Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Celebrity Interview

গৌরব আমার প্রথম প্রেম নয়, বললেন ঋদ্ধিমা

সামনেই বিয়ে। দীর্ঘদিনের বন্ধু গৌরব চক্রবর্তীর সঙ্গে আগামী ২৮ নভেম্বর গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন অভিনেত্রী ঋদ্ধিমা ঘোষ। পাশাপাশি চলছে অভিনয়ও। সবকিছু নিয়ে খোলামেলা আড্ডা দিলেন তিনি। শেয়ার করলেন সিক্রেটও। সামনেই বিয়ে। দীর্ঘদিনের বন্ধু গৌরব চক্রবর্তীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন অভিনেত্রী ঋদ্ধিমা ঘোষ। পাশাপাশি চলছে অভিনয়ও। সবকিছু নিয়ে খোলামেলা আড্ডা দিলেন তিনি। শেয়ার করলেন সিক্রেটও।

হবু দম্পতি। ছবি: ঋদ্ধিমার ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।

হবু দম্পতি। ছবি: ঋদ্ধিমার ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ১২:৫১
Share: Save:

বিয়ের শপিং কমপ্লিট?

ঋদ্ধিমা: না, চলছে এখনও। আমার তো মনে হচ্ছে, বিয়ে ইজ লাইক বা বিগ বার্থ ডে পার্টি, প্রচুর গিফট পাওয়া যায়। সবাই এটাকে বিগ ডিল করছে। কিন্তু আমার কাছে নর্মাল।

আরও পড়ুন, ‘ডিভোর্সের পর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ভয় তৈরি হয়েছে’

বিয়ের জন্য তো কিছু আলাদা কেনাকাটা হবেই, সেটা এনজয় করছেন তো?

ঋদ্ধিমা: আমি শপিং পছন্দই করি। কিন্তু আমার টাইপের জিনিস হলে। মানে, শাড়িটা একটু চাপের। কিন্তু আমার মায়ের কাছে শাড়িটা খুব ইমপর্ট্যান্ট। তাই প্রচুর শাড়ি কিনতে হচ্ছে, কিনেছিও। তাই ওটা বাদে বাকিটা এক্সাইটিং।

গৌরবের সঙ্গে দেখা হয়েছিল কী ভাবে?

ঋদ্ধিমা: ওর সঙ্গে দেখা হয়েছিল কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘রংমিলান্তি’ ছবির সেটে। ওই ছবিতে যে পাঁচ জন মূল চরিত্রে ছিলাম, তখন থেকেই আমাদের মধ্যে খুব বন্ধুত্ব হয়ে যায়। আসলে শুরু হয়েছিল একটা কনট্র্যাক্টের বন্ধুত্ব। কৌশিকদা বলেছিল আমি একটা রেইকি করতে যাচ্ছি, তোরাও চল। কারণ বন্ধুত্বটা না হলে ছবিটা হওয়া মুশকিল। সেখান থেকে শুরু। এখন তো গৌরব আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমরা আগে বন্ধু। সেখান থেকে রিলেশনশিপটা ম্যাচিওর করে।

গৌরব কি আপনার ফার্স্ট লভ?

ঋদ্ধিমা: নো। গৌরব ইজ নট মাই ফার্স্ট লভ। এর আগে ম্যাচিওর্ড রিলেশনশিপ ছিল। কিন্তু সম্পর্কটা যে নেই, তাতে আমি খুশি। (হা হা)…বাঁচা গিয়েছে, থ্যাঙ্ক ইউ।

আপনাদের মধ্যে কে ডমিনেট করেন?

ঋদ্ধিমা: আমিই ডমিনেট করি। তবে ডিপেন্ডস অন দ্য সিচুয়েশন।

গৌরব খুব প্যাম্পার করেন আপনাকে?

ঋদ্ধিমা: আমিও করি। দু’জনেই প্যাম্পার করি। ও যখন রেগে যায় তখন শান্ত করতে বেশ এফর্ট দিতে হয়।

গৌরব রেগে যান…?

ঋদ্ধিমা: (প্রশ্ন শেষ করতে না দিয়েই) কেউ তো এটা বিশ্বাসই করে না! সকলে এটাই বলে, গৌরব রাগ করে? এটা হতেই পারে না!

আরও পড়ুন, ওনিরের হাত ধরে সৌরভের বলিউড ডেবিউ

গৌরবকে দেখে কিন্তু খুব শান্ত মনে হয়।

ঋদ্ধিমা: ও শান্ত নিশ্চয়ই, কুল হেডেড। কিন্তু ওর একটা আলাদা দিকও রয়েছে। ওকে দেখে হয়তো মনে হয় বয়সের তুলনায় অনেক বেশি ম্যাচিওর্ড। কিন্তু তা ঠিক নয়। ও ওর বয়সেরই একটা ছেলে। প্রচন্ড বদরাগী। ও রাগ করতে পারে সেটা কেউ এক্সপেক্ট করে না। এটা কিন্তু ওর একটা সিক্রেট, আমি বলে দিলাম (হাসি)।

গৌরবের পরিবারের সকলের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক আপনার?

ঋদ্ধিমা: খুব ভাল। ওর বাবা মাকে বেণু কাকু আর মিঠু কাকিমা বলি। ওরা কখনও আলাদা করে দেখে না আমাকে। আসলে ওরা সবাই খুব ভাল। পিকচার পারফেক্ট বা আইডিয়াল ফ্যামিলি বলতে যা বোঝায় ওরা তাই।

বিয়ের পর কি ওঁদের বাবা-মা বলে ডাকবেন?

ঋদ্ধিমা: বিয়ের পর তো বাবা-মা বলেই ডাকা উচিত। একটু হয়তো সময় লাগবে। আসলে বাবা-মা শব্দ দুটো এত ইমপর্ট্যান্ট। একটু চাপের বিষয়টা। তবে আমি চেষ্টা করব। আমি তো বেণুকাকুকে ‘দাদা’ বলে ডাকতাম।

সেকি! হবু শ্বশুরকে ‘দাদা’ বলতেন?

ঋদ্ধিমা: আমার প্রথম ছবিতে বেণুকাকু ছিল। তখন বেণুদা বলতাম। আসলে ইন্ডাস্ট্রির সবাই তো দাদা। তার পর গৌরব যখন আমার বন্ধু হল, তখন বন্ধুর বাবাকে তো আর দাদা বলতে পারি না। তখন কাকু হল। এ বার হয়তো বাবা বলব।

অভিনয়ের ক্ষেত্রে ওঁদের থেকে কখনও কোনও পরামর্শ পেয়েছেন?

ঋদ্ধিমা: না! আসলে ওরা একেবারেই ইন্টারফেয়ারিং নন। গৌরবের ক্ষেত্রেও কখনও এটা করা উচিত বা এটা করো না। এ সব বলেন না। ওঁরা চান তোমরা নিজেরটা নিজে করে শেখো। না হলে তুমি শিখবে না ঠিক করে। ডিপেন্ডেন্ট হয়ে পড়বে। এটা একটা দারুণ জিনিস।

আরও পড়ুন, ‘মন এবং শরীর থেকে মেদ সরানোর চেষ্টা করেছি’

গৌরব নিশ্চয়ই পরামর্শ দেন…?

ঋদ্ধিমা: গৌরব আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্টার। আমরা একে অপরকে হেল্প করি। কাজ নিয়ে আলোচনা করি। একই ইন্ডাস্ট্রিতে থাকলে এটা একটা বড় সুবিধে।

আপনি ছোট থেকেই কি অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন?

ঋদ্ধিমা: ছোটবেলায় মাধুরী দীক্ষিতকে টিভিতে দেখে ভাবতাম, আমি এমনটা হতে চাই। টু বি অ্যান অ্যাকট্রেস। পরে যত বড় হয়েছি বুঝেছি অভিনয়টা কী? ফাইনালি যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কাজটা করলাম তখন বুঝলাম আসলে অভিনয়টা কী! কেরিয়ারের শুরুর দিকে ‘অভিনয়’ করতাম। পরে বুঝলাম ‘অভিনয়’ নয়, আসলে বিহেভ করতে হবে। সেটা আমার কাছে একটা বড় শিক্ষা।

কিন্তু আপনার হাতে তেমন কাজ কোথায়?

ঋদ্ধিমা: আমি প্রথম থেকেই খুব বেছে কাজ করে এসেছি। শুধুমাত্র টাকা রোজগার করার জন্য কাজ করতে চাই না। আমি কিন্তু ‘রংমিলান্তি’র আগেও প্রচুর মেনস্ট্রিম ছবি করেছি। সেটা হয়তো দর্শক জানেন না। হরনাথ চক্রবর্তী, বীরেশ চট্টোপাধ্যায়, বাসু চট্টোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু সেই এক্সপোজারটা আগে কখনও পাইনি। সেই স্ট্রাগলটা করতে হয়েছে। তবে তার জন্য কোনও খারাপ লাগা নেই।

আপনার কোনও আক্ষেপ রয়েছে?

ঋদ্ধিমা: আক্ষেপ বলুন বা খারাপ লাগা— দুটো বিষয় আমি বলতে চাই। আমার মনে হয়, আমি নিজেকে প্রমাণ করেছি। আমার সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির কারও খারাপ সম্পর্ক নেই। কিন্তু তার পরও মনে হয়, আমি যা ডিজার্ভ করি সেটা পাইনি। আমাকে নিয়ে সে ভাবে ভাবা হয়নি।

এই আক্ষেপের কথা বলেছেন কাউকে?

ঋদ্ধিমা: কৌশিকদা, সৃজিতদা, অরিন্দমদা— এদের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক। আমি বলেছি ওঁদের। জানি না কেন এমন হয়?

আরও পড়ুন, দেব, জিত্, প্রসেনজিতদের লড়াইয়ে জিতলেন কে?

কী উত্তর দিলেন পরিচালকরা?

ঋদ্ধিমা: অনেকে বলেন, আমি যে স্ক্রিপ্টটা লিখেছি সেখানে তোর মতো কোনও চরিত্র নেই। দেখুন, আমি ওদের ব্লেম করছি না। কারণ আজ যদি লিড অ্যাকট্রেস হিসেবে আবিরদা বা যিশুদার বিপরীতে আমাকে কাস্ট করেন, আমার সঙ্গে আবিরদার বয়সের ডিফারেন্স কিন্তু অনেকটাই। ফলে অনস্ক্রিন অনেকটাই ছোট দেখতে লাগবে বলে আমার মনে হয়। সেটা হয়তো একটা কারণ হতে পারে।

তা হলে কাদের সঙ্গে আপনাকে মানাবে বলে মনে হয়?

ঋদ্ধিমা: গৌরব, সাহেব, ইন্দ্রাশিস— এদের সঙ্গে হয়তো ম্যাচ করব আমি। আমাদের এখানে ইয়ং জেনারেশনকে নিয়ে তো ভাবাই হয় না। মুম্বইতে ইয়াংদের নিয়ে কত কাজ হচ্ছে! মেনস্ট্রিম আর নন মেনস্ট্রিম এর বিভেদটাও মুম্বইতে এখন আর নেই। আমরাও কেন সেটা ভেঙে দিতে পারি না? আমি আমাদের ব্যাচটার কথা বলছি। আমরা ক’জন সে ভাবে কাজ করছি বলুন তো? অনেকেই বলেন, ও এখন কাজ করছে না বা ওর তো কাজ নেই। কিন্তু আমাদের কি আদৌ অফার করা হচ্ছে?

আর দ্বিতীয় আক্ষেপ?

ঋদ্ধিমা: ইন্ডাস্ট্রির অনেকের মাইন্ড সেট হয়ে গিয়েছে গৌরব আর ঋদ্ধিমা একসঙ্গে কাজ করবে। সেটা তো ঠিক নয়। আমি দু’বছর আগে লাস্ট গৌরবের সঙ্গে কাজ করেছি। খুব দুর্ভাগ্যজনক, লোকে এমন ভাবে। তবে এটা সত্যি নয়। দেখুন কারও ধারণা পাল্টানোর জন্য আমরা নিজেদের বদলে ফেলব না। কোনও পরিচালক যদি আমাদের একসঙ্গে কাস্ট করেন সেটা আলাদা কথা। কিন্তু আমরা তো কেউ কাউকে পুশ করি না। গৌরবকে না নিলে আমি কাজ করব না। বা উল্টোটা— সেটা তো একেবারেই নয়। এটা ভেবে নেওয়াটা খুব আনফেয়ার।

ছবি: অনির্বাণ সাহা।

লোকেশন সৌজন্যে: হোয়াটস্‌ আপ কাফে, সাদার্ন অ্যাভিনিউ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE