Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পহলাজ-রাজ শেষ, সেন্সরের দায়িত্বে প্রসূন

শেষ পর্যন্ত সেন্সর বোর্ডের প্রধানের পদ থেকে সরিয়েই দেওয়া হলো পহলাজ নিহালনিকে। ২০১৫-র জানুয়ারিতে বোর্ড প্রধানের পদে বসানো হয়েছিল পহলাজকে। তখন থেকেই খবরের শিরোনামে সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ এই পরিচালক

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৪
Share: Save:

মাসখানেক ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সেন্সর বোর্ডের প্রধানের পদ থেকে সরিয়েই দেওয়া হলো পহলাজ নিহালনিকে।

২০১৫-র জানুয়ারিতে বোর্ড প্রধানের পদে বসানো হয়েছিল পহলাজকে। তখন থেকেই খবরের শিরোনামে সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ এই পরিচালক। ‘লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরখা’কে ‘মেয়েলি ছবি’-র তকমা দেওয়া থেকে শুরু করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের উপর তথ্যচিত্রে ব্যবহৃত ‘গুজরাত’, ‘হিন্দু’, ‘হিন্দুত্ব’ ও ‘গরু’ শব্দগুলি ‘মিউট’ করার নির্দেশ (যা না-মানার জন্য ছবিটি দেশে শেষ পর্যন্ত মুক্তিই পায়নি)— সেন্সর বোর্ড কর্তার বিতর্কিত সিদ্ধান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছিল। কিছু দিন আগেই তিনি আবার দাওয়াই দেন, সুপারস্টারেরা সিনেমার পর্দায় সিগারেট বা মদ খাওয়া বন্ধ করুন। না হলে এই সব দৃশ্যের উপর কাঁচি চালাতে দ্বিধা করবে না সেন্সর বোর্ড।

সেন্সর বোর্ডের এক সূত্রের কথায়, ‘‘বোর্ড প্রধান থাকার সময়ে ফিল্ম জগতের কোনও উপকারে লাগেননি নিহালনি। উল্টে বহু পরিচালক ও প্রযোজক তাঁর উপরে খুবই অসন্তুষ্ট ছিলেন।’’ বোর্ড প্রধানের এই ‘দাগি’ ভাবমূর্তিতে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও চাইছিলেন, পহলাজকে সরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু আরএসএস শিবিরের ‘নিজের লোক’ বেঙ্কাইয়া নায়ডু যত দিন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ছিলেন, তত দিন এই পদক্ষেপ সম্ভব হচ্ছিল না।

উপরাষ্ট্রপতি পদে লড়ার জন্য জুলাইয়ে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন বেঙ্কাইয়া। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নেন স্মৃতি ইরানি। স্মৃতি এসেই বিভিন্ন কমিটিগুলি ভেঙে দিয়ে জানান, সেন্সর বোর্ডকে ঢেলে সাজতে চান তিনি। তখনই সিঁদুরে মেঘ দেখছিলেন পহলাজ-ঘনিষ্ঠরা। আজ জানা যায়, বোর্ড প্রধান করা হচ্ছে গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার প্রসূন জোশীকে।

আরও পড়ুন: ফিরবে কি ব্র্যাঞ্জেলিনা, জোর জল্পনা হলিউডে

হঠাৎ প্রসূন কেন?

বিজেপি সূত্রের খবর, ফিল্ম জগতের মানুষ প্রসূনের ‘সিভি’ যথেষ্ট ভাল। ‘তারে জমিন পর’, ‘ফনা’, ‘র‌ং দে বসন্তী’, ‘গজনি’ ও ‘নীরজা’র মতো ছবির গীতিকার তিনি। আদতে বিজ্ঞাপন জগতের লোক প্রসূনকে প্রধানমন্ত্রীও খুব পছন্দ করেন। মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানের ‘স্বচ্ছ ভারত কি ইরাদা’ গানটি তাঁরই লেখা। আবার মুম্বই মহলেও প্রসূনের ‘উদারচেতা ও সংস্কারমুক্ত’ বলে সুনাম রয়েছে। সব মিলিয়ে সেন্সর বোর্ডের ভাবমূর্তি ফেরাতে প্রসূনই যে ঠিক লোক, তা মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এবং তাঁরই ইঙ্গিতে এই সিদ্ধান্ত নেন স্মৃতি।

জুলাইয়ে যখন তাঁকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে জল্পনা চলছিল, তখন নিহালনি বলেন, ‘‘২০১৫-র জানুয়ারিতে যখন আমায় এই দায়িত্ব দেওয়া হয়, খুবই বিস্মিত হয়েছিলাম। এত দিন সাধ্যমতো কাজ করে এসেছি। যদি আমায় চলে যেতে বলা হয়, উত্তরসূরিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তখনই সরে যাব।’’

আজ মসনদ হারানোর পরে প্রসূনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE