প্রতীকী ছবি।
স্বরে বাসা বেঁধেছিল মারণ রোগ। আবার, সেই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্বরই হয়ে উঠেছিল তাঁর অন্যতম হাতিয়ার। তীব্র ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছিল রোগ। সেই লড়াই এ বার আসছে রুপোলি পর্দায়।
বছরখানেক আগে মারা গিয়েছেন বিভূতি চক্রবর্তী। রেলের অফিসার বিভূতিবাবুর শ্বাসনালীতে ক্যানসার ধরা পড়েছিল ১৭ বছর আগে। অস্ত্রোপচারের পরে তিনি হারিয়েছিলেন গলার স্বর। দীর্ঘ লড়াই চালিয়ে, খাদ্যনালীর সাহায্যে ফের ফিরে পেয়েছিলেন সেই আওয়াজ। নিজে সুস্থ হয়েই থামেননি বিভূতিবাবু। শ্বাসনালীতে ক্যানসার হলে কী ভাবে অস্ত্রোপচারের পরে খাদ্যনালীর মাধ্যমে আওয়াজ ফিরে পাওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে বই লিখেছিলেন। ক্যানসার আক্রান্তদের থেরাপিও করাতেন।
এ দেশে ফি-বছর অসংখ্য মানুষ শ্বাসনালীর ক্যানসারে আক্রান্ত হন। অস্ত্রোপচারের পরেও অনেকে স্বাভাবিক হতে পারেন না। সব হাসপাতালে স্পিচ থেরাপির পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকার খেসারতও দিতে হয় অনেককে। কিন্তু হার না মেনে লড়াই চালালে হারতে পারে ক্যানসারের দাপটও। চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতাল থেকে ঠাকুরপুকুরের বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতালে ঘুরে সেই বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বিভূতি চক্রবর্তী।
ক্যানসার ও এর বিরুদ্ধে লড়াই— সাধারণ মানুষকে এই দু টো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতেই পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পর্দায় তুলে ধরছেন বিভূতিবাবুর জীবন।
ক্যানসার চিকিৎসার সম্পূর্ণ পরিকাঠামো এখনও এ দেশে তৈরি হয়নি। সঙ্গে পরিস্থিতি জটিল করছে অসচেতনতা, অপর্যাপ্ত চিকিৎসক এবং স্পিচ থেরাপিস্টের অভাব। শিবপ্রসাদ বলছেন, ‘‘হার না মেনে কী ভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়, সেটা সকলকে বোঝাতেই এমন পরিকল্পনা। বিজ্ঞানকে সঙ্গে নিয়ে এক জন সাধারণ মানুষও যে এমন মারণ রোগকে হারাতে পারেন, সেই লড়াইয়ের গল্প বলবে এই ছবি।’’
ক্যানসার চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘অনেকের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের পরে গলায় একটি যন্ত্র বসানো হয়। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে সেটি কাজ করে না। তখন একমাত্র উপায় খাদ্যনালীর সাহায্যে স্বর ফিরে পাওয়ার চেষ্টা। রোগীদের সেই প্রশিক্ষণ দিতে দরকার পর্যাপ্ত স্পিচ থেরাপিস্ট। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডাক্তারেরাই প্রশিক্ষণ দেন। তা যথেষ্ট নয়। বেশি সংখ্যায় স্পিচ থেরাপিস্ট থাকলে রোগীদেরও সুবিধা হয়।’’
এক রোগী প্রদীপ্ত ঘোষও বলছেন, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরে আমারও গলার স্বর চলে গিয়েছিল। ডাক্তারবাবুরাই সাহস জুগিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে তা ফিরিয়ে আনেন। সেই মনের জোর সঙ্গী করেই আমি এখন অন্যদের প্রশিক্ষণ দিই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy