ছবির সেট, সিনেমা হলে তাণ্ডব চলছিলই। এ বার সঞ্জয় লীলা ভংসালী পরিচালিত ছবির মুক্তি আটকাতে ভারত বন্ধের ডাক দিল শ্রী রাজপুত করণী সেনা। ‘পদ্মাবতী’ নিয়ে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলনের মাঝেই পরিচালককে পুলিশি সুরক্ষা দিল মহারাষ্ট্র সরকার।
ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা আগামী ১ ডিসেম্বর। কিন্তু ছবিতে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে এই অভিযোগে শ্যুটিংয়ের সময় থেকে বাধা দিয়ে আসছে করণী সেনা নামের সংগঠনটি। ছবির মুক্তি আটকাতে তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি)-ই শেষ কথা বলবে বলে জানায় শীর্ষ আদালত। বোর্ড কর্তা প্রসূন জোশী ছবিটি দেখেছেন বলে সংবাদমাধ্যমে প্রচার শুরু হয় সম্প্রতি। কিন্তু আজ প্রসূন বিবৃতি দিয়ে জানান, ছবিটি তিনি দেখেননি, তাই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না।
আদতে রাজস্থানের সংগঠন করণী সেনার দেশের অন্য প্রান্তেও শাখা রয়েছে। যদিও ছবি নিয়ে গোলমালের সূচনা রাজস্থানেই। জানুয়ারিতে জয়পুরে ‘পদ্মাবতী’র সেটে ভাঙচুর চালায় করণী সেনা। তার পরও বারে বারে ছবির মুক্তি নিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে তারা। কখনও পোড়ানো হয়েছে ছবির পোস্টার। কখনও হুমকি দেওয়া হয়েছে হল মালিকদের। গত কালও কোটার এক শপিং মলে হলে ছবিটির ট্রেলার দেখানো হলে সেখানে তাণ্ডব চালায় জনা পঞ্চাশেক সেনা সমর্থক। করণী সভাপতি লোকেন্দ্র সিংহ কালভি কালই হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এখন অনেক কিছু জ্বলবে।’’ রাজস্থানের পাশাপাশি গত কয়েক দিনে দেশের নানা রাজ্যে একই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আজ বেঙ্গালুরুর টাউন হলে ছবির মুক্তি আটকানোর দাবিতে জড়ো হন করণী সেনার প্রায় ৫০০ সমর্থক। গুজরাত, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশেও ‘পদ্মাবতী’ বিরোধী আন্দোলন চলছে। কোথাও করণী সেনার সঙ্গে যোগ দিয়েছে স্থানীয় কোনও হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। কোথাও আবার সেনার পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপি নেতারা।
আজ যেমন মুম্বইয়ের বিজেপি বিধায়ক রাম কদম হুমকি দেন, ছবি থেকে ‘আপত্তিকর’ দৃশ্য বাদ না দিলে, সঞ্জয় ভবিষ্যতে মহারাষ্ট্রে কোনও ছবির শ্যুটিংই করতে পারবেন না। করণী সভাপতি কালভি আজ আরও সুর চড়িয়েছেন। দেশ জুড়ে করণী সেনার কাণ্ড দেখে ছবির অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন বলেছিলেন, ‘‘দেশ পিছিয়ে পড়েছে।’’ আর তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিবাদে ১ ডিসেম্বর ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছেন কালভি। এ বার তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোনও দৃশ্যের কাটছাঁট নয়। ছবিটাই গোটা দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’’ কালভির দাবি, মুসলিম কিছু সংগঠনকেও পাশে পেয়েছেন তাঁরা। বলিউড কিন্তু গোটা বিতর্কে সঞ্জয়ের পাশেই দাঁড়িয়েছে।
পরিচালকের উপর আক্রোশ আসতে পারে আঁচ করেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফ়ডণবীস সঞ্জয়কে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছেন। সঞ্জয় মুখ না খুললেও ‘ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডাইরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন’ ফডণবীসকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy