী?
উত্তর: আচ্ছা বলুন তো আমি কে এই বিষয়ে মতামত দেওয়ার? আমি এক জন অভিনেত্রী। আমি ‘ব্ল্যাকমেল’-এ এমন এক মহিলার চরিত্রে অভিনয় করেছি যে তার স্বামী ইরফান খান ছাড়া এক পুরুষের প্রেমে পড়ে। সেখান থেকে ব্ল্যাকমেলের প্রসঙ্গ আসে। ছবিটা ক্রমশ থ্রিলারের দিকে মোড় নেয়। বলতে পারেন এটা ব্ল্যাক কমেডি। অসাধারণ চিত্রনাট্য। সেই কারণেই আমার এই ছবিতে কাজ করা। আর পরকীয়া মানুষের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। এটা বোঝানোর জন্য আমার এই চরিত্র করা। যে এটার মধ্য দিয়ে গেছে সেই বলতে পারবে কেন এমন হল? আমাদের সমাজ বড্ড বেশি জাজমেন্টাল। সব কিছুকেই সমালোচনা আর খারাপ চোখে দেখে অভ্যস্ত। এই মানসিকতা ছবির মাধ্যমে যদি একটু অন্তত দূর হয়, সেই কারণে ‘ব্ল্যাকমেল’ ছবিটা আমার করা।
প্রশ্ন: শোনা যায় আপনি নাকি খুব বেছে বেছে চরিত্র করেন?
উত্তর: আপনি খেয়াল করলেই দেখবেন ‘শয়তান’ থেকে ‘ব্ল্যাকমেল’— আমি কিন্তু কোনও চরিত্র রিপিট করিনি। তাতে কম ছবি হোক আপত্তি নেই। বড় ব্যানারে কাজ না পাই আপত্তি নেই। আমার কাছে আমার মতামত, আমার পছন্দ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: বলা হয়, ‘পিঙ্ক’ কিন্তু তিন মেয়ের গল্প হলেও এক নায়িকার ছবি।
উত্তর: এটা তো দর্শক বলবে। আসলে নায়িকা, সেকেন্ড লিড, থার্ড লিড এই ভাবে আর ছবি দেখার দিন নেই। এত অন্য ধারার ছবি হচ্ছে। আমি তো মনে করি সিনেমার সব চরিত্রই সমান। আর চরিত্ররাই তো গল্পটা পর্দায় বোনে।
আরও পড়ুন, ‘বিয়ের পর পঞ্জাবি-দক্ষিণী, দু’ধরনের খাবারের সঙ্গে ব্যালান্স করতে হয়’
প্রশ্ন: আপনি পার্টি করেন না। পেজ থ্রিতেও মুখ দেখান না। কিন্তু অমিতাভ বচ্চন থেকে ইরফান খান, সকলের সঙ্গে ইতিমধ্যেই অভিনয় করে ফেলেছেন!
উত্তর: সত্যি আমি খুবই তৃপ্ত। পিঙ্ক-এর সময় অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অভিনয়, আড্ডা, আমার কেরিয়ারে, আমার জীবনে ইতিহাস হয়ে থাকবে। ওঁকে দেখে সত্যি চমকে উঠি আজও। অভিনয় সংক্রান্ত যে কোনও কাজে উনি যে ভাবে ইনভল্ভ হয়ে যান তাতে মনে হয় এটাই ওঁর প্রথম ছবি, আর সহ-অভিনেতা হিসেবে উনি অসম্ভব সাপোরটিভ। অন্য দিকে ইরফান হছে সেই অভিনেতা যাকে বলা যায় ‘অ্যাক্টর অ্যাট হার্ট’। স্টার নয়, আমার কাছে এই অভিনেতারাই বিস্ময়ের। ইরফানকে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য অনেক দূর হাঁটতে হয়েছে। নিজেকে ভাঙতে হয়েছে।
প্রশ্ন: কিন্তু ইরফান তো অসুস্থ।
উত্তর: হ্যাঁ, আমি ওঁকে কয়েক বার মেসেজ করেছি। কিন্তু উত্তর পাইনি কোনও। উনি নিশ্চয়ই উত্তর দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। বা এটাও হতে পারে যে, উনি উত্তর দেননি।
‘আমার কাছে আমার মতামত, আমার পছন্দ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রশ্ন: মানে?
উত্তর: দেখুন, ইরফান আমার বন্ধু নয় যে আমি মেসেজ করলেই ওঁকে উত্তর দিতে হবে।
প্রশ্ন: আপনি খুব র্যাশনাল!
উত্তর: ইন্ডাস্ট্রিতে থাকতে গেলে। কাজ করতে গেলে এ রকমই থাকতে হবে।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে নেপোটিজমের মুখোমুখি হয়েছেন নিশ্চয়ই?
উত্তর: হ্যাঁ। শুধু বলিউড নয়, যে কোনও ইন্ডাস্ট্রিতেই নেপোটিজম থাকবে। চলবে। যে যার নিজের লোককে সুযোগ করে দেবে। তার মধ্যেই কাজ করতে হবে। পজিটিভ ভাবতে হবে। দেখুন, আমি চাই আমার প্রতিটি ছবি সুপারসাকসেসফুল হোক। কারণ আমার ছবির সাকসেসের উপরেই আমার পরের কাজ পাওয়া, অভিনয় করার সুযোগ আসবে।
আরও পড়ুন, প্রিয়ার নতুন ফোটোশুটের ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়
প্রশ্ন: আর যদি ফ্লপ হয়?
উত্তর: ফ্লপ হলে মেনে নেব। এটাও তো জীবনের অংশ। অন্য ভাবে ভাবব। কাজ করে যাব।
প্রশ্ন: বিবাহিত হিসেবে কাজ পেতে অসুবিধে হয় না?
উত্তর: একেবারেই না। সময় বদলাচ্ছে। মানুষ নিশ্চয়ই আমার অভিনয় দেখতে দেখতে ভাববে না, আমি বিবাহিত কি না? বরং ভাববে আমি কেমন অভিনয় করছি!
প্রশ্ন: পিঙ্ক গার্ল থেকে ইন্দু সরকার নামে নিজের জার্নিকে কী ভাবে দেখেন?
উত্তর: আমি খুব খুশি। আপাতত ঠান্ডা হয়ে শান্তিতে আরও কাজ করতে চাই।
আরও পড়ুন, ‘মিস্টার ন্যাশনাল ইউনিভার্স’ হলেন চা ওয়ালার ছেলে
প্রশ্ন: কাজের ক্ষেত্রে একটা বিষয় জানতে চাই। আপনি বেশির ভাগ চরিত্রে সাহসী, প্রতিবাদী মহিলার অভিনয় করেছেন। আপনি কি আক্টিভিস্ট?
উত্তর: নাহ্। একেবারেই না। এ বছর থেকে দেখবেন ওই সাহসী, লড়াকু চরিত্র আর করছি না। এই যে ব্ল্যাকমেলে এক জন মহিলা বিবাহিত, অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, এখানে আমি প্রতিবাদী নই। আমি চাইব কলকাতার মানুষ, আনন্দবাজার ডিজিটালের সকলে ছবিটা দেখুন। আর প্লিজ, আমায় জানান কেমন লাগল ‘ব্ল্যাকমেল’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy