অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম (এইএস) ফিরে এল বাঁকুড়ায়। শনিবার রাত থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই উপসর্গ নিয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে জেলায় এইএস-এ মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো আট।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে কর্ণ মণ্ডল (৭) বাঁকুড়া সদর থানার কাশীবেদ্যা এলাকার এবং মহম্মদ জাহিদ (১) ওন্দা থানার পুলিশোল এলাকার বাসিন্দা। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “দুই শিশুই অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে।” মহম্মদ জাহিদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল সে। প্রথমে স্থানীয় ভাবে তার জ্বরের চিকিৎসাও করানো হয়। কিন্তু জ্বর ক্রমশ বাড়তেই থাকে। দুর্বল হতে থাকে শরীর। জাহিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে দেখে শনিবার তাকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। সেই রাতেই তার মৃত্যু হয়। একই ভাবে কর্ণও জ্বরে অসুস্থ হয়ে শনিবার বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি হয়। রবিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে জ্বরে আক্রান্ত বেশ কিছু রোগী সেখানে ভর্তি রয়েছেন। তবে এখনও কারও মধ্যে এনসেফ্যালাইটিসের লক্ষণ মেলেনি বলেই জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার। তিনি বলেন, “জ্বর নিয়ে যে সব রোগী ভর্তি হচ্ছেন, প্রথমেই তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছি আমরা। তাঁদের উপরে বিশেষ ভাবে নজর রাখা হচ্ছে। তবে এইএস-য়ে দুই শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে ফের আতঙ্ক ছড়িয়েছে জেলায়। উত্তরবঙ্গ জুড়ে যখন কয়েক মাস আগে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস এবং এইএস-এ আক্রান্তদের মৃত্যু হচ্ছিল, সেই সময়ে বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর শহরের এক শিশুর এইএস-এ মৃত্যু হয়। তার পর ফের বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া ও ওন্দার গ্রামে তিন জন এবং দুর্গাপুরের এক জনের মৃত্যু হয় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
এমনিতেই এনসেফ্যালাইটিস প্রবণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত বাঁকুড়ায় ২০১২ সালে ১৩১ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা গিয়েছিলেন ২৫ জন। ২০১৩ সালে ১৬০ জন আক্রান্তের মধ্যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরে আক্রান্তের সংখ্যা অন্য বারের তুলনায় কম বলেই দাবি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। এইএস ছাড়াও ভাইরাল ফিভার এবং ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাও নেহাত কম নয় এই জেলায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, এই সময় মশাবাহিত বেশ কিছু রোগ হয়ে থাকে। জ্বর হলেই তাই মানুষ যাতে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করান, সে জন্য সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy