বিগ বি’র বার্থ ডে-তে তাঁকে শুভেচ্ছা জানালেন অনামিকা মজুমদার। কেবিসি ৯-এর প্রথম কোটিপতি অনামিকা।
জামশেদপুরে ফিরে বাড়ির টিভিতে যখন এপিসোডটা দেখছিলাম, তখন গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল। একে কৌন বগেনা ক্রোড়পতির ‘হট সিট’, তার উপর সামনে বসে অমিতাভ বচ্চন! ওঁকে সামনে থেকে দেখতে পাওয়াটা বিরাট ভাগ্যের ব্যাপার। অত বড় একটা মানুষ।
কুইজ চলাকালীন অসম্ভব নার্ভাস লাগছিল মাঝে মাঝে। কিন্তু বচ্চন-স্যর নিজেই কথা বলে, গল্প করে আমাকে সাহস জুগিয়ে চলেছিলেন। ভয় কাটিয়ে দিচ্ছিলেন। তিনিও চাইছিলেন আমি ঠিক ঠিক উত্তর দিই আর টাকা জিতি।
আরও পড়ুন, অমিতাভের জন্মদিনে কী প্ল্যান করল কলকাতার ফ্যানেরা
আরও পড়ুন, অমিতাভের সঙ্গে স্পেশ্যাল ছবি শেয়ার করলেন নভ্যা
যখন এক কোটি টাকার প্রশ্নটা আমার সামনে এল, তখন টেলিভিশনের ওই রকম জনপ্রিয় একটা শো-এর কথা আমার মাথাতেই ছিল না। আমি চারপাশে ঘুরতে থাকা ক্যামেরা, ঝলমলে আলো কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। সামনে বসে থাকা অমিতাভ স্যরকেও অনেকটা মিস করে গিয়েছি তখন। পরে বাড়িতে এসে এপিসোডটা দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, আচ্ছা উনি এ রকম ভাবে হাত রাখেন, এ ভাবে তাকিয়ে বলছিলেন। বাহ!
এক কোটির প্রশ্নটা ছিল- ‘ভারতীয় সংবিধানের অলঙ্করণ করেছিলেন কোন শিল্পী’। আমি তখন উত্তর খুঁজতেই ব্যস্ত। আমার এনজিও ‘ফেইথ ইন ইন্ডিয়া’র জন্য আমার অনেক কিছু করতে হবে। তাই টাকার দরকার। ওই মুহূর্তটায় খুব চাপে ছিলাম।
নিজের এনজিও-র শিশুদের মাঝে অনামিকা। ছবি: অনামিকা মজুমদারের সৌজন্যে।
উত্তরটা ঠিক হওয়ার পর বচ্চন-স্যরের চিৎকারেই আমার হুঁশ ফিরল। হঠাৎ আমি বুঝলাম আমি ক্রোড়পতি হয়ে গিয়েছি!
দারুণ অভিজ্ঞতা। দারুণ। আমি কোনও দিন ভুলতে পারব না।
তবে অমিতাভ বচ্চন একই সঙ্গে অসম্ভব প্রফেশনাল। ফ্লোরে ঢোকার পর থেকে নিজের ডায়ালগ, কী বলবেন, কী করবেন— এ নিয়েই ভাবতে থাকেন। এক দম সময় নষ্ট করেন না। শুধু কাজ করতে ভালবাসেন। অসম্ভব মুখস্থ করার ক্ষমতাও আছে ওঁর। টিভিতে দেখলে মনে হয় ব্রেকের সময়টা অনেক। কিন্তু আসলে তা না। ওই কিছু ক্ষণের মধ্যেই কত কিছু মুখস্থ করে নিতেন তিনি। এক শটে সব হয়ে যাচ্ছিল।
অমিতাভ বচ্চন তো কলকাতার জামাইবাবু। আমারও কলকাতা খুব ভাল লাগে। নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাটের দোকানগুলো দারুণ লাগে। কলকাতা-বোলপুরে আমাদের আত্মীয়রাও রয়েছেন।
খেলা শেষ হওয়ার পর মা, আমি ও আমার হাজব্যান্ড বচ্চন-স্যরের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কেবিসি’র লোকজন সেখানে আমাদের ছবিও তুলেছেন। ওই ছবিগুলো মেল করে পাঠাবে ওঁরা। ঝাড়খণ্ডের বিখ্যাত ছৌ-নাচের আদলে দুর্গার একটা মুখোশ উপহার দিয়েছি স্যরকে। উনিও আমার মেয়ের জন্য অটোগ্রাফ দিয়েছেন।
কী ভাল বাংলা বলেন অমিতাভ স্যর। মা ঢুকতেই উনি বললেন, ‘আসুন আসুন, নমস্কার। কেমন আছেন...’! মনে হচ্ছিল, বাঙালি কোনও জমিদার বাড়ির কর্তা কথা বলছেন। কী গম্ভীর আর কী সুন্দর গলার আওয়াজ ওঁর।
আমি তো কোনও দিন ওই দিনটা ভুলতে পারব না। ১১ অক্টোবর অমিতাভ স্যরের জন্মদিন। আমার জীবনের অত বড় দিনে উনি ছিলেন আমার সঙ্গে। আমি চাই প্রতি জন্মদিনে ওঁর বয়স এক বছর করে কমে যাক। সারা জীবন আপনি এই রকমই থাকুন।
অনুলিখন: রাইমা চক্রবর্তী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy