সপ্তাহ দুয়েক আগে বেরিয়ে পড়েছিল ছবিটা। হাল্কা নীল রঙা হাসপাতালের পোশাকে দাঁড়িয়ে তিনি। রুগ্ণ, শীর্ণ চেহারা। আঁতকে উঠেছিল সবাই। ক্যানসারে ভুগছেন কি? ছবিটা ছড়াচ্ছিল হুহু করে। তার থেকেও দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছিল তাঁর মৃত্যু সংক্রান্ত নানা গুজব।
গুজবটা সত্যি করতে বেশি সময় নিলেন না বিনোদ খন্না। বৃহস্পতিবার সকালে মারা গেলেন সাত-আটের দশকের জনপ্রিয় তারকা। হাসপাতালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্লাডার ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। গত ৩১ মার্চ শরীরে প্রবল জলশূন্যতা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন। কিন্তু আচমকাই অবস্থার অবনতি হয়।
ভিলেন এবং পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় শুরু করে ক্রমে নায়কের আসন দখল করেছিলেন বিনোদ। একই সঙ্গে ভিলেন এবং পুলিশের উর্দি পরা নায়ক এবং দুয়েতেই সমান জনপ্রিয়— এই বিরল উদাহরণ বলিউডে বিনোদই গড়েছিলেন। একাধারে তারকা, সন্ন্যাসী এবং রাজনীতিকের ভূমিকায় পা গলিয়েছেন, এমন ব্যক্তিত্বের সংখ্যাও তো বেশি না! মার্সি়ডি়জ বিক্রি করা স্বামী বিনোদ ভারতীকে নিয়ে এক কালে নানা কাহিনি লোকমুখে ঘুরত!
যে আমলে নায়কদের সিক্স প্যাকস জরুরি ছিল না, সে আমলে বিনোদই তাঁর পেশিবহুল-সুঠাম চেহারা নিয়ে এক অন্য পৌরুষ আমদানি করেছিলেন। মেরে অপনে, অচানক, ইমতিহান, হাত কি সাফাই, মুকাদ্দর কা সিকন্দর, অমর আকবর অ্যান্টনি, খুন পসিনা, কুরবানি...একটা সময় বিনোদকেই মনে করা হচ্ছিল অমিতাভ বচ্চনের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। তার মধ্যেই পুণেতে ওশো-র আশ্রমে রজনীশের কাছে দীক্ষা। একটা সময় স্রেফ উধাও হয়ে গেলেন আমেরিকায় রজনীশপুরমে। পাঁচ বছর পরে ১৯৮৭ সালে আবার ফিরলেন অবশ্য। প্রথম বিয়েটা ভেঙেছে ইতিমধ্যে। ইনসাফ, জুর্ম, চাঁদনি, দয়াবান...ফের পরপর হিট। বিয়েও করলেন আবার। ১৯৯৭ থেকে বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়ানো শুরু হল।
গৃহী বিনোদ, চার সন্তানের পিতা বিনোদ এ বার পুরো রাজনীতিক। পঞ্জাবের গুরদাসপুর থেকে সাংসদ, মাঝে মন্ত্রীও। ২০১৪-র নির্বাচনেও জিতেছিলেন। হালে ‘দবং’, ‘দিলওয়ালে’র মতো ছবিতে ফের পর্দাতেও আসেন। সাতের দশকের নায়ক, প্রস্থান হল সত্তর পূর্ণ করেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy