ঠাট: রাজবাড়ির উঠোনে থেমেছে জুড়ি গাড়ি। চলছে শ্যুটিং। নিজস্ব চিত্র
মহিষাদল রাজবাড়িতে শ্যুটিং করছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রকাশ ঝা। তবে কোনও সিনেমা নয়। একটি টেলি ধারাবাহিকের জন্য কাজ করছেন তিনি। ১৫ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত চলবে প্রথম পর্যায়ের শ্যুটিং। হাতি, ঘোড়া, ফিটন আর এক জমিদার পরিবার নিয়ে তাঁর গল্প। কিন্তু প্রথম দিনেই বিপত্তি। হাতির পিঠ থেকে পড়ে হাত ভাঙলেন ইউনিটের বাঙালি অভিনেতা উদয় ভট্টাচার্য। বছর পঁয়ত্রিশের ওই অভিনেতাকে তড়িঘড়ি কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বাকি ইউনিট শ্যুটিং করছে রাজবাড়িতে।
শনিবার সারাদিন ছুটে বেড়িয়েছেন প্রকাশ ঝা। তারই মধ্যে জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন, এক সময় এখানেই শ্যুটিং করে গিয়েছেন উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন থেকে শুরু করে সত্যজিৎ রায় পর্যন্ত। সেখানে শ্যুটিং করতে পেরে তিনি খুশি। তাঁর ধারাবাহিকের নাম ‘সন্ন্যাসী রাজা’। তবে এই সন্ন্যাসী রাজা বাঙালির প্রিয় ভাওয়ালের রাজা কিনা তা তিনি জানাতে চাননি। শুধু বলেছেন, ‘‘গল্প পরে জানাব। আগে শুটিং শেষ হোক।’’ আগে মহিষাদলে এসে ‘স্পট’ পছন্দ করে গিয়েছিলেন তিনি। গত সাতদিন ধরে একটু একটু করে এসেছে প্রয়োজনীয় সব কিছু। এসেছেন কলাকুশলীরা।
এ দিন সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল দৃশ্য গ্রহণের কাজ। রাজবাড়ির আমবাগানে হাতির পিঠে চড়ে আসবেন যুবরাজ। তার ভূমিকাতেই ছিলেন উদয়। রাজ পোশাকে হাতিতে উঠেছিলেন তিনি। ঠিক তখনই গা-ঝাড়া দেয় হাতিটি। গড়িয়ে পড়েন তিনি। হাতের যন্ত্রণায় কাতর উদয়কে নিয়ে যাওয়া হয় দলের সঙ্গে আসা চিকিৎসকের কাছে। তাঁর পরামর্শ মতোই পাঠিয়ে দেওয়া হয় কলকাতায়। তাঁর হাতের হাড় ভেঙেছে, চোট আছে কোমরেও।
কিছুক্ষণ বন্ধ থাকলেও ফের শুরু হয় শ্যুটিং। আমবাগানের নীচে ‘লগন’ অর্থাৎ খাজনা আদায়ের জন্য ব্রিটিশদের সঙ্গে গ্রামবাসীরা। মহিষাদলের গড়কমলপুরের ২৮ জন এসেছেন গ্রামবাসীর চরিত্রে অভিনয় করতে। তাঁদেরই একজন লতিকা সামন্ত জানালেন, ‘‘শ্যুটিং-পার্টি এলেই আমাদের ডাকে। গ্রামবাসীর পার্ট করতে। এ বারে নাকি বম্বে থেকে এসেছে।’’ তবে লতিকাদেবীদের নিয়ে কাজ করতে সামান্য বেগ পেতে হয়েছে খুঁতখুতে পরিচালক প্রাকশ ঝা-কে। মনোমতো শট না হলে তিনি সন্তুষ্ট নন। কিন্তু হিন্দিতে ঠিকঠাক বোঝাতেও পারছেন না কী চান। শেষে ইউনিটের বাঙালিদের উপর দায়িত্ব দিলেন সব বুঝিয়ে দেওয়ার।
মহিষাদলের প্রাচীন গোপালজিউ মন্দিরে পুজাও দেন ইউনিটের অনেকে। এ দিন বিকেলে রাজবাড়িতে এসেছিলেন জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ও জেলাশাসক রশ্মি কমল। ছিলেন মহিষাদল রাজপরিবারের সদস্য শৌর্যপ্রসাদ গর্গও। শৌর্যপ্রসাদ জানান, ফের অক্টোবরে আসবেন প্রকাশ ঝা। তখন থেকে পুরোদমে শ্যুটিং হবে। ডিসেম্বরে আসতে পারেন কর্ণ জোহরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy