Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

প্রযোজক অনুষ্কাকে নিয়ে কেমন অভিজ্ঞতা বাঙালি পরিচালকের

কলকাতার চেতলায় কেটেছে ছেলেবেলা। স্কুল নব নালন্দা। তারপর কলেজ সাউথ সিটিতে। আপাতত দেশপ্রিয় পার্কে থাকেন বাবা-মা। আর তাঁর ঠিকানা মুম্বই। গত ১০ বছর ধরে বাণিজ্যনগরীতেই বাসা বেঁধেছেন। বহুদিন পরে ফিরেছেন নিজের শহরে। ফিরেছেন ‘পরীক্ষার রেজাল্ট’ বেরোনোর টেনশন নিয়ে। কারণ ২ মার্চ মুক্তি পাচ্ছে পরিচালক হিসেবে তাঁর ডেবিউ ফিল্ম ‘পরী: নট আ ফেয়ারিটেল’। তিনি প্রসিত রায়। প্রথম ছবির প্রোমোশনের ঝটিতি সফরেও মায়ের হাতের রান্না কিন্তু মিস করেননি।পরিচালক হিসেবে তাঁর ডেবিউ ফিল্ম ‘পরী: নট আ ফেয়ারিটেল’। তিনি প্রসিত রায়। প্রথম ছবির প্রোমোশনের ঝটিতি সফরেও মায়ের হাতের রান্না কিন্তু মিস করেননি।

সে অর্থে প্রফেশনাল ট্রেনিং ছিল না প্রসিতের। ছবি: সংগৃহীত।

সে অর্থে প্রফেশনাল ট্রেনিং ছিল না প্রসিতের। ছবি: সংগৃহীত।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৮ ১০:১৪
Share: Save:

শুরুর শুরু
২০০৭। পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ নিয়ে মুম্বই গিয়েছিলেন প্রসিত। ওখানে গিয়ে বলিউডের কাজ দেখে ওখানে কাজ করার ইচ্ছে হয়েছিল। যে স্টুডিওতে গিয়েছিলেন, সেখানে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে আলাপ হয়। সেখানে অ্যাস্টিস্ট করার জন্য লোকের খোঁজ চলছিল। সেই শুরু। অ্যাড ফিল্মে অ্যাসিস্ট করতে করতেই আমির খান প্রোডাকশনসের কাজ— ‘জানে তু ইয়া জানে না’। তার পর রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার সঙ্গে ‘দিল্লি সিক্স’ করেছেন। আশুতোষ গোয়ারিকরের সঙ্গে দুটো ছবি। ঝুলিতে বিশাল ভরদ্বাজের সঙ্গেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। অনুষ্কার প্রোডাকশনের ‘ফিলাউরি’তে অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করার সময়ই ‘পরী’র স্ক্রিপ্ট অনুষ্কাকে দেখানোর সুযোগ আসে।

প্রথম ছবিই ভূতের কেন?
প্রসিতের কথায়, ‘‘যে ধরনের ভূতের ছবি দেখতে আমরা পছন্দ করি তা ভারতে তৈরি হয় না। তাই ভেবেছিলাম যেটা আমরা দেখতে পছন্দ করব, তেমন একটা ভূতের ছবি করব ভারতীয় ভাষায়।’’ তা ছাড়া প্রসিতের ছোটবেলার গল্প পড়ার বড় অংশ জুড়ে ছিল ভূত। আনন্দমেলা, শুকতারা, পূজাবার্ষিকী ছিল প্রিয়। ‘‘আমি ঠাকুমা, দিদাকে জ্বালিয়ে খেতাম, একটা গল্প বল, একটা ভূতের গল্প বল। তবে এটা প্ল্যান করে হয়নি’’ হেসে বললেন পরিচালক।

বাড়ির পরিবেশেই ছিল সিনেমার পোকা
প্রসিত শেয়ার করলেন তাঁর দাদু গীতিকার প্রণব রায়ের কথা। আধুনিক বাংলা গানের সূত্রধর প্রণব ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্টান্ট’-এর মতো ছবির স্ক্রিপ্ট লিখেছিলেন। প্রসিতের জন্মের অনেক আগে দাদু মারা গেলেও বাড়িতে বরাবরই সাহিত্যচর্চার পরিবেশ ছিল। “এখনও বাবা মুম্বইতে পূজাবার্ষিকী আমাকে কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দেয়’’ মিঠে স্মৃতির পাতায় হাত বোলালেন প্রসিত।

প্রফেশনাল ট্রেনিং
না! সে অর্থে প্রফেশনাল ট্রেনিং প্রসিতের ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘২০০৫-০৬ নাগাদ এসআরএফটিআইতে চেষ্টা করেছিলাম। ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল। তারপর কলকাতায় ক’দিন অনীক দত্তর সঙ্গে কাজ করি। অনেক কিছু শেখা অনীকদার কাছ থেকেই। পরে যে সব ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করেছি সকলের কাছ থেকেই কিছু না কিছু শিখেছি।’’

পরিচালকের স্বাধীন কাজে কোনও ভাবেই নাকি হস্তক্ষেপ করেননি নায়িকা। ছবি: সংগৃহীত।

অনুষ্কা ডিরেক্টরস্ অ্যাক্টর
হতে পারে ‘পরী’র প্রযোজক অনুষ্কা শর্মা। কিন্তু পরিচালকের স্বাধীন কাজে কোনও ভাবেই নাকি হস্তক্ষেপ করেননি নায়িকা। প্রসিত শেয়ার করলেন, ‘‘এটা একটা ক্রিয়েটিভ কোলাবোরেশন। সবার মতামতই আমি শুনেছি। কিন্তু এন্ড অফ দ্য ডে আমার যেটা ঠিক মনে হয়েছে সেটাই করেছি। আমার তো মনে হয়েছিল অনুষ্কার মতো দেখতে কেউ সেটে ছিল। অনুষ্কা নয়। অভিনয়ে যে ভাবে নিজেকে ঢেলে দিয়েছিল ভাবা যায় না।’’

বং কানেকশন
পরিচালক বাঙালি। ডিওপি জিষ্ণু ভট্টাচার্য, বাঙালি। মিউজিক ডিরেক্টর অনুপম রায়, বাঙালি। পরিচালকের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে গল্প লিখেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি। অভিনয়ে পরমব্রত, ঋতাভরী, শান্তিলাল, মিঠু— একাধিক বাঙালি নাম। লিস্ট করতে করতেই প্রসিত ধরিয়ে দিলেন, ‘‘আমার সাউন্ড ডিজাইনার মালায়লি, অনিশ জন। কিন্তু বড় হয়েছে কলকাতায়। আর ও নিজেকে বাঙালিই ভাবে।’’ এত বাঙালিকে নিয়ে কাজ করলেন, বলিউডে কি শিল্পী কম পড়িয়াছে? হাসতে হাসতে প্রসিত ব্যখ্যা করলেন, ‘‘এটা গল্পের ডিমান্ড। তবে ছোট থেকে এখানে বড় হয়েছি তো। ফলে যখন গল্পটা লিখছিলাম এই মুখগুলো ব্যাক অফ দ্য মাইন্ড সব সময়ই ছিল।’’

প্রসিতের মতে, ‘পরী’ অ্যাটমোসস্ফিয়ারিক হরর। যেটা খুব একটা বেশি ভারতে হয়নি। ছবি: সংগৃহীত।

নেক্সট প্রজেক্ট
নেক্সট প্রজেক্ট নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। তবে খোলসা করতে চাইলেন না প্রসিত। তবে পরের কাজও হিন্দিতেই করার ভাবনা রয়েছে তাঁর। আর টলিউড? প্রসিতের কথায়, ‘‘বাংলার জন্য তেমন গল্প হতে হবে। এখন তো ইলেকট্রনিক মিডিয়ামের যুগ। গল্পগুলো ইউনিভার্সাল করতে হবে। সব কিছু গ্লোবাল অডিয়েন্সের কথা ভেবে করতে হবে।’’

‘পরী’র ইউএসপি
প্রসিতের মতে, ‘পরী’ অ্যাটমোসস্ফিয়ারিক হরর। যেটা খুব একটা বেশি ভারতে হয়নি। ‘‘ট্রেলারে যেটা দেখছেন সেটা কিছুই নয়’’ বেশ কনফিডেন্ট দেখাল ডেবিউ পরিচালকের অ্যাটিটিউড।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE