Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল

চালুর ভাবনা দু’বছর পড়ে থাকা ডায়ালিসিস ইউনিট

উপযুক্ত কর্মীর অভাবে পড়ে রয়েছে কয়েক লক্ষ টাকার ডায়ালিসিস যন্ত্র। সরকারি হাসপাতালে এই পরিষেবা না মেলায় দুর্গাপুরের মানুষকে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে বেসরকারি কেন্দ্র থেকে ডায়ালিসিস করাতে হয়। সমস্যা মেটাতে এ বার পিপিপি মডেলে এই ইউনিট চালু করার উদ্যোগ হয়েছে বলে বলে জানিয়েছেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বলেন, “ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫১
Share: Save:

উপযুক্ত কর্মীর অভাবে পড়ে রয়েছে কয়েক লক্ষ টাকার ডায়ালিসিস যন্ত্র। সরকারি হাসপাতালে এই পরিষেবা না মেলায় দুর্গাপুরের মানুষকে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে বেসরকারি কেন্দ্র থেকে ডায়ালিসিস করাতে হয়। সমস্যা মেটাতে এ বার পিপিপি মডেলে এই ইউনিট চালু করার উদ্যোগ হয়েছে বলে বলে জানিয়েছেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বলেন, “ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।”

বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ২০১৩ সালের প্রথম দিকে মহকুমা হাসপাতালে একাধিক মূল্যবান যন্ত্র কেনার ব্যবস্থা করে দেন দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক তথা চিকিৎসক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেনা হয় ডায়ালিসিস মেশিন। কিডনির জটিল রোগে ভোগা গরিব মানুষজন যাতে সুলভে ডায়ালিসিস করার সুযোগ পান, সে জন্যই এ ভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন বিধায়ক। কিন্তু যন্ত্রটি চালু করা যায়নি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, যন্ত্রটি চালানোর জন্য উপযুক্ত টেকনিসিয়ান প্রয়োজন। যা এই হাসপাতালে নেই। ফলে, প্রয়োজনীয় যন্ত্র থাকা সত্ত্বেও কিডনির রোগে আক্রান্ত দুঃস্থ রোগীরা বঞ্চিত হন। বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে টাকা গুণে চিকিৎসা করাতে বাধ্য হন অনেকেই।

হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই যন্ত্রের ‘ওয়ার্যান্টি পিরিয়ড’ শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ, যন্ত্রটি না চালু করা যাওয়ায় সেই সুবিধা নেওয়া যায়নি। এমন একটি অতি প্রয়োজনীয় যন্ত্র এ ভাবে পড়ে থাকায় ক্ষুব্ধ রোগী থেকে হাসপাতালের চিকিৎসক, সকলেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একাধিক বার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। বিধায়ক নিখিলবাবু ‘ডিরেক্টর অফ হেলথ সার্ভিস’-এ ফ্যাক্স বার্তা পাঠিয়েছেন কয়েক বার। গত বছর রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি হাসপাতাল পরিদর্শনে এলে সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিধায়ক নিখিলবাবু। স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য দ্রুত সুরাহার আশ্বাসও দেন। কিন্তু, ফল কিছু হয়নি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, উপযুক্ত কর্মীর আশায় আর বসে না থেকে এ বার অন্য ভাবে হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটটি চালুর উদ্যোগ হয়েছে। পিপিপি মডেলে পরিষেবা দেওয়া হবে। পাঁচ শয্যার ডায়ালিসিস ইউনিট চালাবে বেসরকারি সংস্থা। হাসপাতাল সুপার দেবব্রতবাবু জানান, ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি তিনটি আগ্রহী সংস্থাকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। ইউনিটটি কী ভাবে চলবে সে ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে তাদের। ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করা হবে। সব প্রস্তাব দেখে চূড়ান্ত দায়িত্ব দেওয়া হবে যে কোনও একটি সংস্থাকে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা ও মহকুমা হাসপাতালগুলিতে ডায়ালিসিস ইউনিট ‘পিপিপি’ মডেলে চালু করার উদ্যোগ হয়েছে। পরিকাঠামো গড়বে সরকার। রক্ষণাবেক্ষণ করবে বেসরকারি সংস্থা। বেসরকারি হাসপাতালের থেকে অনেক কম মূল্যে পরিষেবা পাবেন রোগীরা। তাছাড়া দুঃস্থরা সরকারি নিয়ম মেনে আরও কম টাকায় বা বিনামূল্যে ডায়ালিসিস করার সুযোগ পাবেন। রাজ্যে এমন মোট ৩৪টি ইউনিট চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার মধ্যে ১৯টি ইতিমধ্যে চালু হয়ে গিয়েছে।

হাসপাতালের সুপার বলেন, “দিনের পর দিন যন্ত্র পড়ে রয়েছে। রোগীদের তরফে বারবার অভিযোগ পেয়েছি। আশা করি, মাসখানেকের মধ্যেই হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিট চালু হয়ে যাবে।” বিধায়ক নিখিলবাবু বলেন, “বর্তমানে কিডনির সংক্রামণের হার আগের থেকে বেড়ে গিয়েছে। ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হচ্ছে অনেকেরই। দুঃস্থ রোগী ও তাঁর পরিজনেরা খরচ জোগাতে বিপাকে পড়ছেন। আশা করি এ বার সমস্যার সুরাহা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dialysis unit durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE