ঋত্বিক চক্রবর্তী এবং অরিন্দম শীল।
‘যুদ্ধ’! ‘মনোমালিন্য’! ‘অভিমান’!
দুই যুযুধান পক্ষ পরিচালক অরিন্দম শীল এবং অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। মাঝে বোড়ে নাকি অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।
টলিপাড়ায় এই নতুন ‘যুদ্ধ’-এর খবর এখন ট্রেন্ডিং। আপাতদৃষ্টিতে টলিউডের বেশ কিছু সদস্য এই সমীকরণকে ‘যুদ্ধ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও তা মানতে রাজি নন কোনও পক্ষই।
অরিন্দম শীল স্পষ্ট বললেন, ‘‘ঋত্বিকের সঙ্গে আমার কোনও ঝামেলা হয়নি। ওর সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক আগের মতোই রয়েছে।’’ ঋত্বিক অবশ্য আগেই বলেছিলেন, ‘‘অরিন্দমদার সঙ্গে কোনও ঝামেলা আমার হয়নি।’’
আরও পড়ুন, ব্যোমকেশের অজিত থেকে কেন বাদ পড়লেন ঋত্বিক?
কিন্তু কী নিয়ে ‘যুদ্ধ’? হঠাত্ শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এই দুই সেলেবের মাঝেই বা চলে এলেন কী করে?
রহস্য তো একটা আছেই। আর তা সমাধান করবেন স্বয়ং ‘ব্যোমকেশ’।
বিষয়টা সহজ করে বলা যাক। অরিন্দম শীলের পরের ছবি ‘ব্যোমকেশ গোত্র’। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রক্তের দাগ’ গল্প অবলম্বনে এই ছবি তৈরি করতে চলেছেন অরিন্দম। আর তাঁর ব্যোমকেশ মানেই অজিতের চরিত্রে ঋত্বিক চক্রবর্তী। এতদিন পর্যন্ত এমনটাই দেখেছে টলিউড।
আরও পড়ুন, ‘জীবনে কত প্রেমিকাকে যে না বলতে হয়েছে…’
হঠাত্ই ছন্দপতন। দিন দু’য়েক আগেই প্রকাশ্যে আসে অরিন্দমের এ বারের ব্যোমকেশে অজিতের চরিত্র করবেন না ঋত্বিক। আর তার কারণ হিসেবে উঠে আসে এই দুই সেলেবের মনোমালিন্যের কথা। তখনই শোনা গিয়েছিল অজিতের চরিত্রে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে কাস্ট করার কথা ভাবছেন অরিন্দম। আজ সে খবরই কনফার্ম করলেন পরিচালক স্বয়ং।
অরিন্দম বললেন, ‘‘শাশ্বতই আমার পরের ব্যোমকেশের অজিত। ঋত্বিক আমাকে জানিয়েছে ও আর অজিত হতে চায় না। এটা ওর সিদ্ধান্ত। ওর অভিনয় সত্তাকে আমি সম্মান করি। ওকে ‘বালিঘর’-এও একটা চরিত্র অফার করেছিলাম। ও সেটাও করতে চায় না। তবে আমার ওর সঙ্গে কোনও ঝামেলা হয়নি। সম্পর্ক আগের মতোই রয়েছে। তেমন চরিত্র পেলে আবার নিশ্চয়ই একসঙ্গে কাজ করব।’’
শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।— ফাইল চিত্র।
কিন্তু অরিন্দমেরই ‘শবর’ হিসেবে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন শাশ্বত। ‘শবর’ পুলিশের গোয়েন্দা। সেখান থেকে ব্যোমকেশের সহকারী? তার ওপর এতদিন ইন্ডাস্ট্রিতে শাশ্বত ছিলেন পরিচালক অঞ্জন দত্তের ‘অজিত’। আর টলিউডের একটা বড় মহল বলেন, অঞ্জন-অরিন্দমের সমীকরণও খুব একটা সরল ছিল না। সেখান থেকে শাশ্বতকে কী ভাবে ‘অজিত’ হিসেবে কাস্ট করলেন অরিন্দম?
হাসতে হাসতে অরিন্দম বললেন, ‘‘এ ব্যাপারে সবচেয়ে বড় উদাহরণ আবির। একই বছরে ব্যোমকেশ আর ফেলুদা দু’টো আলাদা চরিত্র করে ডিফারেন্টশিয়েট করেছিল ও। আর শাশ্বতর অভিনয় প্রতিভা নিয়ে তো কথা হতে পারে না। ‘শবর’ শবরের মতো করেছে। ‘অজিত’ করবে অজিতের মতো। যে কোনও অভিনেতার সেটাই তো চ্যালেঞ্জ। তা ছাড়া বাংলায় প্রচুর ভাল অভিনেতা থাকলে হয়তো এটা করতাম না। আবার হয়তো এটাই করতাম। কারণ অভিনেতার নাম শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।’’
আরও পড়ুন, ‘শট রেডি, ডাকতে আসবে, কিন্তু উঠব না, এ ভাবেই মরতে চাই’
অঞ্জন দত্তের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের প্রসঙ্গেও সোজাসাপ্টা উত্তর দিলেন অরিন্দম। ‘‘দেখুন অঞ্জনদা মিডিয়াতেই বলেছেন, অরিন্দম ভাল ব্যোমকেশ তৈরি করছে। এই মিউচুয়াল রেসপেক্ট একে অপরের প্রতি থাকা দরকার।’’
আগামী জুন থেকে শুরু হবে শুটিং। ছবির বেশিরভাগ অংশের শুটিং মুসৌরিতে হবে বলে জানালেন পরিচালক। ব্যোমকেশ-সত্যবতীর চরিত্রে আবির চট্টোপাধ্যায়-সোহিনী সরকারের চেনা জুটিকেই দেখবেন দর্শক। অঞ্জন দত্ত, অর্জুন চক্রবর্তীর অভিনয় সমৃদ্ধ করবে এই ছবিকে। অরিন্দমের কথায়, ‘‘ছবি কেমন হবে সে আপনারা বলবেন। আমি বলতে পারি, দিস ইজ গোয়িং টু বি দ্য বেস্ট লুকিং ব্যোমকেশ। ব্যোমকেশের স্টাইল স্টেটমেন্ট, ফ্যাশনও দেখাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy