Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

সাহস জোগায় ‘একজন কবির মৃত্যু’

ছবিটি তৈরি করার জন্য সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী ১০০টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা অবধি চাঁদা দিয়েছেন। এই ধরনের উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।

‘একজন কবির মৃত্যু’ ছবির একটি দৃশ্য।

‘একজন কবির মৃত্যু’ ছবির একটি দৃশ্য।

মেঘদূত রুদ্র
শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ১৪:০১
Share: Save:

চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় দিন, রবিবার দেখানো হল বাংলাদেশি পরিচালক আবু সইদ পরিচালিত ছবি ‘একজন কবির মৃত্যু’। ছবিটি উৎসবের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগ ‘ইনোভেশন ইন মুভিং ইমেজ’-এ সিলেক্টেড হয়েছে।

আরও পড়ুন, সোমবার ফেস্টিভ্যালে কোন কোন ছবি মিস করবেন না

আরও পড়ুন, ফেস্টিভ্যালের শুরুতেই ছন্দপতন, মাশুল গুনল বাংলা ছবি

বাংলা ভাষায় নির্মিত একমাত্র ছবি হিসেবে প্রতিযোগিতায় লড়াই করছে ছবিটি। পরিচালক জানালেন যে, ছবিটি বাংলাদেশে তৈরি প্রথম ‘ক্রাউড ফান্ডেড’- ছবি। অর্থাৎ ছবিটি তৈরি করার জন্য সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী ১০০টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা অবধি চাঁদা দিয়েছেন। এই ধরনের উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। ছবি তৈরির জন্য শুধুমাত্র প্রযোজকের মুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে এ ভাবে ছবি তৈরি করার পদ্ধতিটি সিনেমা শিল্পের একটি শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। এবং অদূর ভবিষ্যতে এ বঙ্গেও এভাবে ছবি তৈরি হবে এমনটা আশা করা যেতে পারে।

রবিবার নন্দন-১-এ চলছে ‘একজন কবির মৃত্যু’। ছবি— মেঘদূত রুদ্র।

ছবিটি প্রবলভাবে নিরীক্ষাধর্মী। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছেন মাত্র দু’জন অভিনেতা। কবি আবিদ হায়দার (জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়) এবং মৃত্যুরূপী একজন নারী(আইরিন সুলতানা)। ছবির বাকি চরিত্রদের মুখ দেখা যায়না। কথপোকথনের দৃশ্যগুলিতে ঘটনার কিছু ভিজুয়াল আবছা ভাবে ছুঁয়ে যাওয়া হয়। তাদের কথা শোনা যায়, কিন্তু মুখ কখনওই দেখা যায়না। এই সময়গুলোতে কখনও দেখা যায় শহুরে জীবনের কিছু টুকরো টুকরো ছবি, কখনও আবার ঢাকার প্রকৃতি।

ছবিতে আবিদ হায়দার নামক বিক্ষাত একজন মধ্যবয়স্ক কবি মারা যান। তাঁর ইচ্ছানুসারে ঢাকা থেকে তাঁর দেহ দফন করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর গ্রামে। আর এই সফরের মাঝে মাঝে বিভিন্নভাবে কবির দর্শন, অতীত, তাঁর কবিতা এবং মৃত্যু-চেতনার কিছু কিছু ধারণা আমরা পেতে থাকি। ছবি তৈরির চিরাচরিত প্রায় কোনও প্রথাই এই ছবিতে দেখতে পাওয়া যায়না। ছবির গল্পে অদ্ভুত একটা সারল্য আছে। গল্প বলার মধ্যে আছে সততা। কিন্তু, বলার কৌশল প্রচণ্ড ভাবে এক্সপেরিমেন্টাল। সারল্য আর এক্সপেরিমেন্টের এই মিশেল বাংলা ছবিতে প্রায় দেখাই যায়না। আর সততা নামক শব্দটাও বাংলা ছবি থেকে ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে। এমত অবস্থায় আবু সাইয়েদ এর এই ছবি আমাদের নতুন একটা পথ দেখায়। সাহস দেয়। প্রমাণ করে দেখায় যে এভাবেও ছবি তৈরি করা সম্ভব।

ফলে, এবারে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে একটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ ছবি হয়ে ওঠে ‘একজন কবির মৃত্যু’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE