Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল

ডাক্তার না আসায় রোগী-মৃত্যুর নালিশ

সময়মতো ডাক্তার না আসায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে। শনিবার সকালের ঘটনা। এ দিন হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিনিধিদলও সুপারের ঘরে বিক্ষোভের মুখে পড়ে।

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের মেয়ে। শনিবারের নিজস্ব চিত্র।

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের মেয়ে। শনিবারের নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৫ ০৪:০২
Share: Save:

সময়মতো ডাক্তার না আসায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে। শনিবার সকালের ঘটনা। এ দিন হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিনিধিদলও সুপারের ঘরে বিক্ষোভের মুখে পড়ে।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃত রোগীর নাম প্রশান্ত কুণ্ডু (৬১)। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা শহরের সত্যনারায়ণ মোড় এলাকায়। মৃতের ছেলে দেবব্রত কুণ্ডু জানান, বুকে ব্যথা নিয়ে তাঁর বাবাকে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর হাসপাতালে তাঁরা ভর্তি করান। শনিবার সকাল ছটা নাগাদ ব্যথা বাড়তে থাকায় বাবা ছটফট করতে থাকেন। দেবব্রতর অভিযোগ, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে আমরা কর্তব্যরত নার্সকে পুরোটা জানাই। ওই অবস্থায় এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনও চিকিৎসক আসেননি। ও দিকে বাবার অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছিল। শেষ অবধি ডাক্তার না আসায় সওয়া ৭টা নাগাদ বাবা মারা যান।’’

বিনা চিকিৎসায় তাঁরা বাবা মারা গিয়েছেন, এই অভিযোগ তুলে ঘটনার তদন্ত দাবি করে দেবব্রত ছুটে আসেন সুপারের ঘরে। আসেন মৃতের অন্য আত্মীয়েরাও। শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। মৃতের পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ান বিষ্ণুপুরের উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়-সহ কিছু তৃণমূল কাউন্সিলর। হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে সুপারের ঘরে তখন বৈঠক করছিলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর তনিমা মণ্ডল। বিক্ষোভের জেরে তিনিও ঘেরাও হয়ে যান। মৃতের স্ত্রী মুকুল কুণ্ডু কান্নায় ভেঙে পড়ে এ দিন বলেন, “আমার স্বামী সময়মতো চিকিৎসা পেলে বেঁচে যেতেন। কাকুতি-মিনতি করেও এক জন ডাক্তার পাওয়া গেল না!’’ মেয়ে রিঙ্কি মোদক ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলতে থাকেন, “নামেই জেলা হাসপাতাল। সময়ে ডাক্তার পাওয়া যায় না। আমার বাবাকে এখানে এনে হারাতে হল। এই গাফিলতির জন্য যারা দায়ী, তাদের কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ। তাতে হাসপাতালে আসা আরও বহু মানুষ সামিল হয়ে পড়ায় খবর পেয়ে চলে আসে পুলিশও। সুপারের ঘর থেকে ভিড় কমিয়ে বের করে আনা হয় স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদলকে। যদিও এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তনিমাদেবী। বুদ্ধদেববাবু বলেন, “জরুরি বিভাগের ডাক্তারও যদি গিয়ে ওই রোগীকে এসে দেখতেন, তা হলে এই ক্ষোভ ছড়াত না। আসলে চিকিৎসকদের কাজ না করার প্রবণতা এই চার বছরেও ঠিক করা গেল না। আমি সুপারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ পরে সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন মৃতের ছেলে দেবব্রত। দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। হাসপাতাল সুপার পৃত্থীশ আকুলি বলেন, “ওই সময়ে কোন ডাক্তারের ডিউটি ছিল, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগের তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE