উত্তমকুমার। বাঙালির নস্টালজিয়ার আর এক নাম। ১৯৮০-এ ২৪ জুলাই থেমে গিয়েছিল তাঁর হৃদস্পন্দন। কিন্তু আজও তখনকার মতোই প্রাসঙ্গিক তিনি। তখনকার মতোই জনপ্রিয়। অমলিন হাসিতে যে কত হৃদয় ভেঙেছে, তার হিসেব মেলা ভার। কত অনুরাগীর স্বপ্নের পুরুষ ছিলেন উত্তম! কত অনুরাগীর আজীবন গোপন ভালবাসা হয়ে থেকে গিয়েছেন মহানায়ক! যদি তাঁর সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ মিলত? অথবা যদি প্রেমিক উত্তমকে পেতেন আজকের নায়িকারা? কেউ অজ্ঞান হয়ে যেতেন, কেউ বা বাইকে চড়ে প্রেম করতেন। শেয়ার করলেন টলিউডের পাঁচ অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন, লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরখা: কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে নির্ভয়ে বলা এক গল্প
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
হিরো, স্টার, সুপারস্টার— উত্তমকুমারকে যে কী বলব! অলওয়েজ টপ। কত মহিলার যে তিনি স্বপ্নের পুরুষ! বাবার কাছে ছোট থেকেই উত্তমকুমারের অনেক গল্প শুনেছি। ওঁর প্রতি আমার বাবা-মায়ের যে শ্রদ্ধা সেটা দেখেছি। আমরা এত বার বাড়ি বদল করেছি- সব বাড়িতেই উত্তমকুমারের একটা বাঁধানো ছবি দেওয়ালে ঝোলানো থাকত। এখনও আছে। বাবার কাছে উনি গুরুদেব। কোনও আলোচনায় কেউ যদি উত্তমকুমারের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলেন, বাবা যে কোনও পরিস্থিতিতে ঝগড়া শুরু করে দেবেন। সেই উত্তমকুমারের সামনে গিয়ে যদি দাঁড়ানোর সুযোগ পেতাম আমি অজ্ঞান হয়ে যেতাম। জ্ঞান ফিরত না। আমি বেঁচেও থাকতাম না। ফলে প্রেম পর্যন্ত পৌঁছতেই পারতাম না।
পাওলি দাম
উত্তমকুমারকে তো কাজের জন্যই ভালবাসেন দর্শক। আজও সমান জনপ্রিয়তা তাঁর কাজের জন্যই। সে কারণেই মাঝে মাঝে ভাবি যদি সেই স্বর্ণযুগে জন্মাতাম, যদি উত্তমকুমারের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেতাম, তা হলে দারুণ হত। কত কিছু শেখা যেত বলুন তো। অল্প বয়স থেকে শেষ ছবি পর্যন্ত উত্তমকুমারের পুরোটাই অসাধারণ। তাই অভিনয়ের সুযোগ পেলে সেটা আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি হত। এ বার যদি প্রেমের কথাই হয়, বাইকটা তো ভালই চালাতেন। অসাধারণ গানও গাইতেন। তাই আমরা দু’জন বাইকে করে ‘এই পথ যদি না শেষ হয়..’ গাইতে গাইতে হারিয়ে যেতাম। আমিও গুনগুন করে তালে তাল মেলানোর চেষ্টা করতাম। আসলে এই ব্যাপারটা আমার কাছে ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ডের মতো।
প্রিয়ঙ্কা সরকার
উত্তমকুমারের সঙ্গে প্রেম করাটা বেশ ডিফিকাল্ট হত। এত বড় স্টার, এত ব্যস্ত একজন মানুষ— ওঁর সঙ্গে তো হয়তো সকলেই প্রেম করতে চাইত। কাজের বাইরে এত দিক সামলাতে হত উত্তমকুমারকে…। সাইকোলজিক্যালি, ফিনান্সিয়ালি কত মানুষ ওঁর ওপর নির্ভর করতেন। ফলে আমাকে একেবারেই সময় দিতে পারতেন না নিশ্চয়। আশপাশের সকলে পটাং পটাং করে প্রেমে পড়ে যেত আর আমি ইনসিকিওর্ড ফিল করতাম। তাই প্রেম নয়, বরং বন্ধুত্ব হলে ভাল হত। আর উত্তমকুমারের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ যদি পেতাম তা হলে তো কোনও কথাই নেই।
তনুশ্রী চক্রবর্তী
উত্তমকুমারকে এত সুন্দর দেখতে ছিল…প্রেম করার সুযোগ পেলে জাস্ট অজ্ঞান হয়ে যেতাম। আর কাজ করতে পারলে অবশ্যই ভাল লাগত। খুব ভাল অভিজ্ঞতা হত। তবে আমি কিছু দিন আগেই ‘মহানায়ক’-এ কাজ করেছি। সেখানে উত্তমকুমার হিসেবে ছিলেন বুম্বাদা মানে প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়। আমি কিন্তু সেই ফিলটা ওখানে পেয়েছিলাম। এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই।তাই এই সময়ে কাজ করতে পেরেও আমি খুশি। কেন সে সময় জন্ম হয়নি, তা নিয়ে কোনও আফশোস নেই। তবে উত্তমকুমার তো উত্তমকুমারই...।
মিমি চক্রবর্তী
উত্তমকুমারের সঙ্গে প্রেমটা নিয়ে কখনও ভাবিনি। তবে কাজের সুযোগ পেলে তার থেকে বড় পাওনা আর কিছু হত না। উত্তমকুমারের প্রচুর সিনেমা দেখেছি। ওঁর স্টাইল, কথা বলা আমার দারুণ লাগে। প্রত্যেক বাঙালি বাড়িতেই তো উত্তমকুমারকে নিয়ে আলাদা করে চর্চা হয়। আমার বাবা খুব একটা সিনেমা দেখত না। কিন্তু মামাবাড়িতে বড়মামার কাছে উত্তমকুমারের অনেক গল্প শুনেছি। সকলের থেকে যেন বড় ছিলেন উনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy