চেতনার জগৎ কে নিষেধে বাঁধা যায়। যায় না অবচেতনকে। মুক্তির আগে জনতার সেই অবচেতনের জগতকেই হাতিয়ার করল সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘পদ্মাবত’।
দীর্ঘ বিতর্কের পর ‘পদ্মাবতী’ নাম বদলে ‘পদ্মাবত’ নামে ছবিটি মুক্তি পেতে পারে বলে ছাড়পত্র দেয় সেন্সর বোর্ড। ২৫ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার ছবি মুক্তির কথা। নতুন পোস্টারেই ধরা পড়েছে অভিনব বিপণন-কৌশল।
আপাতদৃষ্টিতে পোস্টারে কেবল ইংরেজি ‘পদ্মাবতী’ বানানের ‘আই’ অক্ষরটি নেই। বাকি সব এক। কিন্তু খুঁটিয়ে দেখলে ধরা পড়ছে পুরনো পোস্টারে ‘আই’-এর উপরের যে বিন্দুটি রয়েছে। সেটিকে রাখা হয়েছে ‘পদ্মাবত’ বানানের শেষ অক্ষর ‘টি’ এর উপরে, যাতে সেই ‘টি’-কেই ‘আই’ বলে বিভ্রম হতে পারে!
এই বিন্দুতেই বিপণনের বাজিমাত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বিজ্ঞাপন-স্রষ্টা শৌভিক মিশ্র জানাচ্ছেন, বিজ্ঞাপনী পরিভাষায় এই কৌশল ‘সাবলিমিনিয়াল অ্যাডভার্টাইজিং’- গোত্রভুক্ত। যেখানে স্পষ্ট করে কিছু না দেখিয়েও দর্শকের অবচেতনে থাকা স্মৃতিকে উস্কে দেওয়া যেতে পারে।
দৈনন্দিন ব্যবহারের অনেক পণ্যের লোগোতেই বর্ণের ছাঁদ নিয়ে নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষা হয়েছে। যেমন ক্যুরিয়ার সংস্থা ‘ফে়ডেক্স’-এর লোগোতে একটি তির চিহ্ন রয়েছে, যা খুঁটিয়ে না দেখলে ধরা পড়ে না। ‘এলজি’-র লোগো একটি মানুষের মুখের মতো দেখতে হলেও তাতে ‘এল’ ও ‘জি’ দুটি অক্ষরই রয়েছে। ‘টয়োটার’ লোগো এমন ভাবে তৈরি তাতে খুঁটিয়ে খুঁজলে বানানের সব ক’টি অক্ষরই পাওয়া যাবে। ‘পদ্মাবত’ সেই খেলাটাই খেলেছে, সেই সঙ্গে উস্কে দিতে চেয়েছে দর্শকের স্মৃতি।
শৌভিকের কথায়, ‘‘দর্শকেরা পুরনো পোস্টারে পদ্মাবতী বানানে ‘আই’ অক্ষরটি দেখেছেন। পদ্মাবতী নামটা শুনেছেন। নতুন পোস্টারে ‘আই’-এর বিন্দু দিয়ে সেই অবচেতন স্মৃতিকেই ছুঁয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।’’ এতে সেন্সর বোর্ডের নিয়মও ভাঙা হচ্ছে না, আবার কিছু না বলেও সব বলে দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞাপন-বিশেষজ্ঞ রাম রায় বলছেন, ‘‘নিয়মের রাস্তাতেই নিয়মকে এড়ানো!’’
এই কৌশল কি ইচ্ছাকৃত? মুখ খুলতে নারাজ ছবির শিল্প-নির্দেশক সুব্রত চক্রবর্তী ও অমিত রায়। মুচকি হেসে তাঁরা বলছেন, ‘‘দর্শক বুদ্ধিমান। তাঁরা যা বোঝার ঠিকই বুঝবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy