সময়ের দুরন্ত ঘূর্ণি শুধু পাক লাগায় না, ভোলও বদলায়। তাই নতুন বছরের সাজগোজে একটু নতুনত্ব যে থাকবে তাতে তো আর নতুন করে বলার কিছু নেই। পুরনো বছরের সব জীর্ণতা ভুলে নতুন আঙ্গিকে নিজেকে সাজিয়ে তোলা। নতুনত্বের ছাপ এখন জেন ওয়াই থেকে শুরু করে আগের প্রজন্মের সাজপোশাকে। নতুন আঙ্গিকের গয়নার দিকে ঝুঁকছে সব বয়সীরা।
ট্যাব ম্যানিয়াক, নেট ঘাঁটা শর্ট ড্রেসের এই প্রজন্মের সব কিছুই তো বোল্ড আর ব্রাইট। সম্পর্ক থেকে গয়না, সবেতেই কেবল চমক ধরে রাখার পাগলামিতে নতুন বছরে তাদের ওয়ার্ডরোব কখনও নিয়ন রঙের আলো তো কখনও স্টোন সেটিং-এর ঝলক। আর ঠিক আগের প্রজন্মের ঝোঁক ব্ল্যাক সিলভার জুয়েলারির দিকে। ছেলেরাও এখন পাঞ্জাবির সঙ্গে সিলভার চেন পরছেন। কিংবা হাঁসুলির মতো দেখতে কিছু সিলভার জুয়েলারি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়, তা পরতে পারেন। আপনি যদি হাই ফ্যাশনেবল হন তবে তা শার্টের উপরেও হার পরতে পারেন।
বিখ্যাত স্টাইলিস্ট রাহুল নন্দী জানাচ্ছেন, এ বছর সাধারণত হ্যান্ডলুম পোশাকই মাত করবে গোটা গরমটা। আর তার সঙ্গে মিলিয়ে একটু বোন্ড, ফাঙ্কি গয়না চলতে পারে। তবে স্টোনের বেশি কারিগরি না থাকাই ভাল। তবে হ্যাঁ পোশাকের সঙ্গে অ্যাটাচ করা কোনও বিডস চেইন বা মুক্তোর কাজ করা গয়না থাকতে পারে।
এমন গয়নাও পরা যেতে পারে যা শরীরের একটা অংশকেই শুধু হাইলাইট করবে। এখন যেমন আংটির জায়গায় মিড রিং বা আঙুলের মাঝে আংটি পরার চল। কানের দুলের জায়গায় শোল্ডার ডাস্টার বা কান থেকে কাঁধ ছোঁওয়া ভারি দুলের চল। তবে গরমের কথা মাথায় রেখ ছোট্ট দুল পরা চলতে পারে অনায়াসেই। দুল, হার কিংবা হারে অ্যান্টিক স্টাইল হটকেক।
নেটের দৌলতে এখন চোখের সামনে দেখা মেলে বিভিন্ন দেশের গয়নার নকসা। তাই ধীরে ধীরে সোনার গয়নাতেও জায়গা করে নিয়েছে বিদেশি ধাঁচ। বাঙালির কাছে সোনার গয়নার কোনও বিকল্প নেই। তবে নিরাপত্তা আর দামের কারণে সোনার গয়নার ধীরে ধীরে লকারিকরণ ঘটেছে। তবে সেই জায়গায় বিকল্প হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে স্লিক ডিজাইনের কস্টিউম জুয়েলারি।
বছরের প্রথম দিনটায় যদি বাড়িতে পুজো থাকে তবে শাড়ি কিংবা ট্রাডিশনাল পোশাকের সঙ্গে মানানসই হাল্কা কস্টিউম জুয়েলারি বেছে নিতে পারেন। তবে হ্যান্ডলুম পোশাকের সঙ্গে ট্রাইবাল গয়নাও চলতে পারে। এখন ফুটপাত থেকে বড়সড় জুয়েলারি শপে রমরমিয়ে বিকোচ্ছে এই ধরনের অলঙ্কার।
এখন কেউ আর দুল, হার, চুড়ি, বালা এ ভাবে কেনেন না। গর্জাস নেকপিস, ভারী ব্রেসলেট, জমকালো নাঁথনি— যে কোনও একটা দিয়েই শাড়ি বা গাউন, কেপ্রি বা মিডি দিয়ে সকলে টিম আপ করছেন। আর এই ধরনের গয়না সাবেক বা আধুনিক যে কোনও সাজের সঙ্গেই চমৎকার মানিয়ে যায় বলে সব সময় এক্সপেরিমেন্ট করতে চাওয়া প্রজন্মের মধ্যে এই ধাঁচের গয়নার চাহিদা তরতরিয়ে বাড়ছে।
ডান্স ফ্লোর থেকে যে কোনও উৎসবে ওভার সাইজ গোল্ড, ম্যাট গোল্ড, কপার, সিলভার নেকপিস এ বছরও ফ্যাশন ইন। নিউ মার্কেট থেকে হাতিবাগান হয়ে গড়িয়াহাটের ফুট— সর্বত্রই গলা ভর্তি নেকপিস পাওয়া যাচ্ছে। আর তার জন্য পকেট মানি-ই যথেষ্ট। তবে আপনি যদি পয়লা বৈশাখে সোনা কিংবা রুপোর ট্রাডিশনাল গয়না পরতে পছন্দ করেন, তবে আপনাদের জন্য সেই সব গয়নার কিছু তালিকা। যা এ বছর ট্রেন্ড।
চাঁদবালি: অর্ধচন্দ্রের নিপুণ নকশায় হিরা, দামি পাথর ও রত্ন শোভিত কানের দুল চাঁদবালি। যে কোনও উৎসবেই চাঁদবালি মানিয়ে যাবে।
হাঁসুলি: আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল রেখে আপনি পরতে পারেন দেশীয় ঘরানার কুন্দন, মিনাকারী টেকনিকের হাঁসুলি।
নবরত্ন: বিচিত্র বর্ণ ও উজ্জ্বলতার কারণে ৯টি বিশেষ রত্নের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় নবরত্ন। যে কোনও পোশাকের সঙ্গেই স্বাচ্ছন্দ্যে মানিয়ে যায় এই অলঙ্কারটি।
বালা ও কঙ্কন: সোনার গয়না মহিলাদের সাজে সব সময়ই যোগ করে বাড়তি সৌন্দর্য। সব উৎসবেই সোনার গয়না মানিয়ে যায় নিখুঁতভাবে।
ছেলেরা যদি পয়লা বৈশাখের দিনটিতে ধুতি বা পায়জামা দিয়ে পাঞ্জাবি পরেন, তবে সোনার আংটি, চেন, রিস্টলেট পরতে পারেন।
ছবি: সুবীর দাস, দেবমাল্য দাস, সৌরভ সাহা ও অরূপ পাল।
পোশাক ও অলঙ্কার সৌজন্যে: পুতাতুন্ডা’স্ হাট।
মডেল: বিশ্বজিৎ, সহেলী, দেবমাল্য, সায়ন্তি, তমোনাশ এবং সুস্মিতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy