মেন্টর রাহুল দ্রাবিড় সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন ঋষভের। ছবি: টুইটার
ঋষভ পন্থের ব্যাটিং দর্শনটাতেই ঝড়ের ইঙ্গিত রয়েছে। সেই কারণেই বাইশ গজে তাঁর ব্যাটে এমন ঝড় দেখা গেল শুক্রবার রাতে।
কী সেই ব্যাটিং দর্শন? না, বল দেখো আর মারার বল পেলেই মারো। শুক্রবার দিল্লির উনিশ বছরের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থের অবিশ্বাস্য ইনিংস নিয়ে উচ্ছ্বসিত সচিন তেন্ডুলকর থেকে শুরু করে অমিতাভ বচ্চন সকলে। কিন্তু ম্যাচ জেতার পরে তাঁদের দলের মেন্টর রাহুল দ্রাবিড়কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জু স্যামসন ফাঁস করেন ঋষভের এই দর্শনের কথা।
বৃহস্পতিবার কোটলায় গুজরাত লায়ন্সের বিরুদ্ধে ২০৮ রান তাড়া করেও দুই তরুণের ব্যাটিং ঝড়ে জিতে যায় দিল্লি ডেয়িরডেভিলস। ম্যাচের পর দ্রাবিড় ম্যাচের দুই নায়কের সাক্ষাৎকার নেন আইপিএলের সরকারি ওয়েবসাইটের জন্য। সেখানেই সঞ্জু স্যামসন বলেন, ‘‘আমি ভাল ভাবেই ইনিংসটা শুরু করেছিলাম। দু’টো ছক্কা মারার পরে ঠিক করি, সিঙ্গল নেব। কিন্তু ও এসে বলল, ভাইয়া জাদা সোচো মত। মারতে রহো (বেশি ভেবো না, মারতে থাকো)।’’ সঞ্জুর বক্তব্য, ঋষভের এই উপদেশ তাঁকে খুবই সাহায্য করেছে। ‘‘আমি খুব উপভোগ করেছি ওর সঙ্গে ব্যাট করাটা,’’ দ্রাবিড়কে বলতে থাকেন সঞ্জু।
ঋষভের ৪৩ বলে ৯৭ এ বারের আইপিএলের অন্যতম সেরা ইনিংস। সচিন তেন্ডুলকর যে ইনিংস দেখার পরে টুইট করেন যে, আইপিএলের দশ বছরের ইতিহাসেই এটা অন্যতম সেরা ইনিংস। তাঁর সঙ্গে কোটলা মাতিয়ে দেন সঞ্জুও। ৩১ বলে ৬১ করেন তিনি। দু’জনের ৬৩ বলে ১৪৩ রানের পার্টনারশিপ দিল্লিকে আড়াই ওভার বাকি থাকতেই জিতিয়ে দেয়। মাত্র ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ঋষভ। তাঁর পরের ৪৪ রান আসে মাত্র ১৬ বলে। ‘‘আমি বল দেখি। যদি সেই বলটা মারার মতো হয়, আমি মারি,’’ দ্রাবিড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন ঋষভ। দ্রুত যোগ করেন, ‘‘আমি আউট হওয়ার কথা একেবারেই ভাবছিলাম না। বলটা যদি খারাপ হয় তো সেটা মারো। আমি সেটাই করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’’
দ্রাবিড় দুই নায়কের উদ্দেশে মজা করে বললেন, ‘‘এটা ভাল যে, তোমরা ২০ ওভারে ২০৮ রান তাড়া করার আগে আমার ব্যাটিংয়ের ভিডিও দেখোনি। দারুণ ব্যাট করেছ তোমরা।’’ এর পর দুই তরুণের কাছে জানতে চাইলেন, কোন বোলারকে তোমরা টার্গেট করছিলে? তাঁর ব্যাটিংয়ের মতোই আগ্রাসী ভঙ্গিতে ঋষভের জবাব, ‘‘আমরা পরের বলটা নিয়ে ভাবছিলাম না স্যার। যেমন আপনাকে বললাম, খারাপ বল থাকলেই সেটাকে ওড়াব বলে ঠিক করেছিলাম। সঞ্জুকেও আমি সেই কথাটাই বলি। আমাদের প্ল্যানটা সে রকমই ছিল।’’ সেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরেও আগ্রাসন থামাতে চাননি ঋষভ। চালাতে গিয়েই আউট হন।
যা দেখে উচ্ছ্বসিত রাহুল দ্রাবিড়ও। বলে গেলেন, ‘‘আমাকে সবচেয়ে মুগ্ধ করেছে ঋষভের এই মনোভাবটাই। ৯৭ রানে দাঁড়িয়েও ও নিজের সেঞ্চুরির কথা ভাবছিল না। তখনও শট খেলার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। তখনও ওর মাথায় ছিল দলকে কী ভাবে টার্গেটে পৌঁছে দেব।’’ বরাবরের টিমম্যান রাহুল দ্রাবিড়। ছাত্রদের ‘দলের জন্য খেলা’র মনোভাব যে তাঁকে মুগ্ধ করবে, আশ্চর্যের কী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy